কলকাতায় `ভুল চিকিত্সায় অকেজো` বিহারের কিশোরের দুই পা, হেল্থ কমিশনেও মিলল না সুরাহা
পায়ের সামান্য চোটের অসামান্য চিকিত্সা। কলকাতার ডাক্তারবাবুদের হাতযশে দুটি পা-ই কার্যত অকেজো বিহারের কিশোরের। এগারোটি অপারেশনের পর অথর্ব বিনয় ঝা। সর্বস্বান্ত পরিবার প্রশাসনের দ্বারস্থ।
ওয়েব ডেস্ক: পায়ের সামান্য চোটের অসামান্য চিকিত্সা। কলকাতার ডাক্তারবাবুদের হাতযশে দুটি পা-ই কার্যত অকেজো বিহারের কিশোরের। এগারোটি অপারেশনের পর অথর্ব বিনয় ঝা। সর্বস্বান্ত পরিবার প্রশাসনের দ্বারস্থ।
বিনয় কুমার ঝা। বয়স এখন আঠারো ছুঁইছুঁই। দুই বছর ধরে নড়াচড়ার ক্ষমতা নেই। তাঁর জীবন তছনছ করে দিয়েছেন চিকিত্সকরা। চিকিত্সা বিভীষিকার আরও এক জীবন্ত নমুনা। পাটনায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ত মধুবনির কিশোর বিনয়। ২০১৫ সালের ১ জুলাই পড়ে গিয়ে বাঁ পায়ের হাঁটুতে চোট লাগে। ভাল চিকিত্সার আশায় বিনয়কে কাঁকুরগাছিতে মামারবাড়িতে নিয়ে আসা হয়। ২০১৫ সালের ৪ জুলাই কাঁকুরগাছির নার্সিংহোমে তার প্রথম অপারেশন হয়
এরপর পুঁজ বেরোতে দেখা গেলে আর এক নার্সিংহোমে নিয়ে যায় পরিবার। ২০১৫ সালের ১৬ জুলাই দ্বিতীয় নার্সিংহোমে ফের অপারেশন করা হয়। এরপর ইনফেকশন ধরা পড়ায় ফের কিশোরকে ভর্তি করা হয় সরকারি হাসপাতালে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালেও সুরাহা মেলেনি। বরং আরও জটিল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।
সরকারি হাসপাতালে ২০১৫ সালে ৫ বার অপারেশন হয় কিশোরের। ২৮ অগাস্ট, ১১সেপ্টেম্বর, ২২সেপ্টেম্বর, ২অক্টোবর ও ৮ ডিসেম্বর অপারেশনের পরেও সুস্থ হননি বিনয়। ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ে দুটি পায়েই। পরিবারের দাবি, কার্যত অন্ধকারে হাতড়ানোর মতোই সরকারি হাসপাতালে বিনয়ের চিকিত্সা চলে। এমনকি বোন টিবির ওষুধও তাকে খাওয়ানো হয়।
এরপর বিনয়কে ভেলোরে নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। পরিবারের দাবি, ভেলোরের চিকিত্করা জানিয়ে দেন, কলকাতার ডাক্তাররা পুরোপুরি ভুল চিকিত্সা করেছেন। সংক্রমণ সারাতে ভেলোরে আরও ৪ বার বিনয়ের পায়ে অপারেশন হয়।
চিকিত্সায় গাফিলতির জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে পরিবার। ফুলবাগান থানায় ৩ চিকিত্সকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। স্বাস্থ্যসচিব ও এমসিআই-তেও অভিযোগ করা হচ্ছে।
কিন্তু হেল্থ কমিশনেও ধাক্কা খেল পরিবার। ৩২ নম্বর বিবাদী পার্ক। স্ট্যান্ডার্ড ইনসিওরেন্সের বিল্ডিংয়ে হেলফ কমিশনের ঘোষিত অফিস। সাইনবোর্ড ঝুলছে। কিন্তু, ভেতরে? কেউ নেই। স্বাস্থ্যে অনিয়ম নিয়ে বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী। কড়া আইন এনেছেন। নজরদারির জন্য গড়ে দিয়েছেন কমিশন। বুধবার স্বাস্থ্যভবনে কমিশনের বৈঠকও হয়।
পরিকাঠামো এখনও তৈরি নয়। আরও কয়েকদিন পর থেকে অভিযোগ নেবে কমিশন। তাহলে এই সময় অভিযোগকারীরা যাবেন কোথায়?- উঠছে প্রশ্ন। (আরও পড়ুন- রোগী মৃত্যুর অভিযোগে উত্তেজনা আর জি কর হাসপাতালে)