`ক্ষমতায় এলে দেশজুড়ে ফ্রি-তে রেশন, গুজরাট নয় বাংলাই মডেল`, বললেন Mamata
২০২৪ সালের আগে `বাংলা মডেল` সামনে আনলেন মমতা (Mamata Banerjee)।
নিজস্ব প্রতিবেদন: একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে ২০২৪ সালে বিজেপির বিরোধী জোট গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গুজরাট নয় বাংলাই মডেল বলে তাঁর প্রতিশ্রুতি, ফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে গোটা দেশে বিনামূল্য়ে রেশন দেওয়া হবে।
বাংলায় উন্নয়নের জন্যেই মানুষ তৃণমূলকে বেছে নিয়েছে বলে দাবি করেন মমতা (Mamata Banerjee)। তাঁর কথায়,'তৃণমূল মানেই উন্নয়ন। সুশাসনের কোনও বিকল্প নেই। লোকে উন্নয়ন চায়। একতা চায়। আপনি ধ্বংস, হিংসা, পক্ষপাতিত্বমূলক রাজনীতি ও সমাজে বিভাজন চান। আমরা চাই না। আমরা রবীন্দ্রনাথের মাটির লোক। তিনি বলেছেন, চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির। আপনি শুধু নিজের পার্টিকে নিয়ে ভাবিত। এই মডেল চায় না ভারত। দেশ চায় উন্নয়ন,ঐক্য, আর্থিক উন্নতি ও শিল্প। কৃষক, দলিত, তপশিলী জাতি-উপজাতি ও সংখ্যালঘুদের জন্য আপনি কিচ্ছু করতে পারেননি। যাঁরা মানুষের জন্য কাজ করেন তাঁদের আপনারা বাধা দেন।'
রাজ্যে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা মনে করিয়ে মমতা (Mamata Banerjee) বলেন,'আমাদের রাজ্যে বিনামূল্যে রেশন দিই। কটা রাজ্য দেয়? মিস্টার প্রাইম মিনিস্টার গোটা দেশে ফ্রি-তে রেশন দিন। আমাদের ফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে গোটা দেশে রেশন দেব বিনামূল্যে। আমরা বাংলায় ফ্রি রেশন দিই।'
২০১৪ সালে গুজরাটের উন্নয়ন তুলে ধরেছিলেন সে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদীর 'গুজরাট মডেলে'র প্রচার চলেছিল দেশজুড়ে। ২০২৪ সালের আগে 'বাংলা মডেল' সামনে আনলেন মমতা (Mamata Banerjee)। তৃণমূল সরকারের প্রকল্পগুলি তুলে ধরে এ দিন তিনি দাবি করেন, গুজরাট নয় বাংলাই মডেল। তৃণমূল নেত্রী বলতে শুরু করেন,'মানুষকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা দিই। এটা আয়ুষ্মান নয় যে শুধু কিছু লোক পায়। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে সব পরিবারকে বছরে ৫ লক্ষ টাকা করে দিই। সরকারি হাসপাতালে মেলে বিনামূল্যে চিকিৎসা। ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পড়ুয়াদের ক্রেডিট কার্ড দিই। তাঁদের হস্টেল ফি, শিক্ষা, টিউটর, ল্য়াপটপ- সব দিই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি,সাধারণ পরিবারের মহিলাদের মাসে ৫০০ টাকা এবং এসসি-এসটি-দের ১০০০ প্রতি মাসে দেব। মহিলাদের ক্ষমতায়ন হবে। কন্যাশ্রী প্রথম পুরস্কার পেয়েছে রাষ্ট্রসঙ্ঘে। চাষিদের ১০ হাজার ও ৪ হাজার টাকা করে দিই। কৃষক মরে যাওয়ার পর ২ লক্ষ টাকা করে পায়। মিউটেশন ফি মকুব। শস্য বিমার কিস্তি দিতে হয় না। বাংলাই মডেল। গুজরাট মডেল নয়। আপনি ভালো জানেন সেখানে কী করেছেন! শেষকৃত্যের জন্য ২ হাজার টাকা দিই। বিয়ের জন্য রূপশ্রী ২৫ হাজার টাকা। খাদ্যসাথী, মাটি সৃষ্টি, সবুজশ্রী, বৈতরণী, আনন্দধারা, দুয়ারে সরকার প্রকল্প চলছে। পাড়ায় পাড়ায় সমাধান আছে। জনগণের জন্য কাজ করি।'
দেশের তুলায় বাংলায় ৪০ শতাংশ দারিদ্র কমেছে বলেও দাবি করেন মমতা (Mamata Banerjee)। তাঁর কথায়,'সামাজিক, কৃষি ক্ষেত্রে ব্যয় আমরা ৩ শতাংশ বাড়িয়েছি। ২১ হাজার কোটি টাকা আয় ছিল ২০১১ সালে। ঋণের বোঝা নিয়ে ৭৫ হাজার কোটি টাকার বেশিতে নিয়ে গিয়েছি। স্কিল ইন্ডাস্ট্রিতে ১ নম্বর, একশো দিনের কাজে শীর্ষ এবং ছোট ও মাঝারি শিল্পেও এক নম্বরে। নতুন বিমানবন্দর ও রাস্তাঘাট তৈরি হয়েছে। ভারতের চেয়ে ৪০ শতাংশ কমেছে দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষ। বাংলা ৪০ শতাংশ দারিদ্র কমিয়ে দিয়েছি। সারা দেশে হতাশা ও হিংসা চলছে। নতুন আলো আনতে চাই আমরা। মহব্বত কাম সে হোতা হ্যায় মন কি বাত কেহনে সে নেহি। জ্ঞান দেওয়ার দরকার নেই। পড়ুয়াদের শিক্ষা, যুবকদের কাজ এবং মহিলা, দলিত ও এসসিএসটি-দের সম্মান করুন। রাজনৈতিক দলগুলিকে সম্মান করুন।'
আরও পড়ুন- 'ফোন ট্যাপিংয়ের কথা বলছে', 'গদ্দার' Suvendu-র রাজনৈতিক বিদায়ের হুঁশিয়ারি Mamata-র