কমলিকা সেনগুপ্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বেলা তখন পৌনে বারোটা।  চেতলার প্যারি মোহন রায় রোড থেকে বেরিয়ে মহাকরণের দিকে যাচ্ছেন ভাবী মেয়র। হ্যাঁ, ভাবী-ই লিখতে হচ্ছে কারণ তখনও মন্ত্রী ফিরাহাদ হাকিমের নামের আগে মহানাগরিক তকমাটা বসেনি। তবে তৃণমূলের নিশ্চিত জয় এবং মেয়র পদে তাঁর স্থলাভিষেক হওয়া যে কেবল সময়ের অপেক্ষা, তা জানতেন তিনি। আর সেই মতো প্রস্তুতি নিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন কলকাতার ভাবী মেয়র।


আরও পড়ুন- আমার ধর্ম নিয়ে ভেবো না, কাজটা দেখো: কলকাতার মেয়র হয়েই আত্মবিশ্বাসী ফিরহাদ


কলকাতার মহানাগরিক পদে শপথ নেবেন পাঞ্জাবি আর ধুতি পরে, এটা ঘোষণা হয়েছিল আগেই। ভাবী মেয়রের মাথায়ও ছিল সে কথা। তবে ধুতি আর পাঞ্জাবির সঙ্গে পরার মতো জুতো কিনতেই ভুলে গিয়েছিলেন মন্ত্রী। ওদিকে শাসক দলের নিশ্চিত জয় নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়ে গিয়েছে কেএমসি চত্বরে। একের পর এক ফোনে সেই সব খবরও পাচ্ছেন তিনি। মন্ত্রীর মাথায় তখন ঘুরছে মহাকরণ হয়ে বেলা তিনটের মধ্যে পুরসভায় পৌঁছতে হবে তাঁকে। তারপর সেখানে শপথ গ্রহন অনুষ্ঠান। এমন অবস্থায় কি আর করণীয়? যাত্রা পথেই গাড়ি ঘুরিয়ে ভাবী মেয়র চলে গেলেন কলেজ স্ট্রিট। সেখানে সীতারাম স্ট্রিটের মুখেই ঢুকে পড়লেন এক জুতো বিপণনী-তে।


আরও পড়ুন- বাড়িতে গাছ লাগালেই মিলবে করছাড়, ঘোষণা মহানাগরিক ফিরহাদ হাকিমের


তারপর যা হল তা অনীল কপূরের ‘নায়ক’ ছবিকেও হার মানাবে। মন্ত্রী কি না এসেছেন আম আদমির দারবারে। বলা নেই, কওয়া নেই চলে এলেন জুতো কিনতে! হঠাত্ মন্ত্রীকে দেখে তো স্বাভাবিকভাবেই হতবাক  বিপণনীর কর্মচারীরা। তখনও ওরা বুঝতে পারেননি, তাঁদের দোকানে কেন এলেন ফিরহাদ হাকিম? ভাবী মেয়র নিজের প্রয়োজনটা বলতেই গোটা দোকানের সব কর্মচারীরাই এগিয়ে এলেন। স্যার, স্যার। এটা দেখুন, ওটা দেখুন। যা হয় আর কি। তবে বেশি সময় নেননি ভাবী মেয়র। ১৫ মিনিটেই কেনাকাটা সেরে বিল মিটিয়ে কর্মচারীদের সেলফি আবদার মিটিয়ে চলে আসেন ফিরহাদ হাকিম।


আর তারপর, গোটাটাই স্মরণীয় অধ্যায়ের সূচনা। স্বাধীনতার পর প্রথম সংখ্যালঘু মেয়র পেল কলকাতা। শপথ মিটতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার নতুন মেয়রকে ফোন করে বললেন, “মানুষের জন্য কাজ করিস”। সেই মন্ত্রে দিক্ষিত হয়েই কাজ শুরু করে দিলেন নতুন মেয়রও। 



(নাতনি-কে কোলে নিয়ে কলকাতার নতুন মেয়র ফিরহাদ হাকিম)