বিধানসভায় পাশ হল `টেনেন্ট বিল`
শহরের বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে আসছে জোরালো আইন। আজ বিল পাশ হল বিধানসভায়। সংস্কারের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে নোটিস দেওয়া হবে বাড়ির মালিককে। সংস্কারের কাজে হাত লাগালে দ্বিগুণ পরিমাণ ফ্লোর এরিয়া পাবেন মালিক। সংস্কার না করলে কর্পোরেশন জমি অধিগ্রহণ করে তৃতীয়পক্ষকে দিয়ে সংস্কার করাবে। বিরোধীদের দাবি, এক্ষেত্রে প্রোমোটারদের হাতই শক্ত হবে। পাশাপাশি তাদের প্রশ্ন, সংস্কারের সময় ভাড়াটিয়ারা কোথায় থাকবেন?
ব্যুরো: শহরের বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে আসছে জোরালো আইন। আজ বিল পাশ হল বিধানসভায়। সংস্কারের জন্য নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে নোটিস দেওয়া হবে বাড়ির মালিককে। সংস্কারের কাজে হাত লাগালে দ্বিগুণ পরিমাণ ফ্লোর এরিয়া পাবেন মালিক। সংস্কার না করলে কর্পোরেশন জমি অধিগ্রহণ করে তৃতীয়পক্ষকে দিয়ে সংস্কার করাবে। বিরোধীদের দাবি, এক্ষেত্রে প্রোমোটারদের হাতই শক্ত হবে। পাশাপাশি তাদের প্রশ্ন, সংস্কারের সময় ভাড়াটিয়ারা কোথায় থাকবেন?
শহরের বুকে দাঁড়িয়ে একাধিক বিপজ্জনক বাড়ি। সেই বাড়ি ভেঙে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। অথচ মালিক-ভাড়াটিয়া টানাপোড়েনে থমকে গেছে সংস্কারের কাজ। বিপদের আশঙ্কা বাড়ছে। কলকাতা শহরে প্রায় ৩০০০ বাড়ি বিপজ্জনক। তার মধ্যে পুরসভার পক্ষ থেকে ১২০০-র বেশি বাড়ি চিহ্নিত করে নোটিস সেঁটে দেওয়া হয়েছে। এই সব বাড়ি দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু গুটিকয় বাড়ির মালিক তাতে সাড়া দিলেও অধিকাংশ বাড়িই একই অবস্থায় দাঁড়িয়ে। কী ধরনের চরিত্র বাড়িগুলির?
কিছু বাড়ির অনেক মালিক। শরিকি বিবাদের কারণে সংস্কারের কাজ থমকে। কিছু বাড়ির মালিক একজন। কিন্তু অসংখ্য ভাড়াটিয়া। নামমাত্র ভাড়া পান মালিক। ফলে এখন ভাড়াটিয়ারাই মালিক। কিছু ঐতিহ্যশালী বাড়ি কোনও না কোনও ট্রাস্টের হাতে। একটা বড় অংশের বাড়ির মালিকানা নিয়ে প্রচুর আইনি জটিলতা। সরকারি মতে, এই সব বাড়িতে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার মানুষ থাকেন। কিন্তু বেসরকারি মতে, সেই সংখ্যাটা ৫-৬ লাখ। যে কোনও সময় বাড়ি ভেঙে পড়লে মৃত্যু নিশ্চিত। আগুন লাগলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা। বাড়ি ভেঙে যে কোনও সময় আহত হতে পারেন পথচারীরা। এই পরিস্থিতিতে একটি আইন আনে সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কোনওমতেই ভাড়াটিয়াদের উচ্ছেদ করা হবে না। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। এই পরিস্থিতিতে আরও জোরালো আইন আনা হল বিধানসভায়। আইনে বলা হয়েছে, নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দিয়ে সংস্কারের জন্য বাড়িগুলিকে আইনি নোটিস দেওয়া হবে। সংস্কারের কাজে হাত লাগালে দ্বিগুণ পরিমাণ ফ্লোর এরিয়া পাবেন বাড়ির মালিক। নির্দিষ্ট সময়ে সংস্কারের কাজে হাত না দিলে কর্পোরেশন ওই জমি অধিগ্রহণ করে তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে সংস্কার করাবে।
এখানেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা?
এই সব বাড়িগুলি সংস্কারের জন্য আদৌ কি পরিকাঠামো রয়েছে পুরসভার?
সংস্কারের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত ভাড়াটিয়ারা কোথায় থাকবেন?
তাঁরা শেষ পর্যন্ত উচ্ছেদ হয়ে যাবেন না তো?
কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে কি কর্পোরেশন হস্তক্ষেপ করতে পারে?
আইনের স্বপক্ষে সরকারের যুক্তি, বিপজ্জনক এই সব বাড়ি ভেঙে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আগুন লেগে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে নিজের সম্পত্তি হলেও বাড়ি সংস্কার করতেই হবে।