নিজস্ব প্রতিবেদন : টালিগঞ্জ থানায় ঢুকে হামলার ঘটনায় গ্রেফতার করা হল মূল অভিযুক্ত পুতুল নস্করকে। থানায় হামলার ঘটনায় আগেই গ্রেফতার করা হয় ৩ জনকে। এরপর কাল রাতে গ্রেফতার করা হয় ২ জনকে। তারপর আজ আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করে পুলিস। এই নিয়ে থানায় হামলার ঘটনায় মোট ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৯ জন। আজ যে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যেই একজন পুতুল নস্কর। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বাঁশ ও লাঠি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কে এই পুতুল নস্কর?
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকায় প্রমীলা বাহিনীর নেত্রী বলা যায় পুতুল নস্করকে। বছর উনিশ আগে কংগ্রেস কাউন্সিলরের হাত ধরে পুতুল নস্করের উত্থান। রাজনৈতিক নেতাদের আশীর্বাদের হাত মাথায় থাকায় ধীরে ধীরে 'প্রভাব-প্রতিপত্তি' বাড়তে থাকে পুতুলের। এলাকায় একধিচ্ছত্রপতি হয়ে ওঠে পুতুল। মেলায় নাগরদোলনার একাধিক সরঞ্জাম, ইলেকট্রিক নৌকা সরবরাহের আড়ালে গাঁজা সহ বিভিন্ন নেশার সামগ্রী ব্যবসা ছিল পুতুলের। বাড়িওয়ালা-ভাড়াটে ঝামেলা, কলতলার ঝগড়া, কাজের লোক নিয়ে সমস্যা সবেতেই 'নেত্রীর' ভূমিকায় দেখা যেতে থাকে পুতুলকে। হাত পাকায় তোলা আদায়েও। এলাকার যুব ও মহিলাদের নিয়ে একটি দল তৈরি করেছিল পুতুল। যাদের কাছে তার পরিচয় 'পুতুল মাসি'।


স্বামী-স্ত্রী মিলে ১৯৯৮ সালে মেটেলিবাগান এলাকায় থাকতে আসে। তারপর স্বামীর সঙ্গেই প্রথমে কংগ্রেস তারপর কিছুদিন সিপিআইএম-এর হয়েও কাজ করত। এরপর ২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের সঙ্গে পতাকা বদল করে পুতুলও। তৃণমূলে নাম লেখায়। সেইসময় পুতুল নস্কর ফিরহাদ হাকিমের হয়ে কাজ করত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। কিন্তু এবার লোকসভা ভোটের আগে আবার শিবির বদল করে পুতুল। বিজেপিতে গিয়ে 'আশ্রয়' নেয় পুতুল। বিজেপির হয়ে এলাকায় পতাকাও লাগায়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে কয়েকবার পুতুলকে গ্রেফতার করা হলেও, রাজনৈতিক যোগসাজশ কাজে লাগিয়ে প্রতিবারই জেল থেকে ছাড়া পেয়ে গিয়েছে পুতুল নস্কর।



উল্লেখ্য মত্ত অবস্থায় বাইক চালানোর অপরাধে এক যুবককে আটকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে টালিগঞ্জ থানা। চেতলার বাসিন্দা রণজয় হালদার নামে এক যুবককে মত্ত অবস্থায় বাইক চালানোর অপরাধে আটক করা হয়। অভিযোগ, সেই খবর পেয়েই থানায় এসে হাজির হন যুবকের পরিবার ও প্রতিবেশীরা। থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। কয়েকজন থানায় ঢুকে গিয়ে টেবিল চাপড়ে পুলিসকে শাসান। বাধা দিতে গেলে আক্রান্ত হন এক কনস্টেবল। তাঁকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ।


থানায় ভাঙচুরের সেই ঘটনার ১১ ঘণ্টার পর গতকাল স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের  করে পুলিস।  ঘটনার সময়ে কর্তব্যরত ওসি অনুপ ঘোষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁকে শোকজ করা হয়। সেই ঘটনায় ডিসি-র কাছ থেকে রিপোর্টও তলব করেন ক্ষুব্ধ সিপি অনুজ শর্মা। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে পুলিস নিশ্চিত হয়, হামলার নেপথ্যে রয়েছে পুতুল নস্কর ও তার মহিলা ব্রিগেড। হামলার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন পুতুলের ভাইপো আকাশও। পরে সন্ধ্যায় আকাশকে ধরতে গেলে ফের বাধার মুখে পড়ে পুলিস।


আরও পড়ুন, মধ্যপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার খাগড়াগড় বিস্ফোরণের চক্রী জেএমবি জঙ্গি জহিরুল


এদিকে, গতকাল আকাশকে নিয়ে ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে যায় পুতুল। কিন্তু ফিরহাদ হাকিম স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পুলিস পুলিসের কাজ করবে। আর তারপরই আজ গ্রেফতার করা হল পুতুল নস্করকে। তবে অভিযুক্ত আকাশ ও রণজয় এখনও ফেরার। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।