কমলিকা সেনগুপ্ত: আমে দুধে মিশে গেল, আঁটি খেল গড়াগড়ি। শোভন-বৈশাখীর কালীঘাট-যাত্রায় চুম্বকে এটাই হতে চলেছে রাজ্য বিজেপির অবস্থা। মঙ্গলবার কালীঘাটে পা রাখলেন কানন। আর তাঁর সঙ্গে থাকলেন বৈশাখীও। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বিজেপির মায়া কাটিয়ে কানন কি তবে ফিরছেন তৃণমূলে? অন্তত সেটাই স্পষ্ট হচ্ছে মঙ্গলবারের ঘটনাক্রমে। দেবশ্রীকে নিয়ে শোভনের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্কের ফাটল এখনও জোড়া লাগেনি। জেপি নাড্ডার কর্মসূচি বা অমিত শাহের অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন শোভন-বৈশাখী। বিজেপি নেতৃত্বও জানতেন না তাঁরা কোথায় আছেন। মঙ্গলবার সেই শোভন-বৈশাখী প্রকট হলেন কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে। নিজের ভাইয়ের মতো শোভনকে স্নেহ করতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই দিদির কাছে ভাইফোঁটার দিন তাঁর উপস্থিতি নিশ্চিতভাবে তাত্পর্যপূর্ণ। 


দুপুর ২ টোয় কালীঘাটে পৌঁছন শোভন-বৈশাখী। পার্থ চট্টোপাধ্যায়-বৈশাখীর সাক্ষাতের একদিন পর ভাইফোঁটায় মমতার বাড়িতে তাঁদের আগমন যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী। নভেম্বরে শেষবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে নবান্নে দেখা করেছিলেন শোভন। তখনই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেন। মমতার বাড়িতে প্রথমে একটু আড়ষ্টতা ছিল শোভনের। কিন্তু পরে একেবারে পুরনো দিনে ফিরে গিয়েছেন। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রাজনৈতিক কথাবার্তা হয়নি। সূত্রের খবর, পুরনো দিদি-ভাইয়ের সম্পর্কে ভাটা পড়েনি। ফলে শোভনের ঘরে ফেরা এবার সময়ের অপেক্ষা। 



শোভন চট্টোপাধ্যায়কে বড় মুখে দলে টেনে তৃণমূলকে ধাক্কা দেওয়ার কৌশল নিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সেটা প্রথম থেকে ব্যুমেরাং হয়েছে। শোভন-বৈশাখীকে সামলাতে গিয়ে নাজেহাল দশা হয়েছে বিজেপির। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, শোভন তৃণমূলে ফিরলে বিড়ম্বনা বাড়বে বিজেপি। তাঁর বিরুদ্ধে আর নারদ কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলে আর আক্রমণ শানাতে পারবে না তারা। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও মুকুল রায় কিন্তু এটা নেহাতই সৌজন্য হিসেবেই দেখানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিজেপি সূত্রে খবর, পরবর্তী কৌশল নিয়ে দলের মধ্যেই শুরু হয়েছে আলোচনা।


রাজনৈতিক মহলের মতে, শোভন তৃণমূলে ফিরলে মুখ পুড়বে মুকুল-দিলীপের। তাঁরাই উদ্যোগ নিয়ে তাঁকে বরণ করেছিলেন বিজেপিতে। ভেবেছিলেন, তৃণমূলকে মস্ত ধাক্কা দেওয়া যাবে। কিন্তু সেটাই পর্যবসিত হতে চলেছে রাজনৈতিক হারাকিরিতে। বরং শোভন বিজেপিতে ২ মাস থাকায় লাভবান হতে চলেছে তৃণমূল। বিজেপির নারদ হাতিয়ার কার্যত ভোঁতা হয়ে গেল। নারদ নিয়ে বিজেপি সরব হলেই পাল্টা তৃণমূল বলার সুযোগ পেয়ে গেল, নারদ-অভিযুক্তকে তো নিয়েছিল বিজেপিই। বিজেপি থাকলে নারদ অভিযুক্ত কি সাধু হয়ে যাবেন? যেটা সারদাকাণ্ডে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে গেরুয়া শিবির। রাজনীতির প্রেক্ষাপটে দেখতে গেলে একের পর এক পুরসভা দখতে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে বিজেপি। এবার শোভনকেও ধরে রাখতে পারল না। ২০২১ সালের আগে জনমানসে তার প্রভাব নিশ্চিতভাবেই পড়বে। একটা প্রশ্ন তো উঠছেই, লোকসভা ভোটে ১৮টি আসনপ্রাপ্তির পরও বিজেপির সংগঠন পোক্ত হল না? দল ভাঙানোর খেলায় নেমে বিজেপিকে কি হাস্যস্পদ করে তুললেন নেতারা?                                        


আরও পড়ুন- কালীঘাটে কাননের কপালে ফোঁটা দিলেন দিদি, মুখ বাঁচাতে 'সৌজন্যে'র সাফাই দিলীপের