সায় দিল না শরীর, বুথে এসে নন্দিনীকে ভোটটা দিতে পারলেন না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য
দলীয় মুখপত্রে তৃণমূলকে `তপ্ত কড়াই` আর বিজেপিকে `জ্বলন্ত উনুন` বলে উল্লেখ করেছিলেন বুদ্ধদেবু।
নিজস্ব প্রতিবেদন : ইচ্ছে ছিল। ঘনিষ্ঠদের কাছে সেকথা জানিয়েও ছিলেন তিনি। কিন্তু শেষপর্যন্ত বাধ সাধল শরীর। ভোট দিতে পারলেন না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শারীরিক অসুস্থতার কারণে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে বুথে এসে ভোট দেওয়া আর হল না রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের।
ভোট দিলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের স্ত্রী ও মেয়ে। বালিগঞ্জ কমলা গার্লস হাইস্কুলে ভোট দেন মীরা ভট্টাচার্য ও মেয়ে। জানা গিয়েছে, শরীর খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণেই আর বাইরে বেরিয়ে ভোট দিতে যাওয়া সম্ভব হল না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পক্ষে। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ বুদ্ধবাবু। বহুদিন ধরেই ঘরবন্দি তিনি। শেষবার তাঁকে বাইরে দেখা গিয়েছিল ব্রিগেডের সময়। দীর্ঘদিন পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফেব্রুয়ারিতে ব্রিগেডে যোগ দেন তিনি। তবে সেবারও গাড়ি থেকে নামতে পারেননি। গাড়িতেই ছিল অক্সিজেন সিলিন্ডার। নাকে অক্সিজেনের নল গোঁজা অবস্থায় বেশ কিছুক্ষণ গাড়িতে বসেই ব্রিগেড বক্তৃতা শোনেন তিনি। তারপর ফিরে যান।
আরও পড়ুন, অগ্নিগর্ভ ভাটপাড়া, চলছে বোমাবৃষ্টি, মদন মিত্র গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ার অভিযোগ
তবে লোকসভাব নির্বাচনে ভীষণভাবে চেয়েছিলেন ভোটটা দিতে। ঘনিষ্ঠ মহলে ব্যক্ত করেছিলেন সে ইচ্ছের কথা। বলেছিলেন, নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে নিজের ভোটটা দিতে চান তিনি। কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের ভোটার রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, শারীরিক কারণে শেষপর্যন্ত আর সেটা সম্ভব হল না। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর ভোটটা পেলেন না কলকাতা দক্ষিণের সিপিআইএম প্রার্থী নন্দিনী মুখোপাধ্যায়। গতকাল রাত অবধি তিনি ভোট দিতে যেতে পারবেন কিনা, সে নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে চিকিৎসকদের সঙ্গে। আজও পাম অ্যভিনিউয়ের বাড়ির সামনে সবরকম ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। কিন্তু শরীর অত্যন্ত খারাপ। নাকে অক্সিজেনের নল নিয়ে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াবার-ই ক্ষমতা নেই তাঁর। তাই অপূর্ণ হয়ে গেল ইচ্ছে।
আরও পড়ুন, রবীন্দ্র সরণিতে বোমাবাজি! জখম ভোটার, হিন্দীভাষীদের ভোট আটকাতে হামলার অভিযোগ
শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার জন্য বাইরে বেরলেই অক্সিজেন সিলিন্ডার মাস্ট। এই অবস্থায় শারীরিক অসুবিধার কারণে, এবার আর কোনওভাবেই নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়া সম্ভব হয়নি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পক্ষে। তবে, দলীয় মুখপত্রে নিজের মত ব্যক্ত করেছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলকে 'ফুটন্ত তেলের কড়াই' আর বিজেপিকে 'জ্বলন্ত উনুন' বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। রাজ্যবাসীর কাছে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছিলেন, 'তপ্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুনে ঝাঁপ দেওয়া কি বুদ্ধিমানের কাজ?'