নিজস্ব প্রতিবেদন: ত্রুটিপূর্ণ রেক। অসতর্ক চালক। উদাসীন আরপিএফ। আর ত্রয়ীর নিটফল অকাল মৃত্যু সজল কাঞ্জিলালের। মেট্রোর দুর্ঘটনার প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মেট্রো রেলে হাত আটকে সজল কাঞ্জিলালের মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় গোটা রাজ্য। শুরু হয়েছে চাপান-উতোর। কার গাফিলতিতে ঘটে গেল এত বড় দুর্ঘটনা? কার উদাসীনতার মূল্য প্রাণ দিতে চোকালেন সজল কাঞ্জিলাল? 


ঠিক কী ঘটেছিল শনিবার? 


শেষমুহুর্তে মেট্রোয় ওঠার চেষ্টা করেন সজল কাঞ্জিলাল। কিন্তু, কামরায় পুরোপুরি ওঠার আগেই চলতে শুরু করে মেট্রো। হাত  আটকে যায় মেট্রোর দরজায়। সেই অবস্থাতেই চলন্ত রেক তাঁকে টেনে হিঁচড়ে ঢুকে পড়ে টানেলে। 


সজল কাঞ্জিলালের হাত  আটকে থাকা অবস্থায় কী করে বন্ধ হল রেকের দরজা?


যে রেকটিতে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, সেটি নতুন রেক। চেন্নাই থেকে আসা এই রেকের দরজা বন্ধ হওয়ার পদ্ধতি অত্যাধুনিক। ১৫ মিমির বেশি চওড়া কিছু দরজায় আটকে থাকলেই, রেকের দরজার সেন্সর অ্যাক্টিভেট হয়ে যাবে। সেন্সর অন থাকলে, চালক চেষ্টা করেও দরজা বন্ধ করতে পারবেন না। দুর্ঘটনার মুহূর্তে সেন্সর কাজ করেনি। সজলবাবুর হাত আটকে থাকা অবস্থাতেই  দরজা বন্ধ হয়েছে।


ত্রুটিপূর্ণ রেকই চালাচ্ছে মেট্রো?


চেন্নাই থেকে আড়াই বছর আগে এসেছে অত্যাধুনিক মেধা রেক। কিন্তু, ত্রুটির কারণে গত আড়াই বছর রেকগুলি চালানো যায়নি। দীর্ঘ ট্রায়াল রানের পর ত্রুটি মেরামত করে ২টি রেক চালানো হচ্ছে। কিন্তু, শনিবারের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল. যাত্রী সুরক্ষা শিকেয় তুলে  ত্রুটিপূর্ণ রেকই চালাচ্ছে মেট্রো কর্তৃপক্ষ। 


কেন অসতর্ক চালক?


দরজা বন্ধ হয়েছে কিনা তা দেখার জন্য চালকের কেবিনে ট্রেন কন্ট্রোল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম থাকে। ত্রুটিপূর্ণ রেকে সেই সিস্টেম কাজ করেনি। কেন আরও একটু সতর্ক হলেন না চালক? রেকে যাত্রীর হাত আটকে যাওয়ার পর স্টেশনে যথেষ্ট হৈচৈ বাধে। কিছুই শুনলেন না চালক?


আরপিএফের ভূমিকা


যাত্রী নিরাপত্তায় স্টেশনে মোতায়েন থাকে আরপিএফ। তাদের ভূমিকা কী ছিল? রেকের দরজায় যাত্রীর হাত আটকে গেল, মেট্রো চলতে শুরু করল, তাও কেন নজরে এল না আরপিএফের?


কেন অসচেতন যাত্রীরা?


মেট্রো কর্তৃপক্ষের গাফিলতি স্পষ্ট। কিন্তু, দুর্ঘটনা দায় হয়তো পুরোপুরি এড়াতে পারিনা আমরাও। মেট্রো ওঠার সময় অনেক সময়ই নিয়মের তোয়াক্কা করেন না যাত্রীরা। শেষমুহূর্তে যেকোনওভাবে উঠে পড়ার চেষ্টা করেন কামরায়। আর সেটা যে কত বিপজ্জনক চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল সজলবাবুর মৃত্যু।  যাত্রী অনুপাতে কলকাতায় মেট্রোর রেকের সংখ্যা এখনও অনেক কম। তারসঙ্গে যোগ হয়েছে সময় বিভ্রাট। একটা ট্রেন ছাড়লে, পরেরটা কখন আসবে তা অনেকসময়ই  অনিশ্চিত। তাই প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও ভিড় রেকেই উঠতে বাধ্য হন যাত্রীরা।


আরও পড়ুন- শঙ্কুদেবের হাত ধরে রাতারাতি বাম থেকে রামে বিপ্লব