সহজে ধনী হওয়ার নেশায় খেলোয়াড় থেকে কুখ্যাত গ্যাংস্টার, নিউটাউনে খতম Jaipal
হরিয়ানা, রাজস্থান ও হিমাচলপ্রদেশে হত্যা, অপহরণ, ডাকাতি ও তোলাবাজি-সহ ৪০টির বেশি মামলায় অভিযুক্ত ভুল্লার (Jaipal Bhullar)।
নিজস্ব প্রতিবেদন: পঞ্জাবের মোস্ট ওয়ান্টেড গ্যাংস্টার জয়পাল ভুল্লার (Jaipal Bhullar)। তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী জসসি খারার। নিউটাউনে এসটিএফের গুলিতে দুজনেই নিহত। জাগরনে দুই অ্যাসিসট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টরের হত্যাকাণ্ডে জয়পাল ভুল্লারকে খুঁজছিল পঞ্জাব পুলিস। এছাড়া হরিয়ানা, রাজস্থান ও হিমাচলপ্রদেশে হত্যা, অপহরণ, ডাকাতি ও তোলাবাজি-সহ ৪০টির বেশি মামলায় অভিযুক্ত ভুল্লার।
অবসরপ্রাপ্ত অ্যাসিসট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টরের ছেলে জয়পাল (Jaipal Bhullar)। অপরাধে হাতে খড়ি হওয়ার আগে ২০০৩ সালে লুধিয়ানায় পঞ্জাব সরকারের স্পোর্টস ট্রেনিং সেন্টার স্পিড ফান্ড অ্যাকাডেমির ছাত্র ছিল জয়পাল। হ্যামার থ্রোয়ার ছিল সে। ওই অ্যাকাডেমিতে তাঁর সঙ্গে আলাপ আমনদীপ সিং ওরফে হ্যাপির। সে বডি বিল্ডিং করত। হ্যাপির বাবাও ছিল সাব ইন্সপেক্টর।
২০০৪ সালে জুলাইয়ে হ্যাপি ও জয়পাল মিলে নিকটাত্মীয়র ছেলে চিরাগকে অপহরণের ছক কষে। তাড়াতাড়ি ধনী হতে চেয়েছিল তারা। তবে সফল হয়নি পরিকল্পনা। লুধিয়ানার জেলে ঠাঁই হয় জয়পাল ও হ্যাপির। জেলে রাজীব ওরফে রাজার সঙ্গে আলাপ হয় জয়পালের। ২০০৬ সালে লুধিয়ানার ৩জন গয়না দোকানিকে খুন ও লুঠের দায়ে অভিযুক্ত ছিল রাজা। জেল থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে শেরার সঙ্গে দেখা হয় জয়পালের। শেরা আবার জাতীয়স্তরের হ্যামার থ্রোয়ার। সে নিউজিল্যান্ড যাওয়ার পরিকল্পনা করছিল। সেজন্য দরকার ছিল টাকা। ২০০৯ সালে বারনালা বাস স্ট্যান্ড থেকে রাজাকে পুলিসের হেফাজতকে ছিনিয়ে আনে তারা। লুধিয়ানা থেকে বাঠিন্ডার জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তাকে। তিন জনে মিলে 'গ্যাং' করে তারা।
২০০৯ সালের শুরুতে হোসিয়ারপুরের কারখানা থেকে বন্দুক লুঠ করে তারা। এরপর পঞ্চকুল্লা ও মোহালিতে ব্যাঙ্ক ডাকাতি, চণ্ডীগড়ের ব্যবসায়ী এবং বিজেপি নেতাকে লুঠ ও হাইওয়ে থেকে গাড়ি ছিনতাই করে। হরিয়ানায় গ্যাং চালাত রাজা। পঞ্জাবে জয়পাল। ওই বছরের জুনে রাজা ও তার গ্যাংয়ের লোকজনকে গ্রেফতার করে পঞ্চকুল্লা পুলিস। তার মাসখানেকের মধ্যে চণ্ডীগড় পুলিস পাকড়াও করে জয়পালকে। পঞ্জাব, হরিয়ানা ও দিল্লির ২৭টি থানার মামলায় তাদের আদালতে তোলা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রমাণ নেই অথবা প্রত্যক্ষদর্শীরা মুখ খুলতে চাননি। ফলে সহজেই জামিন পেয়ে যায় তারা।
চণ্ডীগড়ের বুরারি জেলে রকির সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় জয়পালের (Jaipal Bhullar)। তবে বেশিদিন বন্ধুত্ব টেকেনি। পঞ্জাবে জয়পাল গ্যাংয়ের নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয় শেরা। রাজস্থানে মাদক ব্যবসা শুরু করে জয়পাল। রকির হয়ে কাজ করতে শুরু করে হ্যাপি। ২০১২ সালে হ্যাপিকে খুন করে শেরা। তার ২ মাস পর এনকাউন্টারে মৃত্যু হয় তার। শেরার খবর পুলিসকে দিয়েছিল রকির দলের লোকজন।
২০১৬ সাল থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল জয়পাল (Jaipal Bhullar)। ২০১৭ সালে চণ্ডীগড়ের কাছে বানুরে অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের অর্থবাহী গাড়ি থেকে ১.৩৩ কোটি টাকা লুঠ করে জয়পাল ও তার সহযোগীরা। চলতি বছর ৫ জানুয়ারি জয়পালের ৩ ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে গ্রেফতার করে মোহালি পুলিস। পাকিস্তান থেকে এদেশে মাদক পাচার করত তারা। মধ্যপ্রদেশ থেকে ধরা পড়ে আরও দুই সহযোগী। তারা দুই এএসআই-কে খুনে অভিযুক্ত। ফলে জয়পাল দুর্বল হয়ে পড়ে। তার মাথার দাম ১০ লক্ষ টাকা ঘোষণা করেছিল। জসপ্রীতের সহযোগী জসসির মাথার দাম ছিল ৫ লক্ষ টাকা।
গত মাসে জয়পাল সিং ভুল্লার ও ৩ সহযোগীর বিরুদ্ধে দুই পুলিস কর্মীদের খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে লুধিয়ানা গ্রামীণ পুলিস। মাদক মাচারের খবর পেয়ে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন এএসআই ভগবান সিং ও এএসআই দলবিন্দর সিং। তখন তাদের উপরে গুলি চালায় জয়পাল ও তার দলবল। বুধবার আর পালাতে পারল না জয়পাল। পুলিসের গুলিতে মৃত্যু হল তার।
আরও পড়ুন- বিচ্ছেদ হতেই পারে, আমারও তো হয়েছে বলে নুসরতকে বিয়ে স্বীকারের পরামর্শ Soumitra-র
(Zee 24 Ghanta App: দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)