Howrah Violence: এই হানাহানি বন্ধ হোক, হাওড়ার অশান্তি নিয়ে Zee ২৪ ঘণ্টা-য় শান্তির আহ্বান বিশিষ্টদের
শুক্রবার জাতীয় সড়ক ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরোধের পর শনিবার পাঁচলা বাজারে তাণ্ডব চালাল দুষ্কৃতীরা। বাজারের একাধিক ছোট-বড় ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়
নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার মন্তব্যকে ঘিরে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হাওড়ার বিস্তৃর্ণ এলাকায়। শুক্রবার জাতীয় সড়ক ঘণ্টার পর ঘণ্টা অবরোধের পর শনিবার পাঁচলা বাজারে তাণ্ডব চালাল দুষ্কৃতীরা। বাজারের একাধিক ছোট-বড় ঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এলাকা একেবারে শুনসান। পাঁচলা ছাড়াও মীরপুর, উলুবেড়িয়া থেকেও অশান্তির খবর আসছে। হাওড়ার এমন রূপ আগে দেখা যায়নি। টানা ২ দিন ধরে যা চলছে দমন করতে মাঠে নেমেছে পুলিসও। একসঙ্গে থেকে ওই বৈরীতা কেন? প্রশ্ন তুলে শান্তির আহ্বান জানালেন বিশিষ্টরা।
কৌশিক সেন, অভিনেতা
নাগরিক হিসেবে আমার মনে হচ্ছে, এটা অত্যন্ত পরিকল্পনা করেই করা হচ্ছে। কারণ আমরা জানি পশ্চিমবঙ্গে অনেক সমস্য়া রয়েছে। কিন্তু এখানকার কালচারটাই হল রাজনীতি বা অন্য কোনও ক্ষেত্রে আমরা অনেক বেশি স্পেস দিতে পেরেছি সংখ্যলঘুদের। শুধুমাত্র এই আমলেই নয়। গন্ডগোল কমবেশি আগেও ছিল কিন্তু আমাদের রাজ্যে সংখ্যালঘুরা যতটা নিরাপদ অন্য রাজ্যে ততটা নয়। ফলে নূপুর শর্মা ও আর একজনের যে ধ্বংসাত্মক কথা তার দায় যে পার্টিটা যে চালায় তাঁর। কিন্তু এই মূহুর্তে কারও উপরে দায় না চাপিয়ে রাজ্য প্রশাসনকে বলতে পারি যে গতকাল আপনারা যেভাবে শক্ত হাতে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন এবারও সেটা করুন। কিছু লোকের এখানে স্বার্থ রয়েছে। এদের আটকাক পুলিস। যারা এসব করছে তারা কোনও ধর্মের নয়। এরা দুস্কৃতী, এদের যেভাবেই হোক আটকাতে হবে।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, অভিনেত্রী
হাওড়ায় যেভাবে সমস্যা চলছে তাতে আমার খারাপ লাগছে। আমি চাই সবাই এখানে শান্তিতে থাকি। আমাদের সবারই উদ্দেশ্য, সবাই মিলেমিশে সম্প্রীতির সঙ্গে থাকব। এরকম পরিস্থিতি কোনওভাবেই কাম্য নয়। আমরা যেন সবাই মিলেমিশে থাকি।
ডা কুণাল সরকার, বিশিষ্ট চিকিত্সক
আমরা বারবার এই ফাঁদে পা দিয়েছি। প্রায় ৭৫ বছর হয়ে গেল, আমরা বহুবার এই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি। এত প্রাণহানি হয়েছে কিন্তু কেন জানি না আমরা যেন শিখে উঠতে পারছি না যে এই ধরনের হানাহানি একেবারে অর্থহীন। আমরা ধর্ম, সংস্কৃতিরই হোই না কেন সবার উপরে আমরা সাধারণ মানুষ। সাধারণ মানুষ একে অপরকে সাহায্য করে, একে অপরের মুখ চেয়ে বেঁচে থাকুক। এই অশান্তি বন্ধ হোক। আমি নিশ্চিত, আমরা পারব। সবাইকে ঠাণ্ডা মাখায় ভাবতে হবে। আমরা নিশ্চয় পারব।
রূপম ইসলাম, সঙ্গীতশিল্পী
রাজ্যের সব মানুষের কাছে আমার আবেদন, এই হানাহানি বন্ধ করুন। কে কোথায় কী মন্তব্য করেছেন তাতে উত্তেজিত হয়ে নিজেদের আরও ক্ষতি করা কোনও সময়েই উচিত নয়। সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়ার যাদের ক্ষমতা রয়েছে তারা নেবেন। আমরা রাস্তায় নেমে জনজীবনকে যদি বিপর্যস্ত করি তাহলে তাতে কোনও সুরাহাই হবে না। বরং আরও সমস্যাই ডেকে আনব। আমরা আবেদন শান্তিপূর্ণ ভাবে যেন আমরা থাকতে পারি সেটারই ব্যবস্থা করা উচিত।
দেবশঙ্কর হালদার, অভিনেতা
খুব হতাশ লাগে যখন দেখি আমার আসেপাশের মানুষ, আমার জল হাওয়ার মানুষ শুধু ধর্মের কারণে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ধরেই নিচ্ছি একজন মানুষ খুব খারাপ কথা বলেছেন। কিন্তু সেজন্য আমরা বন্ধুরা লড়াই করব কেন? কাঁধে কাঁধ রেখে দাঁড়াতে পারব না কেন? সবাইকে অনুরোধ করছি এরকম কোনও কারও ইস্কানিতে যেন আমরা কেঁপে না যাই। আমরা যেন একে অপরকে আঘাত না করি। গতকাল আমি টট্টগ্রামে ছিলাম। সেখানেও দেখলাম মানুষ এনিয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়ছেন। যারা এই ধরনের মন্তব্য করছেন তাদের আমি ধিক্কার জানাই। আসুন আমরা একসঙ্গে থাকি। কোনও একটি মন্তব্য আমাদের এত সহজে নাড়িয়ে দেবে এত দুর্বল আমরা নই।
আরও পড়ুন-"আপনার পাপের ফলে ভুগতে হচ্ছে জনগণকে", মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা তোপ শুভেন্দুর