সন্দীপ প্রামাণিক: কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের ভাগ্নি কাবেরী ভট্টাচার্যের বিস্ফোরক অভিযোগ। তাঁর অভিযোগ, তাঁর মাকে মেরে ফেলেছে স্বয়ং মামা-ই। অর্থাৎ সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে একজন 'খুনি' বলেও দাগলেন তাঁর ভাগ্নি! ভাগ্নি কাবেরী ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ২০১৭ সালের ২৬ আগস্ট শিপ্রা ভট্টাচার্য অর্থাৎ কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের দিদির রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর পরই সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র তাঁর ভাগ্নি ও জামাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আসে। তবে তাঁর ভাগ্নির সাফ বক্তব্য, সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র নিজেই চক্রান্ত করে জায়গা জমির জন্য মাকে মেরে ফেলেছে। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ভাগ্নির আরও অভিযোগ, তাঁদেরকে পুরনো বাড়িতে যেতে দেওয়া হয় না। তাঁদের সম্পত্তি দখল করে নেওয়া হয়েছে। এমনি ডেথ সার্টিফিকেটেও সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র নিজের বাড়ির ঠিকানা দেন! কীভাবে কালীঘাটের কাকু ডেথ সার্টিফিকেটে নিজের বাড়ির ঠিকানা দেন? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর ভাগ্নি। কাবেরী ভট্টাচার্যের আরও অভিযোগ, 'পুলিস আমাদের কথা শুনছে না। সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র প্রচুর প্রভাবশালী। সেই জন্যই পুলিস আমাদের কথা শুনছে না। বেহালার শেষ কথা সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র-ই। তাই চিকিৎসক আসার আগেই আমার মা-কে মৃত বলে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল।'


প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার হন কালীঘাটের কাকু সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। তদন্তে অসহযোগিতা, বয়ানে অসঙ্গতি, তথ্য গোপনের চেষ্টা, তদন্তকারী আধিকারিকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রকে। ইডি সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় কালীঘাটের কাকুকে যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছে। একাধিকবার তাঁকে সঠিক উত্তর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তিনি উত্তর দেননি। কুন্তল ঘোষের কাছে থেকে টাকা নিয়ে, সেই টাকা কোথায় পাঠাতেন? কার নির্দেশে চাকরি দুর্নীতির এজেন্টদের কাছ থেকে টাকা নিতেন তিনি? সেই প্রশ্নের উত্তর দেননি ‘কালিঘাটের কাকু’। ইডি-র দাবি সেই সব প্রশ্নের উত্তরই জানা কালীঘাটের কাকুর। কিন্তু তথ্য গোপন করার জন্য উত্তর না দিয়ে মেজাজ হারান তিনি। পালটা চোটপাট করেন ইডি আধিকারিকদের উপর।


গত ২০ মে তাঁর বাড়ি এবং অফিসে তল্লাশি চালিয়ে যে তিনটি কোম্পানির নথি পেয়েছে ইডি, তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যে কোম্পানিগুলির অ্যাকাউন্টে প্রচুর কালো টাকা সাদা করা হয়েছে বলে দাবি ইডি। এছাড়াও দেড় হাজার পাতার নথি, ও ডিজিটাল এভিডেন্স উদ্ধার করা হয়। সেখান থেকেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং তথ্য পাওয়া গিয়েছিল বলে দাবি ইডি-র। সেই বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তার কোনও সদুত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন কালীঘাটের কাকু। তদন্তে উঠে এসেছে, নিয়োগ দুর্নীতির একটা বড় অঙ্কের নগদ প্রোমোটিং বা রিয়েল এস্টেট সংস্থায় খাটিয়েছিলেন সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। 


ইডি সূত্রে দাবি, ২ বন্ধুর মারফত কোটি কোটি টাকা কালীঘাটের কাকু লগ্নি করেছিলেন প্রোমোটিং বা রিয়েল এস্টেট সংস্থায়। ২০২০ সালে ধৃত তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের একটি প্রজেক্টে চন্দননগরে ১২০০ স্কোয়ার ফিট কমার্শিয়াল স্পেস কেনার জন্য ৪০ লক্ষ টাকা অগ্রিম দিয়েছিলেন সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র।  কিন্তু সেই প্রজেক্ট হয়নি। কিন্তু প্রজেক্ট না হলেও টাকা ফেরত নেননি সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র।


আরও পড়ুন, Anubrata Mandal: বাবাকে চাপ দিতেই মেয়েকে জেলে, কেষ্ট-সুকন্যা সাক্ষাতে দাবি দোলার



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)