ওয়েব ডেস্ক: সেকেন্ড ইনিংসে কড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিন্ডিকেট বরদাস্ত নয় কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রী। তত্‍পর প্রশাসন। জেলে শাসক দলের কাউন্সিলর। সিন্ডিকেট চাক ভাঙতে বদ্ধপরিকর সরকার। সিন্ডিকেট। চার অক্ষরের শব্দটাই প্রথম তৃণমূল সরকারকে বার বার অস্বস্তিতে ফেলেছে। তৃণমূল সুপ্রিমোর কড়া বার্তার পরও সিন্ডিকেট তোলাবাজিতে লাগাম পরানো যায়নি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বিপুল জনাদেশ নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করেই সিন্ডিকেট নিয়ে কড়া হওয়ার ইঙ্গিত দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজনীতির রং না দেখে পুলিস প্রশাসনকে কড়া হওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সিন্ডিকেটে নাম জড়ানো কাকলি ঘোষদস্তিদার, সুজিত বসু, সব্যসাচী দত্তদের আলাদা ডেকে ধমক দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাফ বলেন, এসব বরদাস্ত করা হবে না।


শুধু বার্তা নয়। সিন্ডিকেট জাল ভাঙতে পুলিস প্রশাসনের শীর্ষস্তরেও বদল আনা হয়। বিধাননগরের কমিশনারের দায়িত্ব দেওয়া হয় জ্ঞানবন্ত সিংকে। ডিসি ডিডি-র দায়িত্ব পান সন্তোষ পাণ্ডে। দিনকয়েকের মধ্যে ফল। সিন্ডিকেট মুক্তাঞ্চল বলে পরিচিত নিউটাউন-বাগুইআটি-রাজারহাটে শুরু হয় পুলিসি ধরপাকড়।


সিন্ডিকেট জাল মূলত ছড়িয়েছে বিধাননগর পুরনিগম ও রাজারহাট-নিউটাউন লাগোয়া এলাকায়।


১.মহিষবাথান-থাকদাঁড়ি (এখানে লড়াই ভজাই সর্দার ও তার বিরোধী গোষ্ঠীর মধ্যে)


২. নবাবপুর (এখানে লড়াই হাজি বাচ্চু বনাম সইফুল ইসলামের)


৩.বালিগড়ি-লস্করহাটি (এখানে লড়াই হায়দর বনাম বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর)


৪. বাগুইআটি (এখানে লড়াই মেয়র পারিষদের ছেলে বাবাই বিশ্বাস বনাম সাংসদের)


এছাড়াও রয়েছে সল্টলেক ও রাজারহাট-গোপালপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা।


বিধাননগর কমিশনারেটের সিন্ডিকেট হঠাও অভিযান কার্যত শুরু হয় বাগুইআটি-কেষ্টপুর এলাকা থেকে। এই এলাকার সিন্ডিকেটের কিংপিন মেয়র পারিষদের ছেলে বাবাই বিশ্বাস। কিন্তু, এবছর মার্চে তৃণমূল নেতা সঞ্জয় রায় খুনে নাম জড়ানোর পর থেকে এলাকা ছাড়া বাবাই। বাবাইয়ের জায়গা দখল করে নেয় এলাকার কয়েকজন কুখ্যাত দুষ্কৃতী। গত এক সপ্তাহে বাগুইআটি-কেষ্টপুরের একডজন সিন্ডিকেট দুষ্কৃতীকে জালবন্দি করেছে পুলিস। গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল পরিচালিত অটো ইউনিয়নের নেতা ও এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী অপু সর্দার। জেলবন্দি দেবজ্যোতি ঘোষের মতো রাজনৈতিক নেতাদের আশ্রয়ে থেকে সিন্ডিকেট চালানো দুষ্কৃতীদের অনুগামীরাও জালবন্দি।


নিউটাউনে সিন্ডিকেটের মৌচাক ভাঙতে গ্রেফতার করা হয় কুখ্যাত দুষ্কতী রুইস মণ্ডলকে। এলাকায় সিন্ডিকেট দাপট ধরে রাখতে রুইস সম্প্রতি হাত মেলায় ভজাই সর্দারের সঙ্গে। রুইস-ভজাই অনুগামীরা যখন পুলিসের জালে, বাদ যায়নি বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকজনও।


বিধাননগর কমিশনারেটের আরেক মাথা ব্যাথার জায়গা নবাবপুর।  সপ্তাহ দুয়েক আগেই হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচাপতির নিরাপত্তা রক্ষীকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় গ্রেফতার  হয় নবাবপুরের সিন্ডেকেট চাঁই সইফুল ইসলামের দুই অনুগামী। দিনদুই আগে পুলিসের জালবন্দি হয় সইফুলের ডানহাত জালালুদ্দিন মোল্লা। গ্রেফতার হয় সইফুল গোষ্ঠীর আরেক সিন্ডিকেট চাঁই মোজাম্মেল মোল্লাও। পিঠ বাঁচাতে পারেনি বিরুদ্ধে গোষ্ঠীর লোকেরাও। রবিবারই সইফুল বিরোধী বলে পরিচিত আলি হোসেন লস্করকে গ্রেফতার করে পুলিস। খোঁজ চলছে আরও কয়েকজনের।


পুলিসি ধরপাকড় থেকে বাদ যায়নি সল্টলেকের সিন্ডিকেট চাইঁরাও। মঙ্গলবার ১২ লক্ষ তোলা চাওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ৪২ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে। রাজারহাট-গোপালপুরেও সিন্ডিকেট মাফিয়াদের খোঁজে তল্লাসি চালাচ্ছে পুলিস। রাজনৈতিক মহল বলছে, উনন্নয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিপুল ভোটে জিতে আসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে মানুষের আশা প্রবল। আর  মানুষের প্রতি সেই দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার দল থেকে বেনোজল ছেঁচে ফেলতে আরও বেশি কড়া।