ভিডিয়ো: `তোমার নাম আমার নাম-ভিয়েতনাম` স্লোগানের রাজ্যেই বিজেপির `জয় শ্রী রাম`
চন্দ্রকোনায় মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের সামনে `জয় শ্রী রাম` জয়ধ্বনি দেওয়া নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক।
নিজস্ব প্রতিবেদন: 'জয় শ্রী রাম' বিতর্কে আরও একবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করলেন অমিত শাহ। নির্বাচনী প্রচারের শেষ লগ্নে আর একবার বিজেপি স্পষ্ট করে দিল, পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুত্বের পালে হাওয়া দিয়েই ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছে গেরুয়া শিবির। বারাসত ও জয়নগরের জোড়া সভাতেই অমিতের মুখে শোনা গেল, 'জয় শ্রী রাম, জয় জয় শ্রী রাম'। একইসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও 'জয় শ্রী রাম' শীর্ষক গান প্রকাশ করেছে বিজেপি।
চন্দ্রকোনায় মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের সামনে 'জয় শ্রী রাম' জয়ধ্বনি দেওয়া নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। তিন যুবককে আটক করে পুলিস। নির্বাচনের মুখে ওই ইস্যুকে হাতিয়ার করে মমতার বিরুদ্ধে তোষণের অভিযোগ তোলে বিজেপি। তমলুক ও ঝাড়গ্রামের সভায় নরেন্দ্র মোদী কটাক্ষ করেছিলেন,''জয় শ্রী রাম দিদি''। একইসঙ্গে তাঁকে জেলে ঢোকানোর চ্যালেঞ্জও ছোড়েন নরেন্দ্র মোদী। সেই সুরেই সোমবার জয়নগরের সভায় অমিত শাহ বলেন,''দিদি আমি জয় শ্রী রাম বলছি। হিম্মত থাকলে গ্রেফতার করুন''। ভিড়ের উদ্দেশে অমিত বলেন, ''দুটো হাত তুলুন। প্রচণ্ড জোরে বলুন, জয় শ্রী রাম। জয় জয় শ্রী রাম।'' 'জয় শ্রী রাম' জয়ধ্বনিতে সাড়া দেন বিজেপি সমর্থকরা। ঠিক একইভাবে বারাসতের সভার শেষেও অমিতের মুখে হুঙ্কার,'জয় শ্রী রাম, জয় জয় শ্রী রাম'।
শুধু তাই নয়, নির্বাচনের মুখে 'জয় শ্রী রাম' জয়ধ্বনি হাতিয়ার হয়ে উঠেছে বিজেপির। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি 'জয় শ্রী রাম' শীর্ষক গান অবমুক্ত করেছে গেরুয়া শিবির। বামপন্থীদের 'ভিয়েতনাম' স্লোগান ধার করে বিজেপি নেতারা বাংলায় লিখছেন, তোমার নাম, আমার নাম, জয় শ্রী রাম। গত শতাব্দীর ছয়-সাতের দশকে ‘তোমার নাম আমার নাম, ভিয়েতনাম ভিয়েতনাম’ স্লোগানে মুখরিত হয়েছিল রাজ্য। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের ধুয়ো তুলে ভিয়েতনামের পাশে দাঁড়িয়েছিল বামপন্থী সংগঠনগুলি। সেই বাংলাতেই আজ জায়গা করে নিয়েছে 'হিন্দুত্বের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর' অযোধ্যার দশরথপুত্র।
বাংলায় দুর্গাপুজো ও সরস্বতী পুজোয় বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে চলেছেন অমিত শাহরা। যার মোদ্দা কথা, দুর্গাপুজো করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে, সরস্বতী পুজো করলে গুন্ডারা হামলা করছে, বাংলায় জয় শ্রী রাম বলা যাবে না। বাংলা ভাষার দাবি করার জন্য দুই ছাত্রকে গুলি করে হত্যা করেছে। এদিনও বারাসতের সভায় অমিত শাহ আশ্বাস দিয়েছেন, বিজেপি ক্ষমতায় আসলে মহা ধুমধামে রাজ্যে দুর্গাপুজো হবে। বাংলা ভাষায় পড়াশুনোও করতে পারবেন পড়ুয়ারা। মমতা অবশ্য বলে চলেছেন, বিজেপি নেতারা বাংলায় এসে মিথ্যা কথা বলছেন। জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছেন, কী মা-বোনেরা বাংলায় দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজো করেন না? একইসঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর স্লোগান নেতাজির 'জয় হিন্দ'। বিজেপির স্লোগান কোনওমতে দেবেন না। বিজেপি আবার তার পাল্টা প্রচার করছে, জয় শ্রী রাম আপামর হিন্দুদের আরাধ্য। রাম সকলের। গেরুয়া শিবিরের রাম নামের গানেও সেটাই তুলে ধরা হয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যে হিন্দুত্বের হাওয়াতেই বিজেপির বাড়বাড়ন্ত। আর সেই হাওয়াকে আরও তীব্রতর করতে চেষ্টার কসুর করছেন না বিজেপি নেতারা। আর হিন্দুত্ব কতখানি ভোটারদের মগজে প্রভাব ফেলল, সেটা জানা যাবে ২৩ মে ভোটগণনার পর।
আরও পড়ুন- রাজ্যে মেরুকরণের জন্য দায়ী সিপিএম, জি ২৪ ঘণ্টায় একান্ত সাক্ষাত্কারে মমতা