JU Student Death: স্বপ্নদীপের ডায়েরি থেকে উদ্ধার চিঠি; মৃত্যুর দিন তা লিখল কে, তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা!
JU Student Death: সরকারি আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, স্বপ্নদীপের ডায়েরির একশো একান্ন নম্বর পাতায় একটি চিঠি লেখা রয়েছে। সেই চিঠি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জোর করে ওই চিঠি লেখানো হয়েছে। ডায়েরির একটা পাতাভর্তি সিগনেচার করিয়ে নেওয়া হয়েছে
শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায় ও অর্নবাংশু নিয়োগী: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিহত ছাত্র স্বপ্নদীপ কুন্ডুর নামে চিঠি লিখে তদন্তের অভিমুখ অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে? স্বপ্নদীপের মৃত্যুর তদন্তে এবার নতুন মোড়। মৃত ছাত্রের ডায়েরির পাতা থেকে উদ্ধার হওয়া একটি চিঠি নিয়ে এবার উঠছে একাধিক প্রশ্ন। ডিনকে লেখা সেই চিঠিতে ভয় দেখানোর অভিযোগ উঠে আসছে। চিঠিটিতে তারিখ হিসেবে ১০ আগস্ট উল্লেখ থাকলেও স্বপ্নদীপ আসলে হস্টেলের তিনতল থেকে পড়ে যায় ৯ তারিখ রাতে। পরদিন তাঁর মৃত্যু হয়। পড়ে যাওয়া থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তার সংজ্ঞা ফেরেনি। তাহলে ওই চিঠি লিখল কে?
আরও পড়ুন- যাদবপুরকাণ্ডে গ্রেফতার আরও দুই, নজরে আরও বেশ কয়েকজন
স্বপ্নদীপের ডায়েরির পাতায় লেখা ওই চিঠিটি লেখা হয়েছে ডিন অব স্টুডেন্টসকে। সেখানে স্বপ্নদীপ লিখছে তাকে হস্টেলে থাকতে নিষেধ করা হচ্ছে। এক ছাত্রের নাম করে স্বপ্নদীপ লিখছে সে তাকে হস্টেলে থাকতে নিষেধ করছে। কারণ হস্টেলে র্যাগিং হয়। ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে চিঠিতে। কিন্তু গোলমাল অন্য জায়গায়। চিঠিতে তারিখ দেওয়া হয়েছে ১০ আগস্ট। এটা কীভাবে সম্ভব? কারণ তার আগের দিন রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ স্বপ্নদীপ হস্টেল থেকে পড়ে গিয়েছিল। পরদিন অর্থাত্ ১০ আগস্ট তার মৃত্যু হয়।
চিঠিতে উঠে এসেছে, এক ছাত্র নাকি তাকে ভয় দেখিয়েছিল? যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তার বক্তব্য, গত ৭ আগস্ট স্বপ্নদীপের সঙ্গে তার ক্লাসে দেখা হয়েছিল। ক্লাসেই তার সঙ্গে স্বপ্নদীপের কথা হয়। স্বপ্নদীপ জানায় মেইন হোস্টলে সে থাকে। সেই কথা শুনে অভিযুক্ত ছাত্রটি বলে, হস্টেলে যখন থাকো তখন একসঙ্গে থেকো। কারণ মেইন হস্টেলে বহুবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে। ওই কথা একান্তে হয়নি, ক্লাসে অনেকের সামনেই তা হয়েছে। এখন প্রশ্ন ওই কথা যদি হয়েও থাকে তাহলে স্বপ্নদীপ ৮ ও ৯ তারিখ কাউকে কিছু জানাল না? এর মধ্যে বাড়িতে ফোন করে বাবাকেও ক্লাস সম্পর্কে, বিশ্ববিদ্যালের পরিবেশ সম্পর্কে অনেক কিছুই জানিয়েছে। কিন্তু এরকম একটি কথা সে বাড়িতে বলল না? আর যদিওবা তা লিখিল তাও তা মৃত্যুর পরদিন? এখানেই প্রশ্ন উঠছে। তাহলে কি তদন্তের মোড় অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে? এর পেছনে কে? যারা ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের মধ্যে কেউ কি ওই চিঠি লিখেছে? স্বপ্নদীপের নাম করে একজনের উপরে দোষ চাপিয়ে চিঠি লেখা হয়েছে? এর পেছনে উদ্দেশ্য কী? যিনি ওই চিঠিটি লিখছেন তিনি কি নিজেকে আড়াল করার জন্য ওই চিঠি লিখেছেন?
এদিকে, আজ সরকারি আইনজীবী আদালতে জানিয়েছেন, স্বপ্নদীপের ডায়েরির ১৫১ নম্বর পাতায় একটি চিঠি লেখা রয়েছে। সেই চিঠি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জোর করে ওই চিঠি লেখানো হয়েছে। ডায়েরির একটা পাতাভর্তি সিগনেচার করিয়ে নেওয়া হয়েছে। অনেকেই এক সঙ্গে জড়িত। এই ঘটনার শিকড়ে যাতে গেলে আরও একটু সময় লাগবে। হস্টেলের রাঁধুনির বক্তব্যেও উঠে এসেছে র্যাগিংয়ের কথা। তিনি পুলিসকে জানিয়েছেন কীভাবে ফার্স ইয়ারের পড়ুয়াদের উপরে অত্যাচার করা হতো। একজন ছাত্রও বলেছেন, সৌরভ চৌধুরীর সুপারিশেই মনোতোষ ও দীপশেখর হস্টেলে আসে। জোর করে চিঠি লেখানোর ক্ষেত্রে এদের ভূমিকা ছিল।
চিঠিটি স্বপ্নদীপের বাবাকে দেখানো হয় তিনটি ভাগে। একটি সাক্ষরের অংশ, দ্বিতীয়টি মাঝের একটি অংশ এবং তৃতীয়টি চিঠির অন্য একটি অংশ। সেই সবকটি অংশ দেখেই স্বপ্নদীপের বাবার দাবি, ওই চিঠির হাতের লেখা তার ছেলের নয়। জি ২৪ ঘণ্টাকে তিনি বলেন, এই হাতের লেখা আমার ছেলের নয়। এই হাতের লেখা ওইসব অপরাধীদের। ওরা নকল করে এসব করতে পারে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, স্বপ্নদীপের নামে চিঠি লিখে কি গোটা ঘটনার মোড় ঘোরানোর চেষ্টা হচ্ছে? এর পেছনে আসলে কে?