রণয় তেওয়ারি: রিজেন্ট পার্কের ১৯৬/১ মহাবিষ্ণু অ্যাপার্টমন্ট থেকে রবিবার একই পরিবারের ৩ জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পচা গন্ধ পেয়ে প্রতিবেশীরা খবর দেন পুলিসে। তারপরই দরজা ভেঙে উদ্ধার হয় বাড়ির কর্তা বিজয় চট্টোপাধ্যায়, তাঁর স্ত্রী রানু চট্টোপাধ্যায় ও তাদের মেয়ে ঐন্দ্রিলা চট্টোপাধ্যায়। প্রাথমিকভাবে পুলিস মনে করছে আত্মহত্যাই করেছেন ওই তিনজন। কিন্তু তাই যদি হয় তাহলে তার কারণ কী। এনিয়ে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিসে খবর, রিজেন্ট পার্কের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার স্বামী-স্ত্রী-মেয়ের ঝুলন্ত দেহ


বিজয়বাবুদের একসময়ের প্রতিবেশীদের দাবি, ২০২০ সালে ঘুমের ওষুধ খেয়ে একবার আত্ঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বিজয়বাবুর গোটা পরিবার। আসলে প্রোমোটিং ব্যবসায় নামাই তার কাল হল। বেশকিছু দিন ধরেই বিজয় চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে আসতো একাধিক পাওনাদার। আমার টাকা কোথায়? আমার দোকানটার কী হল? ব্যাংকের লোনটা কবে শোধ করবেন? এমনই সব প্রশ্ন রোজই শুনতো হতো বিজয় চট্টোপাধ্যায়কে।


গতকাল  জি ২৪ ঘণ্টায় ওই মত্যুর খবর পাওয়ার পরই বিজয় বাবুদের সম্পর্কে জানতে পারেন মুদিয়ালির ব্রহ্ম সমাজ লেনের বাসিন্দারা।
সোমবার ব্রহ্ম সমাজ লেনে সেই এলাকাতে যেতেই শোনা যায় লোকের মুখে মুখে বিজয় বাবুদের নাম। তাঁদের নিয়েই আলোচনা করছেন কেউ কেউ।
কাউকে আবার বলতে শোনা যাচ্ছে উৎশৃঙ্খল জীবন যাপনই কেড়ে নিল তিনজনের প্রাণ। এলাকার এক বাসিন্দা জানান, পি৩০৮/বি/১ ব্রহ্ম সমাজ লেনের যে বাড়িটা এখন জি প্লাস ফোর দেখছেন সেখানেই একসময় দুতলায় থাকতেন বিজয়বাবুরা। বাড়ির নিচে সোনার দোকান ছিল বিজয় বাবুর। এলাকার অপর এক বাসিন্দা বলছেন, সোনার কারবারে তো লোকসান চলছিলই, প্রোমোটিংয়ের ব্যবসায় নেমে আরও ডুবে গিয়েছিলেন।
চারদিকে ধার দেনা। প্রত্যেকদিন পাওনাদাররা হানা দিতেন বাড়িতে। এই বাড়িটিও প্রমোটিং করে নিজের ভাগটা বেঁচে দেন।


ব্রহম্সমাজ রোডের অন্য এক বাসিন্দা ক্যামেরার সামনে কিছু বলতে না চাইলেও, তিনি জানান, পাহাড়পুরে শৈলেশ শ্রী সিনেমা হলের কাছে "হ্যাপ মোর" বহুতলের ফাস্ট ফ্লোরের একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রী, কন্যাকে নিয়ে থাকতেন বিজয়বাবু। ব্যাংক থেকে ১৯ লক্ষ টাকা লোন নিয়েছিলেন তিনি।
কিছু টাকা শোধ করতে পারলেও বাকি টাকা দিতে পারছিলেন না তিনি। লকডাউনের পর তাঁদের ফ্ল্যাটটি সিজ করে দেয়ে ব্যাংক। তারপর থেকে এই পরিবার কোথায় থাকত কেউই জানত না। রবিবারের ঘটনার পর থেকেই তা জানতে পেরেছেন এলাকার বাসিন্দারা।


বিজয় চট্টোপাধ্য়ায়ের প্রাক্তন প্রতিবেশীদের দাবি, ২০২০ সালে একবার ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেন তিনজনই। সেই সময়ে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তারপর থেকে পাওনাদারা কম আসতে থাকেন। কিন্তু ফ্ল্যাট সিজ হয়ে যাওয়ার পর থেকে আর কখনই দেখা যায়নি বিজয় বাবুদের। পাওনাদাররা টাকা চাইতে যেতেন বিজয়বাবুর দাদার কাছে। কিন্তু তিনি সাফ জানিয়ে দিতেন, তিনি কিছুই জানেন না। ওই বহুতলের এক প্রতিবেশী জানান, বাড়ির নিচে দোকান দেওয়ার কথা ছিল, এর জন্য ৫ লক্ষ্য টাকা নিয়েছিলেন বিজয় বাবু।
দোকানও মেলেনি, টাকাও মেলেনি বলে অভিযোগ।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)