তন্ময় প্রামাণিক: দেশজুড়ে স্বাস্থ্যসঙ্কট চরমে। তবে তারমধ্যেও ইতিহাস গড়ল এসএসকেএম হাসপাতাল। শুধু ডাক্তারই নয়, চিকিত্সাকর্মী, ব্লাডব্যাঙ্কের কর্মীদের নিরলস চেষ্টায় সুস্থ হলেন ৩৮ বছরের যুবক! 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

যুবকের রক্তের গ্রুপ আমাদের চেনা চারটে থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। বিশ্বের অন্যতম বিরল 'বম্বে ব্লাড গ্রুপ'-এর রক্ত বইছে মন্টুর শরীরে! অস্ত্রোপচারের জন্য এই বিরল রক্ত আসবে কোথা থেকে? শেষমেশ রক্তের সন্ধান মিলল। হাসপাতালের কর্মীরা ডোনারের তালিকা মিলিয়ে জোগাড় করে এনেছেন রক্ত। রক্ত এসে পৌঁছল ভিনরাজ্য থেকেও।


আরও পড়ুন: 'হিংসাকেই নীতি বানিয়ে নিয়েছে... মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার অধিকার হারিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি'


বিরলতম রক্তের গ্রুপের এই রোগীর পা কাটা যায় আমফানের সময়। বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে গুরুতর হন আহত নোদাখালির বাসিন্দা ৩৮ বছরের মন্টু সরকার। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে শেষে এসএসকেএম হাসপাতালে যান। বাঁ পায়ের পচন আটকে এবং প্রাণ বাঁচাতে দ্রুত অস্ত্রোপচারের দরকার ছিল। 


রক্ত মিলছিল না। প্রায় মাস দেড়েক ধরে হাসপাতালে রোগীকে ভর্তি রেখে খুঁজে জোগাড় করা হয় ৩ ইউনিট বম্বে গ্রুপের রক্ত। সফল অস্ত্রোপচার শেষে এবার বাড়ি ফিরবেন মন্টু।


সরকারি হাসপাতাল সম্পর্কে মানুষের সার্বিক ধারণাগুলো আবারও পাল্টে দিল আরও একটা ঘটনা! তবে বম্বে ব্লাড গ্রুপের রক্ত জোগাড় করা যে আসলেই অসাধ্যসাধন, তা স্বীকার করছেন প্রবীণ চিকিত্সকও। বিরল রক্ত জোগাড় করে এনে রোগীর প্রাণ বাঁচিয়েছেন ডাক্তাররা। কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই, এমনটাই বলছেন খোদ মিন্টু। ডোনার এবং হাসপাতাল যৌথ উদ্যোগে এই জীবনদান সম্ভব হয়েছে। নজির গড়ল সরকারি হাসপাতাল।


আরও পড়ুন: 'দিলীপ ঘোষের লজ্জাজনক মন্তব্য বাংলার মানুষ ভুলবে না', বিজেপিকে বার্তা তৃণমূলের


অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসক সৌম্য গায়েন বলেন, "এই রোগীকে ছেড়ে দেওয়া হলে অবস্থার অবনতি হতে পারত। সেই কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম  যেভাবেই হোক ওই বিরলতম গ্রুপের রক্ত জোগাড় করে অস্ত্রোপচার করে তবে আমরা তাকে ছাড়ব। আপাতত আমরা খুশি যে সেটা আমরা সকলে মিলে সম্ভব করতে পেরেছি।" 


ব্লাড ব্যাঙ্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক প্রতীক দে বলছেন, "যে মুষ্টিমেয় হাতেগোনা কয়েকজন বম্বে ব্লাড গ্রুপের মানুষজন রয়েছেন, কয়েকটি এনজিও এবং প্রশাসন সকলের যৌথ উদ্যোগেই এই সাফল্য এসেছে।"


প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান গৌতম গুহ বলেন, "এটা আমাদের কারও একার কৃতিত্ব নয়। আমরা শুধু অস্ত্রোপচার করেছি। কিন্তু বম্বে গ্রুপের রক্ত সংগ্রহ করা না গেলে এটা সম্ভব হত না। সেটা করেছে আমাদের এসএসকেএম হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের চিকিৎসক-কর্মীরা। সুতরাং  সকলের যৌথ প্রচেষ্টায় এই সাফল্য মিলেছে। আমার ছাত্রজীবনে এবং শিক্ষক জীবনে বম্বে গ্রুপের ব্লাড রয়েছে এমন কোনও মানুষের অস্ত্রোপচার হতে দেখিনি, অস্ত্রপচার করিওনি। এটাই প্রথম।"