একেবারে ফিল্মি কায়দায় নিউটাউনে পঞ্জাবের দুই গ্যাংস্টারকে এনকাউন্টার `স্পেশাল ৪০`-র
নির্দিষ্ট সূত্র মারফৎ খবর পেয়ে প্রস্তুতি নেয় এসটিএফ। দুপুর ১২টা নাগাদ নির্দিষ্ট তথ্য পৌছায় পুলিসের কাছে। দুপুর ৩.৪০ নাগাদ ফ্ল্যাটে ঢোকে এসটিএফ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: খাস কলকাতায় দিনেদুপুরে 'অপারেশন গ্যাংস্টার'। পঞ্জাবের দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতী গা ঢাকা দিয়ে লুকিয়েছিল নিউটাউনের অভিজাত আবাসনে। পঞ্জাব পুলিসের থেকে তথ্য পেয়ে নিখুঁত অপারেশন সারল রাজ্য পুলিসের এসটিএফ (STF)। ১৫ মিনিটের গুলির লড়াইয়ে খতম দুই দুষ্কৃতী। নিরাপদে আবাসিকরা। আহত হয়েছেন অপারেশনের লিডে থাকা অফিসার কার্তিকমোহন ঘোষ। হাড়হিম করা শুটআউটের ঘটনা মনে করাচ্ছে সিনেমার চিত্রনাট্যকে।
গত ১০ মে পঞ্জাব পুলিস কর্মীদের কাছ অস্ত্র ছিনতাই করে জয়পাল সিং ভুল্লার (Jaipal Bhullar) ও তার দলবল। ১৫ মে পুলিস পঞ্জাব পুলিসের দুই এএসআইকে খুন করে তারা। খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে লুধিয়ানা গ্রামীণ পুলিস। লুধিয়ানায় ধরা পড়ে জয়পালের সহযোগী ভরতকুমার। তার কাছে মেলে কলকাতার একটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন। জেরা করে পুলিস জানতে পারে বিবাহসূত্রে বাংলার সঙ্গে যোগ রয়েছে ভরতকুমারের। তার শ্বশুরবাড়ি কলকাতায়। সে-ই এক ব্যক্তির মাধ্যমে ফ্ল্যাট ভাড়া জোগাড় করে দিয়েছিল জয়পালকে। বাংলার পুলিসকে তথ্য দেয় পঞ্জাব পুলিস। সাপুরজির আবাসনে টাওয়ার নম্বর বি ১৫৩, রুম নম্বর ২০১ ফ্ল্যাটে ১৩ মে থেকে সাপুরজি আবাসনে ভাড়া নিয়ে গা ঢাকা দিয়ে থাকছিল দুই দুষ্কৃতী জয়পাল ভুল্লার ও জসসি খারার। জয়পালের (Jaipal Bhullar) মাথার দাম ১০ লক্ষ ও জসসির ৫ লক্ষ টাকা। পঞ্জাবের দুই পুলিস কর্মীকে খুন, ডাকাতি, অস্ত্র কারবারে সঙ্গে জড়িত ছিল তারা। মাদক পাচার সূত্রের খবর হিসেবে উঠে আসছে পাকিস্তান যোগও।
খবর পেয়ে প্রস্তুতি নেয় এসটিএফ (STF)। দুপুর ১২টা নাগাদ নির্দিষ্ট তথ্য পৌঁছয় পুলিসের কাছে। সাপুরজির আবাসনে অভিযান চালায় এসটিএফের ৪০ জনের দল। দুপুর ৩.৪০ নাগাদ ফ্ল্যাটে ঢোকেন এসটিএফ ও এসএসএফের ১০ জন অফিসার। বাইরে ঘিরে ফেলেছে ৩০ জনের ব্যাকআপ টিম। যার মাধ্যমে ঘর ভাড়া জোগাড় করেছিল জয়পালরা, সেই ব্যক্তিকে সামনে রেখে ঢোকে পুলিস। কলিং বেল বাজাতে পরিচিত মুখ দেখে দরজা খোলে এক দুষ্কৃতী। তার পরই ঘরে ঢুকে পড়ে পুলিস। সামনে ছিলেন এসটিএফের ইন্সপেক্টর কার্তিকমোহন ঘোষ। বিপদের আঁচ পেয়ে গুলি চালাতে শুরু করে দুষ্কৃতীরা। গুলিতে জখম হন কার্তিকমোহন। পাল্টা জবাব দেয় এসটিএফ (STF)। ঘরে ঢুকে সরাসরি দুজনকে লক্ষ্য করে গুলি করে তারা। এসটিএফের এডিজি বিনীত গোয়েল বলেন,''পুরোটাই রাজ্যের এসটিএফের অভিযান। পঞ্জাব পুলিস যুক্ত ছিল না। দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৭ লক্ষ টাকা। পাঁচটি ছোট আগ্নেয়াস্ত্র। আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ছিল তাদের কাছে। মোবাইল ছাড়াও একাধিক জিনিস মিলেছে।''
আরও পড়ুন- দিল্লিতে শুভেন্দুর সঙ্গে সৌমিত্র-অর্জুন-নিশীথ কথা, জানেনই না রাজ্য নেতারা
চারিদিকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছুটছে এসটিএফ। ঘরবন্দি হয়ে কাঁপছেন বাসিন্দারা। সিনেমায় দেখা চিত্রনাট্যকেও যেন হার মানাল এদিনের ঘটনা। দুজনের কাছেই যে ভারী আগ্নেয়াস্ত্র থাকতে পারে, তা আগাম আঁচ করেছিলেন অফিসাররা। সেইমতো নিখুঁত অপারেশন। এক ইন্সপেক্টর আহত হওয়া ছাড়া। আর কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। গ্যাংস্টাররা আবাসিকদের কোনও ক্ষতিও করতে পারেনি। অপারেশনের ব্লু প্রিন্ট সাজানো হয়েছিল সেভাবেই। কলকাতায় দিনেদুপুরে এমন হাইপ্রোফাইল এনকাউন্টার শেষ কবে হয়েছে? মনে করতে পারছেন না অনেকেই।
আরও পড়ুন- সহজে ধনী হওয়ার নেশায় খেলোয়াড় থেকে কুখ্যাত গ্যাংস্টার, নিউটাউনে খতম Jaipal
(Zee 24 Ghanta App: দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)