সৌরভ পাল 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

একেই রোজগার নেই, তার ওপর দিতে হবে প্রতি টাকা রোজগারের হিসেব! প্রাণ ওষ্ঠাগত সোনাগাছির যৌনকর্মীদের। বিগত বছরের সঙ্গে চলতি বছরের আয়কে পাশাপাশি রাখলে আতস কাচেও ধরা পড়ছে না রেডলাইট এরিয়ার এ বছরের রোজগার। সব দোষ নোট বন্দির! এশিয়ার বৃহত্তম যৌনপল্লীর জৌলুসে এই ঘোর অন্ধকার নেমে আসার পিছনে রয়েছে ২০১৬-র ৮ নভেম্বর দিনটি। এই দিনে মোদীর নেওয়া নোট বন্দির সিদ্ধান্তকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন যৌনকর্মীরা। এক বছর কাটতে চলল। উন্নতি তো নেইই, আরও অধগতির দিকে ধেয়ে যাচ্ছে সোনাগাছি। নিজে বাঁচতে এবং সোনাগাছিকে বাঁচাতে তাই এবার যৌনকর্মীদের রোজগারে কর ছাড়ের দাবি তুলেছেন দুর্বারের সদস্যরা। 


আরও পড়ুন- আমাদের পেটে লাথি মেরেছে, ক্ষতিপূরণ দেবে মোদী? প্রশ্ন যৌনকর্মীদের 


কিছুটা ছাড় যদি হয়? মেয়েরা যাতে একটু দাঁড়াতে পারে। ব্যাঙ্কে টাকা রাখলেই আয়ের উত্স জানাতে হবে। যৌনকর্মীরা ট্যাক্স কোথা থেকে দেবে? ক'টা মেয়ে আর জমাতে পেরেছে? এই কথাগুলিই বারেবারে বলছে যৌনপল্লীর কর্মীরা। ঊষা কো-অপারেটিভের পুরনো সদস্য সরস্বতী দাসের দাবি, "যৌনকর্মীদের রোজগারে কর ছাড়ের বন্দোবস্ত করুক মোদী। এতে মেয়েরা একটু হলেও উঠে দাঁড়াতে পারবে। বাঁচতে পারবে ওরা।" ব্যবসায়িক মন্দার কথা বলতে গিয়ে সরস্বতী দেবী বলেন, "একটা সময় সোনাগাছিতে বড় বড় ব্যবসাদাররা আসতেন, নাচ-গান দেখবেন বলে। আনন্দফুর্তি করবেন বলে। যে কোনও প্রোগ্রামেই অনেক ক্রেতার আনাগোনা দেখছে এই রেডলাইট এরিয়া। নোটবন্দির ফলে এবার সেটা হয়নি। বাবুরাও (বাঁধা ক্রেতা) মেয়েদের মাস কাবারি দিতে পারছে না। পয়সার ঘাটতিতে সবই পণ্ড।" 


আরও পড়ুন- নোট নাকচের বর্ষপূর্তিতে 'উলু-খাগড়া'রা কেমন আছেন? 


প্রধানমন্ত্রীর নোট বন্দির সিদ্ধান্তের জন্য যে তাদের পথে বসতে হচ্ছে, সে কথা বারে বারে উঠে এসেছে চামেলি সাহাদের কথায়। যৌবনে পা দেওয়া চামেলি ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে বলেন, "আমাদের নতুন নোট চাই না। পেটে ভাত জোগাতে পুরনো নোটও চলবে। মোদী বাড়াবাড়ি করছে। গরিবের পেটে লাথি মেরেছে।" 


সরস্বতী দাস, চামেলি সাহার কথাতে সুর মিলিয়ে পঞ্চাশোর্ধ শেফালি দাসও মন্দার জন্য নোটবন্দিকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, "সোনাগাছিতে যে ব্যবসাদাররা মাসে তিন থেকে চার বার আসতেন, তাদের টিকিও দেখা যাচ্ছে না। বিগত কয়েক মাসে একবারও এসেছেন কিনা সন্দেহ। ফ্লাইং কাস্টোমারও উবে গিয়েছে।" এরপরই সরস্বতী দাস, চামেলি সাহা, শেফালি দাস একসঙ্গে জোরালো কণ্ঠে বলেন, অনেকেরই তো পেশা চলে গিয়েছে, খেতে পারছেন না, এরপর ট্যাক্স চাপিয়ে দিলে বাঁচা দায় হয়ে পড়বে আমাদের। এখন প্রশ্ন, এই দাবি কী আদৌ পৌঁছবে প্রধানমন্ত্রীর কানে? সরকার যৌনকর্মীদের রোজগারের ঘাটতি এবং কর ছাড়ের বিষয়ে আদৌ কিছু ভাববে? 
উত্তর দেবে কে?