`হাত বাঁধা`য় ক্ষোভ, সরতে চাইলেন ইয়েচুরি
কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ভোটাভুটিতে কারাট লবির কাছে হার ইয়েচুরি লবির।
মৌমিতা চক্রবর্তী
কংগ্রেসের হাত ধরা নিয়ে আবারও কেরল লাইনের কাছে ধাক্কা খেল বঙ্গ ব্রিগেড। কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভোটাভুটিতে হার হল ইয়েচুরি লবির। সীতারাম ইয়েচুরি দিন কয়েক আগেই বলেছেন, বিজেপিকে হারানোই অগ্রাধিকার।
পশ্চিমবঙ্গে বামেদের অবস্থায় শোচনীয়। প্রতিটি নির্বাচনে নিয়ম করে ধস নামছে ভোটব্যাঙ্কে। বাম ভোটে থাবা বসিয়ে উঠে আসছে বিজেপি। মুকুল রায়ের মতো নেতাকে দলে এনে চমক দিয়েছে পদ্মশিবির। এই পরিস্থিতিতে বামেদের ঘুরে দাঁড়াতে হলে কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা করা সময়ের দাবি বলেই মত সিপিএমের রাজ্য নেতাদের। যদিও রাজ্য সংগঠনে জোটের বিরোধী বর্ধমান ও হাওড়ার নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন- আপের ২০ বিধায়কের বিধানসভার সদস্যপদ খারিজ করলেন রাষ্ট্রপতি
২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনে 'ধরি মাছ না ছুঁই পানি' কৌশলে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেছিল সিপিএম। আনুষ্ঠানিকভাবে জোট না হলেও 'হাত' ধরেছিলেন বাম নেতারা। সেই জোটকেই দলের শিলমোহর দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাইছেন বাম নেতারা। সবং উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের জোট হয়নি। উলুবেড়িয়া লোকসভা ও নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও আলাদা প্রার্থী দিয়েছে দুই দল। অথচ জোট হলে সিপিএম লাভবান হত বলে মত আলিমুদ্দিনের।
কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ইয়েচুরি জোট-প্রস্তাব নিয়ে ভোটাভুটি চান কেরলের নেতারা। ভোটাভুটিতে যেতে চায়নি বেঙ্গল লাইন। প্রত্যাশিতভাবেই ভোটাভুটিতে ৫৫-৩১ ভোটে হেরে গিয়েছেন ইয়েচুরিরা। সূত্রের খবর, ভোটাভুটির ফল দেখার পর সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে সরে যেতে চান সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁর বক্তব্য, পদে থেকে আর লাভ নেই। তবে ইয়েচুরির মানভঞ্জন করেন বাংলার নেতারা।
তাহলে কি কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতার সম্ভাবনা একেবারে শেষ? সীতারাম ইয়েচুরির বক্তব্য, সিপিএমের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, দলের খসড়া এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এপ্রিলে পার্টি কংগ্রেসেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তার আগে খসড়া নিয়ে তৃণমূলস্তরের কর্মী ও সাধারণ মানুষের মতামত নেওয়ার অবকাশ থাকছে। খসড়াটি ওয়েবসাইটে আপলোড করা হবে।
আরও পড়ুন- গো সেবায় প্রশিক্ষণ শিবির এবার রাজ্যেও
কারাট শিবির অবশ্য তাদের অবস্থানে অনড়। তাদের বক্তব্য, কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনী সমঝোতা সম্ভব নয়। ইস্যুভিত্তিক যৌথ কর্মসূচি করা যেতে পারে। এর পাশাপাশি সিপিএমের অন্দরে প্রশ্ন উঠছে, জাতীয় রাজনীতিতে কাছাকাছি এসেছে তৃণমূল ও কংগ্রেস। একসঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন। ফলে ২০১৯ সালের আগে হাইকম্যান্ডের কী অবস্থান হবে, তা এখনই স্পষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। এই প্রেক্ষাপটে আগ বাড়িয়ে জোট করতে গেলে পরে মুখ পুড়তে পারে সিপিএমেরই। আরও একটা মতও উঠে আসছে, কেরলে বাম-কংগ্রেসের লড়াই। সেখানে কীভাবে পশ্চিমবঙ্গে আলাদা নীতি নিতে পারে দল?