SSC Scam: প্রাথমিক নিয়োগে সিবিআই হানা, `কালীঘাটের কাকু`-সহ ছয় জায়গায় কেন্দ্রীয় সংস্থা
একইসঙ্গে ‘কালীঘাটের কাকু’-র বাড়িতেও সিবিআই আধিকারিকরা তল্লাশি চালাচ্ছে বৃহস্পতিবার। পার্থ চট্টাপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ আরও ব্যক্তি সন্তু গাঙ্গুলির বেহালার বাড়িতেও যায় সিবিআই। মুকুল রায় যখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সেই সময় প্রথমে তার বিরুদ্ধে রেলে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার মামলা করেছিলেন এই সন্তু গাঙ্গুলি।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে (SSC Scam) এবার একসঙ্গে ছয় জায়গায় হানা দিল সিবিআই (CBI)। বৃহস্পতিবার SSC নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রাক্তন আপ্ত সহায়ক বা অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি সুকান্ত আচার্যর নিউ বারাকপুরের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। এর আগে এই মামলায় তাঁকে আটক করেছিল ইডি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একাধিকবার উঠেছে তাঁর নাম। শিক্ষক নিয়োগে যে বেআইনি পরামর্শদাতা কমিটি গঠন করা হয়েছিল তার সদস্য ছিলেন এই সুকান্তবাবু। তাঁকে এর আগেও একাধিকবার জেরা করেছে ইডি ও সিবিআই।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অনুমান, তাঁর মাধ্যমেই টাকা পৌঁছত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে। একইসঙ্গে ‘কালীঘাটের কাকু’-র বাড়িতেও সিবিআই আধিকারিকরা তল্লাশি চালাচ্ছে। সুকান্ত আচার্যের পাশাপাশি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র বা 'কালিঘাটের কাকু'র বাড়িতেও বৃহস্পতিবার সাত সকালে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে ‘কালীঘাটের কাকু’ হিসেবেই তাঁর নাম প্রথম আসে তদন্তকারীদের সামনে। এই নাম প্রথম শোনা গিয়েছিল হুগলির যুব নেতা কুন্তল ঘোষের মুখে। সেখানেও সিবিআই টানা তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে খবর।
পার্থ চট্টাপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ আরও এক ব্যক্তি সন্তু গাঙ্গুলির বেহালার বাড়িতেও যায় সিবিআই। মুকুল রায় যখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন সেই সময় প্রথমে তাঁর বিরুদ্ধে রেলে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার মামলা করেছিলেন এই সন্তু গাঙ্গুলি। নিউটাউনের একশন এরিয়া ওয়ান-এর সিসি ব্লকের ১৯৩ নম্বর বাড়িতে একটি ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালায় সিবিআই। কেন্দ্রীয় বাহিনী সঙ্গে নিয়ে তল্লাশি করা হয়। তবে এটা কার ফ্ল্যাট তা এখনও জানা যায়নি।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ পার্থ সরকার ওরফে ভজার নাম বারবার উঠে এসেছে এর আগেও। সেই পার্থ সরকারের ফ্ল্যাটে সিবিআই তল্লাশি হয়েছে বৃহস্পতিবার। কলকাতার ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর এই পার্থ সরকার। অন্যদিকে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথম গোপন জবানবন্দি জমা পড়েছে। একাধিক বার আদালতে প্রশ্নের মুখে পড়ে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই একজনের গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করাল।
নাইসা-র এক আধিকারিকের গোপন জবান বন্দি করানো হয়েছে আদালতে। বুধবার আদালতে ওই ব্যক্তির গোপন জবান বন্দি করানোর জন্য আবেদন করে সিবিআই। আদালত মঞ্জুর করলে নাইসা-র আধিকারিকের গোপন জবানবন্দী রেকর্ড করানো হয় আদালতে। সম্প্রতি আদালতে কুন্তল ঘোষের বিরুদ্ধে জমা দেওয়া চার্জশিটে সুকান্ত, পার্থ সরকার সম্পর্কে কুন্তল জানায় যে গোপাল দলপতি তাঁকে জানিয়েছিল যে ওই তিন কোটি টাকা সুকান্ত আচার্য, তৃণমূলের কাউন্সিলর পার্থ সরকার (ভজা), পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ দীপক সরকার এবং প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায় নামে একজনের মাধ্যমে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
চার্জশিটে কুন্তলের বয়ান বলে উল্লেখ করে ইডির আরও দাবি, ২০১৭-২০১৮ সালে নিউটাউনের একটি হোটেলে কুন্তল নিজে পার্থ ঘনিষ্ঠ প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায় এবং গোপাল দলপতির হাতে ৪৫ লক্ষ টাকা নগদ দেন। এখানেই শেষ নয়, ইডির বয়ানে কুন্তলের আরও দাবি, ২০১৮ সালে তিনি পার্থ সরকার ঘনিষ্ঠ দীপক সরকারকে আরও দেড় কোটি টাকা দেন। তিনি পার্থ চট্টাপাধ্যায়ের বেহালার অফিসে বসতেন।
পাশাপাশি সেই চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের চাকরিতে নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে তাদের জন্য আগেভাগেই ইন্টারভিউ ব্যবস্থা করা হতো। টাকার এক্সটর্ট করার জন্য পার্থর নির্দেশে সেই ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করতেন শিক্ষা দফতরের শীর্ষ কর্তা, প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টাপাধ্যায়ের তৎকালীন আপ্ত সহায়ক সুকান্ত আযার্চ ও তৎকালীন ওএসডি প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়। কুন্তল ঘোষ বয়ানে এই তথ্য স্বীকার করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছিল চার্জশিটে এমনটাই দাবি ইডির।