মেট্রোর কাজ চলার সময়ে মনে হত যেন ভূমিকম্প হচ্ছে: মাঝেরহাটে গিয়ে বললেন মমতা
দার্জিলিং সফর কাটছাঁট করে কলকাতায় ফিরলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মাঝেরহাটে সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ার ঘটনার সঙ্গে মেট্রোর উড়ালপুল নির্মাণকাজের দায় নেই বলে প্রাথমিক রিপোর্টে জানিয়েছে রাইটস। রাইটসের রিপোর্ট নিয়ে নাম না করেই উষ্মাপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়ে দিলেন, সেতু ভাঙার সঙ্গে মেট্রোর নির্মাণকাজের যোগ উড়িয়ে দেওয়া উচিত নয়। মাঝেরহাটে দুর্ঘটনাস্থলে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''এখানে মেট্রো রেলের কাজ চলছিল। পাইলিংয়ের কাজ চলার সময়ে মনে হত ভূমিকম্প হচ্ছে। আমরা কলকাতা মেট্রোর কাজ চলার সময়েও এটা দেখেছি। এটা বাস্তব। কোনও দিক ছোট করতে চাই না। কোনও দিককে ছোট করে এক দিনেই মূল জায়গা থেকে সরে আসতে চাই না''।
এদিন দার্জিলিং সফর কাটছাঁঠ করে কলকাতায় ফিরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সন্ধে ৬টায় কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে মা উড়ালপুল ধরে সোজা ঘটনাস্থলে পৌঁছে। দুর্ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখেন। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়,''সময়ে সময়ে পরিকাঠামো দেখার কাজ করেছি। এই সেতুটি ৫৪ বছরের পুরনো। অনেকক্ষেত্রেই কাগজপত্র থাকে না। কাগজপত্র পেতেই হিমশিম খেতে হয়। বিবেকানন্দ উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পর এমন অভিজ্ঞতা হয়েছিল। মেট্রোর কাজ চলছিল। পাইলিংয়ের কাজ চলার সময়ে মনে হত যেন ভূমিকম্প হচ্ছে''।
এদিন সেতুর উপরে উঠে ভাঙা অংশের পাশে দাঁড়িয়ে দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী। কীভাবে সেতুর একটা অংশ ভেঙে পড়ল, তা পুলিস কমিশনার রাজীব কুমার কাছে জেনে নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা পুলিসের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও রয়েছেন ঘটনাস্থলে। মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে রয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ ও অরূপ বিশ্বাস। এর পাশাপাশি উদ্ধারকাজ কোন পর্যায়ে রয়েছে, সে বিষয়েও খোঁজখবর নেন তিনি। বৃহস্পতিবার জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, মেট্রো রেল জানিয়েছে, তাদের কাজ এখন চলছিল না। একবছর আগে শেষবার কাজ হয়েছিল। সেতু ভাঙার সময়ে তাদের নির্মাণ কাজের কোনও সম্পর্ক নেই। পূর্ব রেলওয়ে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, সেতুটি রক্ষণাবেক্ষণ তাদের অধীনে ছিল না। এদিন সকালে রাইটসকে তদন্তভার দেয় পূর্ব রেলওয়ে। প্রাথমিক রিপোর্টে তারা বলেছে, মেট্রো রেলের কাজের সঙ্গে এই ব্রিজ বিপর্যয়ের কোনও সম্পর্ক নেই। বরং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই ভেঙে পড়েছে সেতু। সংস্থাটির দাবি, ব্রিজে বেশি ভার পড়েছে এবং সঠিক প্রক্রিয়ায় উপরের অংশে ভার নিয়ন্ত্রণ হয়নি বলেই এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন- ব্রিজ বিপর্যয়কাণ্ডে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের নামে এফআইআর পুলিসের