নিজস্ব প্রতিবেদন : স্বাধীন ভারতে পরাধীনতার আতঙ্ক। বৃহস্পতিবার শিলচর বিমানবন্দরে অসম পুলিসের হাতে হেনস্থা হওয়ার ঘটনাকেই এভাবেই ব্যাখ্যা করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক মহুয়া মৈত্র।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

এনআরসি ইস্যুতে উত্তাল সংসদের উভয় কক্ষ। এনআরসি ইস্যুকে হাতিয়ার করে লোকসভা ভোটের আগে 'রাজনৈতিক ফায়দা' লুঠতে মাঠে নেমেছে তৃণমূল। বিজেপির তরফে অভিযোগ এমনই। যদিও তৃণমূলের পাল্টা দাবি, দেশে মোদী-শাহের 'স্বৈরাচারী শাসন' চলছে।


সোমবার অসমে প্রকাশিত হয়েছে জাতীয় নাগরিক পঞ্জির খসড়া। সেই খসড়া থেকে বাদ পড়েছে প্রায় ৪০ লাখ মানুষের নাম। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে বিতর্ক। চলছে শাসক-বিরোধী দোষারোপ-পাল্টা দোষারোপের পালা। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার সাংসদ-বিধায়ক ও মন্ত্রী সহ তৃণমূল কংগ্রেসের ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল অসমে যায়।


কিন্তু শিলচর বিমানবন্দরে নামা মাত্র আটক করা হয় তৃণমূল প্রতিনিধি দলের সদস্যদের। প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি বেঁধে যায় পুলিসের। অভিযোগ, তৃণমূল সাসংদ অর্পিতা ঘোষ ও মমতা বালা ঠাকুর এবং বিধায়ক মহুয়া মৈত্রকে হেনস্থা করে অসম পুলিশ। মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধরাও পড়ে টানা-হ্যাঁচড়ার সেই ছবি। সারাদিন বিমানবন্দরে আটকে থাকার পর রাতে গ্রেফতার করা হয় তৃণমূল প্রতিনিধি দলের সদস্যদের। সারা রাত শিলচর বিমানবন্দরেই কাটান তাঁরা।


আরও পড়ুন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল অসম পুলিস


সেইপ্রসঙ্গে বলতে গিয়েই এদিন মহয়া মৈত্র বলেন, "স্বাধীন ভারতে জন্মেছি। কিন্তু শিলচর বিমানবন্দরে নামামাত্র পরাধীনতা কী সেই অনুভূতি হল। ভয়াবহ পরিস্থিতি।" তিনি জানান,  বিমানবন্দরে আগে থেকেই প্রায় ২০০ থেকে ৩০০ পুলিসকর্মী মোতায়েন ছিল। পুলিস, রাফ, সিআইএসএফ কোনওকিছুই বাদ ছিল না। উপস্থিত ছিলেন এসপি, ডিআইজি, এডিজে, ডিএম, ডিভিশনাল কমিশনারও। বিমান থেকে নামামাত্র ২০০-৩০০ পুলিসকর্মী তাঁদের ঘিরে ফেলেন।


মহুয়া মৈত্রের দাবি, অসম পুলিস তাঁদের অন্য গেট দিয়ে বেরনোর জন্য জোর করতে থাকে। বার বার 'রিং' করে ঘিরে ফেলে তাদের।  তাঁদের ধাক্কা দেওয়া হতে থাকে। বিমানবন্দরের মধ্যেই তাঁদের ঘরবন্দি করে রাখার পরিকল্পনা ছিল অসম পুলিসের। তিনি বলেন, অসম পুলিসের অভিসন্ধি বুঝতে পেরেই তাঁরা লাউঞ্জে দাঁড়িয়ে পড়েন। এরপরই তাঁদেরকে চরম হেনস্থা করে অসম পুলিসের মহিলা কর্মীরা। ধাক্কা দেন। আঁচড়ে দেন। দেওয়ালে ঠেসে ধরেন তাঁদের। এমনভাবে তাঁদের ঘিরে রাখা হয় যে নড়াচড়াটুকু পর্যন্ত করতে দেওয়া হয় না। ছেড়ে দেওয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করলেও, অসম পুলিস তাঁদের কোনও কথা কানে তোলেনি বলে অভিযোগ মহুয়া মৈত্রের।


আরও পড়ুন, অসমের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলে কংগ্রেস!


তাঁর অভিযোগ, তাঁরা বারবারই আশ্বস্ত করেন যে উপদ্রুত এলাকায় গিয়ে কোনও মিটিং-মিছিল তাঁরা করবেন না। কিন্তু তারপরেও তাঁদের ছাড়া হয়নি। উপরন্তু তাঁদের গ্রেফতারির হুমকি দেয় অসম পুলিস। তাঁরা যাতে কোনওভাবে কারোর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারেন, সেজন্য সমস্ত মোবাইল নেটওয়ার্কও জ্যাম করে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ তৃণমূল বিধায়কের। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, অসম সরকার ভয় পেয়ে গিয়েছিল। আর তাই তাঁদের বন্দি করে রাখা হয়।


যদিও এদিন সংসদে বিরোধীদের অভিযোগ ফের খারিজ করে দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। তাঁর স্পষ্ট দাবি, এনআরসি একটি সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। এনআরসি নিয়ে মিথ্যা প্রচার হচ্ছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে। সাম্প্রতিক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। শিলচর বিমানবন্দরে তৃণমূল প্রতিনিধি দলের সঙ্গে অসম পুলিস কোনও অভব্য আচরণ করেনি বলেও দাবি করেন তিনি। উল্লেখ্য, দিলীপ ঘোষও গতকাল এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন, "নাটক করতে গেছেন। নাটক করছেন ওঁরা। ওঁরা ওখানে আনওয়ান্টেড।"