নিজস্ব প্রতিবেদন: 'জয় শ্রী রাম' থেকে দুর্গাপুজো, সরস্বতী পুজোয় বাধা- বাংলায় প্রথমবার হিন্দুত্বকে ইস্যু করে তুলেছেন মোদী-শাহরা। প্রতিটি সভাতেই নিয়ম করে বলে চলেছেন, বাংলায় হিন্দুদের পুজোপাঠে বাধা দেওয়া হচ্ছে। মেরুকরণের রাজনীতির বাড়বাড়ন্তের নেপথ্যে কী? জি ২৪ ঘণ্টায় এক্সক্লুসিভ সাক্ষাত্কারে তৃণমূল নেত্রী অভিযোগ করলেন, বাংলায় মেরুকরণের জন্য দায়ী সিপিএম।      
       
পশ্চিমবঙ্গে মেরুকরণের রাজনীতি কী ঢুকে গেল? জি ২৪ ঘণ্টার সম্পাদক অনির্বাণ চৌধুরীর প্রশ্নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''দেখুন সব জায়গায় ঢোকে। কিছু কিছু জায়গায় মানুষ অনেকসময় বিশ্বাস করে ফেলে। ধর্মকে খুব তাড়াতাড়ি বেচা যায়। বুঝতে সময় লাগে। তার উপরে টাকা পয়সা দেওয়া হচ্ছে''। রাজ্যে বিজেপিকে সিপিএম-কংগ্রেস টানছে বলেও অভিযোগ করেন তৃণমূল নেত্রী। দাবি করেন, সিপিএম নিজের ভোট ট্রান্সফার করছে। এখানে স্থানীয় কংগ্রেসও তাই করছে। বামপন্থী আদর্শ যদি থাকে বিজেপির বিরুদ্ধে ভোট দিন। দরকারে তৃণমূলকে দিক। নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করতে হলে বিজেপিকে কেন দেবে? কংগ্রেসের যদি কেউ থাকে সে তো জিতবে না। তৃণমূলকে ভোট দিক। তৃণমূল একটা ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গঠন করবে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মেরুকরণের জন্যেও সিপিএম কাঠগড়ায় তোলেন মমতা। প্রশ্ন তোলেন, সিপিএম বিজেপিকে কেন ভোট ট্রান্সফার করছে? মেরুকরণের জন্য সবচেয়ে বড় দায়ী সিপিএম। এটা ওদের করা উচিত হয়নি। 


আরও পড়ুন- বাঙালিকে কাঙালি বলছে, একটাও ভোট নয়, অমিতের 'কাঙাল' খোঁচায় চটলেন মমতা


বস্তুত বাংলায় মেরুকরণের রাজনীতি এর আগে উচ্চগ্রামে কখনও হয়নি। শুরু থেকেই হিন্দুত্বে রাজনীতিতে হাওয়া গরম করেছে বিজেপি নেতৃত্ব। আর তার সুর বেঁধেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদী-শাহ ছাড়াও রাজ্যে প্রচারে এসেছেন 'হিন্দুত্বের পোস্টার বয়' যোগী আদিত্যনাথ। হিন্দুত্বের ইস্যুতে বাংলায় ভোট প্রচার বেশ বেনজিরই। যার সূত্রপাত ঘটেছিল বছর তিনেক আগে। রাজ্যজুড়ে রাম নবমীতে মিছিল করেছিল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও তাদের যুব সংগঠন বজরং দল, দুর্গাবাহিনী। বিজেপি নেতারাও সমানতালে মমতার বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির অভিযোগ তুলেছেন। মোদী থেকে শাহ দাবি করে গিয়েছেন, বাংলায় দুর্গাপুজো ও সরস্বতী পুজোয় বাধা দেওয়া হচ্ছে। সদ্য আবার মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ের সামনে 'জয় শ্রী রাম' স্লোগান বিতর্কেও ঘি ঢেলেছে বিজেপি। খোদ প্রধানমন্ত্রী ঝাড়গ্রামের সভায় বলেছেন, ''জয় শ্রী রাম দিদি। আমাকে গ্রেফতার করুন''। 


আরও পড়ুন- অভিষেককে ডায়মন্ড হারবারের প্রার্থী করতে চাননি মমতা, কী প্রস্তাব দিয়েছিলেন?


এদিনও অমিত শাহ বারাসত ও জয়নগরে জোড়া সভায় আশ্বস্ত করেছেন, বিজেপি আসলে নিশ্চিন্তে দুর্গাপুজো ও সরস্বতী পুজো হবে। তার পাল্টা সভা-সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এরাজ্যে দুর্গাপুজো ও সরস্বতী পুজো হয়। বিজেপি নেতারা মিথ্যা কথা বলছেন। সিপিএম অবশ্য প্রথম থেকে বলে আসছে, প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে তৃণমূল-বিজেপি। তলে তলে দুই দলই মিলেমিশে কাজ করছে। তবে রাজনৈতিক মহল একটা ব্যাপারে নিশ্চিত, জাতীয় রাজনীতিতে 'হিন্দু হৃদয় সম্রাট' (সমর্থকরা এই নামেই ডাকেন) নরেন্দ্র মোদীর উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের বাংলাতেও ঢুকে পড়েছে হিন্দুত্বের উত্তুরে হাওয়া।