একুশের মঞ্চ থেকে মাঠেঘাটে কর্মীদের নামার ডাক মমতার, নেপথ্যে কি পিকে?
ধারাবাহিক কর্মসূচি ও তৃণমূলস্তরে সংগঠন চাঙা করতে বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: কর্মসূচি, কর্মসূচি ও কর্মসূচি। লোকসভা ভোটের বিপর্যয়ের পর সংগঠনকে চাঙা করতে ধারাবাহিক কর্মসূচির ঘোষণা করে দিলেন তৃণমূল নেত্রী। একইসঙ্গে সংগঠনকে মজবুত করতে বড়সড় ঘোষণার কথাও জানিয়ে দিলেন। চুম্বকে, সংগঠনের ফাঁকফোকর মেরামত করে বিজেপিকে টক্কর দিতে চাইছে ঘাসফুল শিবির।
লোকসভা ভোটে তৃণমূলের ভরা পর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে নেতায়-নেতায় ঝগড়া থেকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবরও এসেছে কালীঘাটে। এমন প্রেক্ষাপটে ২০২১ সালের সংগঠনকে সাজিয়ে নিতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একুশে জুলাইয়ের সভায় সেই বার্তাই দিলেন তৃণমূল নেত্রী। সঙ্গে ধারাবাহিক কর্মসূচি।
কাটমানি ফেরত দেওয়ার দাবিতে জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। সাধারণ মানুষের আড়ালে বিক্ষোভে বিজেপির ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। তার পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধে ব্ল্যাক মানি ফিরিয়ে দাও কর্মসূচির ডাক দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২৬-২৭ জুলাই 'ব্ল্যাক মানি ফিরিয়ে দাও' কর্মসূচি পালন করবে তৃণমূল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,'৯ অগস্ট বিজেপি বাংলা ছাড়ো আন্দোলন। বাংলায় কোনও ঠাঁই নেই। ১৪ অগস্ট ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট। ১৫ অগস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন করবে তৃণমূল। বাংলার ব্লকে ব্লকে রাখীবন্ধন কর্মসূচি। ভাই-বোনেরা রাখীবন্ধন করে বলবেন বাংলার আর এক নাম সম্প্রীতি। এখানে দুর্গোপুজো, বকরি ইদ, কালীপুজো হয়। ২৮ অগস্ট তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস। ভালো করে মেয়ো রোডে আপনারা পালন করবেন। টাইম বেলা ১টা। ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস। শিক্ষক-শিক্ষিকারা আমাদের গুরু। সম্মান জানিয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে শিক্ষক দিবস পালন করবেন। ২৬ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মদিন। ২ অক্টোবর গান্ধীজির জন্মদিন। ওই দিন প্রোগ্রাম হবে।'
একইসঙ্গে ব্লকে ব্লকে সংগঠন বাড়াতে ২৯ জুলাই কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণাও করেন নেত্রী। ইঙ্গিতে বোঝালেন, তৃণমূলস্তরে নিয়ে যেতে হবে সংগঠনকে। কথা বলবে আম আদমির সঙ্গে। চায়ের দোকানে বসে, আদিবাসীদের সঙ্গে চাটাই পেতে তৃণমূলের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে কর্মীদের। মমতা বলেন, '২৯৪ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রতিটি বুথে কর্মসূচি দেওয়া হবে। বুথকর্মীরা না থাকলে দল তৈরি হতে পারে না। বুথ কর্মীরাই দলের সম্পদ। কেউ এমএলএ হয়, কেউ সাংসদ হয়। কিন্তু বুথকর্মীরাই দলের সম্পদ। এগিয়ে আসুন রুখে দাঁড়ান। আপনারাই দলটাকে নিয়ে চলুন। আপনাদের মতো বড় শক্তি কার'।
দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে অনেক কর্মীই ডাক পান না সভা-সমাবেশে। সেই অভিযোগের প্রতিকার করে দিলেন মমতা। বললেন,'ছোটবেলায় আমাদেরও কেউ ডাকত না। কিন্তু দলের অনুষ্ঠানে নিজে থেকেই চলে যেতাম। কারও ডাকের অপেক্ষা করবেন না। দলের কর্মসূচিতে চলে যাবেন'।
লোকসভা ভোটের পর ভোটরণনীতিকার প্রশান্ত কিশোরকে নিয়োগ করেছে তৃণমূল। অনেকেই বলছেন, মমতার টানা কর্মসূচি ও তৃণমূলস্তরে সংগঠন মজবুত প্রশান্তেরই মস্তিষ্কপ্রসূত।
আরও পড়ুন- মমতা ব্যানার্জিরই দাম ২ কোটি টাকা নয়, কেউ কিনবে না: দিলীপ