DA, Dearness Allowance: ডিএ মামলায় জয়ের দিনই সরকারের বিরুদ্ধে `বড় ঘোষণা` কর্মচারীদের
DA, Dearness Allowance: `এরপর থেকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সার্বিক বিরোধিতার নীতি বজায় থাকবে। সরকারের সঙ্গে কোনওরকম সহযোগিতা আমরা করব না। দাবি আদায়ে দরকার হলে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করব।`
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ডিএ মামলায় হাইকোর্টে জয়ের পরই বড় হুঁশিয়ারি রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন নেতার। সাফ জানালেন, বকেয়া ডিএ আদায়ে সরকারের সঙ্গে আর কোনওরকম সহযোগিতা তাঁরা করবেন না। এবার থেকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সার্বিক বিরোধিতার নীতি নিয়েই চলবেন তাঁরা। চলতি বছর ২০ মে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ ৩ মাসের মধ্যে কেন্দ্রীয় হারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘ ভাতা মেটনোর নির্দেশ দেয়। এই নির্দেশ-ই পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য। কিন্তু আজ সেই মামলাটি খারিজ করে দিল বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তর ডিভিশন বেঞ্চ। আগের নির্দেশ অর্থাৎ ২০ মে-র সিঙ্গল বেঞ্চের বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় হারে অল ইন্ডিয়া কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স অনুসারে ২০০৯ সালের এপ্রিল মাস থেকে সমস্ত বকেয়া ভাতা পঞ্চম বেতন কমিশনের ৩৪ শতাংশ এবং ষষ্ঠ বেতন কমিশনের ৩৫ শতাংশ রাজ্য সরকারি কর্মীরা পাবে।
রায় ঘোষণার পর নিজেদের উচ্ছ্বাস চেপে রাখতে পারেনননি রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা। আদালতেই শুরু হয়ে যায় মিষ্টিমুখ। একে অন্যকে আবির মাখিয়ে দেন। কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ আইএনটিইউসি-র সভাপতি শ্যামল কুমার মিত্র বলেন,'এই রায় শোষিত রাজ্য় সরকারি কর্মীদের কলকাতা হাইকোর্টের পুজো উপহার।' এরপরই হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, 'এর আগে ২০ মে রায়ের পর আমরা রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছিলাম যে, আমরা সমস্তরকম সহযোগিতা করতে রাজি। আপনারা ডিএ মামলার রায় কার্যকর করুন। কিন্তু রাজ্য সরকার কর্মচারীদের সহযোগিতার মনোভাব বোঝেনি। তাই এরপর থেকে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সার্বিক বিরোধিতার নীতি বজায় থাকবে। সরকারের সঙ্গে কোনওরকম সহযোগিতা আমরা করব না।' একইসঙ্গে দাবি আদায়ে দরকার হলে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
অন্যদিকে, বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, 'ডিএ একজন সরকারি কর্মচারীর আইনসিদ্ধ অধিকার। এটা তাঁর প্রাপ্য। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার ও তৃণমূল কংগ্রেস মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। বকেয়া ডিএ মেটার জন্য সময়সীমা ছিল ৩ মাস। রাজ্য সরকার ৩ মাস ধরে অপেক্ষা করে থেকে, ঠিক সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে ডিভিশন বেঞ্চে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাল। পুরো বিষয়টি আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়ে সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে প্রতারণা করল। সরকার সময় নষ্ট করছে।'
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারের গালে একটা থাপ্পড় মেরে পাঠিয়ে দিয়েছে। ডিএ বাড়লে শুধু যে বেতন বাড়ে তাই নয়, সেই টাকা বাজারের মধ্যে ঘোরে। অন্য ব্যবসায়ীদের লাভ হয়। ফলে সার্বিকভাবে অর্থনীতির চাকাটা ঘুরতে থাকে।' তোপ দাগেন, 'রাজ্য সরকার কোনও নিয়ম-নীতি না মেনেই চলছে। প্রাপ্য পাওনা, ন্যায্য অধিকারকে পদদলিত করে শুধু লুঠপাট-পাচার আর তোলাবাজির সরকার চলছে। এটা কখনও মেনে নেওয়া যায় না।'
যদিও তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের বক্তব্য, 'বিষয়টি আদলতের বিচারধীন। ডিও না দেওয়ার কথা কখনও ভাবেনি সরকার। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সবসময়ই কর্মীদের পাশে ছিলেন।' প্রসঙ্গত, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ডিএ-তে ৩১ শতাংশের ফারাক ছিল রাজ্য সরকারের। রাজ্য সরকার ৩ মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ না মেটানোয়, ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলা দায়ের করেছে কর্মী সংগঠনগুলি। অন্যদিকে ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ভাবনা চিন্তা শুরু করে দিয়েছে রাজ্যও।