নানুরের বিজেপি কর্মীর মৃত্যুতে মমতার বিরুদ্ধে `বিস্ফোরক` মুকুল
`...পুলিস দেহ নিয়ে পালিয়ে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে।`
নিজস্ব প্রতিবেদন : নানুরের নিহত বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াইয়ের দেহ কোথায়? পরিবার ও বিজেপির দাবি, দেহ চুরি করেছে পুলিস। এই অভিযোগে হাইকোর্টে মামলা করতে চলেছে বিজেপি। অন্যদিকে পুলিসের দাবি, পরিবার দেহ নিতে অস্বীকার করায় তা বোলপুর মর্গেই পড়ে রয়েছে। এই মর্মে নিহত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে নোটিস লাগিয়েছে পুলিস। আর তারমধ্যেই এদিন সকালে দিল্লির বিমান ধরার আগে দমদম বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে 'বিস্ফোরক' মুকুল রায়।
তোপ দাগলেন, যা হয়েছে, যা হচ্ছে, সবটাই তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশে। মুকুল রায় বলেন, "বাংলা এখন পুলিস রাজ চলছে। কোনও গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে। কোনও মানুষের মৃত্যু হলে, আইন অনুযায়ী তাঁর দেহ পরিবারের হাতে তুলে দিতে হয়। এখানে দেখলাম, পুলিস দেহ নিয়ে পালিয়ে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে।" এখানেই শেষ নয়। মুকুল রায় আরও বলেন, "২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্যের ৩ জায়াগায় গুলি চলল। সারা বাংলা জুড়ে অরাজকতা চলছে। পুলিসমন্ত্রী হিসেবে ব্যর্থ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবিলম্বে তাঁর স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে পদত্যাগ করা উচিত।"
প্রসঙ্গত, ৬ তারিখ, গ্রামে বিজেপির পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বচসা শুরু হয় নানুরের রামকৃষ্ণ গ্রামে। সেই বচসা-ই পরবর্তীতে রূপ নেয় দু'পক্ষের সংঘর্ষে। দু'পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি। অভিযোগ, সংঘর্ষের সময়ই বিজেপি কর্মী স্বরূপ গড়াইকে লক্ষ্য করে গুলি করে দুষ্কৃতীরা। গুলি লাগে স্বরূপ গড়াইয়ের পাঁজরে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে প্রথমে বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। শেষে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছিল স্বরূপ গড়াইকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। রবিবার রাতে মৃত্য়ু হয় স্বরূপ গড়াইয়ের। আর তারপর থেকেই শুরু হয়েছে মৃতদেহ নিয়ে টানাপোড়েন। নিহত স্বরূপ গড়াইয়ের দাদা অনুপ গড়াইেয়র অভিযোগ, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম মঙ্গলবার হাসপাতালে বডি নিতে যাব। কিন্তু পরে সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারছি পুলিস রাতেই বডি নিয়ে চলে গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে আমাদের কিছু জানানো হয়নি।"
আরও পড়ুন, গুলিবিদ্ধ দলীয় কর্মীর মৃত্যুতে উত্তাল নানুর, এসপি অফিস-থানা ঘিরে বিক্ষোভ বিজেপির!
এদিকে পুলিসের দাবি, পরিবারের সদস্যরা এনআরএস হাসপাতালের মর্গ থেকে দেহ সোজা রাজ্য বিজেপির সদর দফতরে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। সেক্ষেত্রে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি বা অশান্তি ছড়ানোর আশঙ্কা ছিল। তাই দেহ বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে দেহ নিতে অস্বীকার করেন পরিবারের সদস্যরা। অন্যদিকে, গড়াই খুনে মূল অভিযুক্ত নানুরের তৃণমূল নেতা কেরিম খান পুলিসের খাতায় 'পলাতক'। এদিকে জি ২৪ ঘণ্টা ক্যামেরাবন্দি করেছে তাঁকে। জি ২৪ ঘণ্টার কাছে কেরিম খান দাবি করেছেন, বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে ফাঁসাচ্ছে।