সেলফি-তে না! তৃণমূলে ‘ডিজিটাল সৈনিক` তৈরির নির্দেশ অভিষেকের
রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভায় ১০০ জন করে ‘ডিজিটাল সৈনিক’ তৈরি করার জন্যও বিধায়ক ও জেলা স্তরের নেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে বিজেপির ফেসবুক পেজ-এ ঢুকেও ‘কাউন্টার অ্যাটাক’ করার নির্দেশে এসেছে যুববেতার বার্তায়।
কমলিকা সেনগুপ্ত
সাদা পাঞ্জাবি, সাদা পাজামা, চোখো রিমলেস চশমা। নজরুল মঞ্চের সিলিংমুখী তাঁর তর্জনী। গোটা সভাগৃহের পিন ড্রপ সাইলেন্সে গমগম করছে এক তরুণের কণ্ঠ। শান্ত স্বভাবের অভিষেক আজ যেন ‘রুদ্ররূপী’! যুবনেতা বলছেন, অনর্গল বলেই চলেছেন। এক একটা বাক্য শেষ হচ্ছে, আর হাততালি-তে ফেটে পড়ছে নজরুল মঞ্চ। এই অভিষেক আগের থেকে অনেক পরিণত, মত সিংহভাগ সাংবাদিকেরই। যারা এতদিন তাঁকে কাছ থেকে দেখছে, তাঁরা তো বটেই এমনকী দলের অনেক বর্ষীয়ান নেতারাই বলছেন, “রাজনীতিটা ধরে ফেলেছেন অভিষেক”।
রাস্তায় নেমে বিজেপি সরকারকে একহাত নেওয়া থেকে দলের প্রবীনদের অনুশীলন আর শৃঙ্খলার পাঠ পড়ানো – দলের যুবনেতার কথায় কথায় ঝড়ে পড়ল তীক্ষ্ণ রাজনৈতিক উপলব্ধি। ভিড়ে ঠাসা নজরুল মঞ্চে অভিষেকের বার্তা, “সেলফি তুলবেন না। যে নেতারা আজ আপনাকে পছন্দ করছেন, তাঁরাই ১৫ দিন পর আপনাকে নাও পছন্দ করতে পারেন। কাজ করুন, ভাল কর্মীদের অনুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে খুঁজে নেবে দল”।
আরও পড়ুন- প্রত্যেক পুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা অনুদান, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
তৃণমূলে দুই, তিন, চার বলে কিছু নেই, এক এবং অদ্বিতীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই, সেই কথাই দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের স্মরণ করিয়ে দিলেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ বলতে হবে না। কোনও দাদা-দিদির জিন্দাবাদ বলতে হবে না। শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ বলুন। একবার নয়, একশো বার বলুন”।
একই সঙ্গে এদিন সিপিএম- কংগ্রেসকেও তুলোধনা করেন তিনি। অভিষেক বলেন, “কংগ্রেসকেও দেখলাম বামেদের সঙ্গে মিলে যেতে। আমরা কোনও দিন আপোশ করিনি। আমরা (তৃণমূল) কোনও ভাবেই সিপিএম-এর সঙ্গে আপোশ করবও না”।
আরও পড়ুন- মমতার ‘ডিজিটাল বিপ্লব’! ফেক নিউজ ধরিয়ে দিতে পারলেই মিলবে সরকারি পুরস্কার!
সোমবার ডিজিটাল কনক্লেভের মঞ্চে বিজেপিকেও একহাত নিয়েছেন তৃণমূল যুব সভাপতি। বিজেপি ডিজিটাল প্রচারে কোটি কোটি টাকা খরচ করে, তৃমমূলের সেই টাকা নেই বলে দাবি করেন অভিষেক। তিনি আরও বলেন, এই ‘ক্ষমতাশালী’ বিজেপি-কে রুখতে ব্লকে-ব্লকে, অঞ্চলে-অঞ্চলে ‘ডিজিটাল সৈনিক’ তৈরি করে লড়তে হবে। প্রত্যেক ‘ডিজিটাল সৈনিকে’র দায়িত্ব হবে সপ্তাহে অন্তত ১২ জনকে তৃণমলমুখী করতে হবে। রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভায় ১০০ জন করে ‘ডিজিটাল সৈনিক’ তৈরি করার জন্যও বিধায়ক ও জেলা স্তরের নেতাদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে বিজেপির ফেসবুক পেজ-এ ঢুকেও ‘কাউন্টার অ্যাটাক’ করার নির্দেশে এসেছে যুববেতার বার্তায়।
উল্লেখ্য, সোশ্যাল মিডিয়ায় জনসংযোগ বাড়িয়ে রাজ্যে তৃণমূলের পালে হাওয়াকে আরও জোরদার করতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। আর এই লড়াইয়ে তৃণমূলকে নেতৃত্বে দেবেন খোদ অভিষেকই।