লাভের গুড় যেন একা না খায় বিজেপি! ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্য মমতাকে ধন্যবাদ জানিয়ে পোস্টার
মেট্রো স্টেশন থেকে রাস্তায়, জায়গায় জায়গায় টাঙানো হয়েছে এই পোস্টার।
নিজস্ব প্রতিবেদন : মেট্রো তুমি কার? ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নিয়ে নতুন করে ফের দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি দুই শিবিরের মধ্যে। সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত প্রতিটি স্টেশনে ও বিধাননগরের বেশকিছু জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া পোস্টার টাঙানো হয়েছে। আর সেই পোস্টার ঘিরেই ফের নতুন করে উসকে উঠেছে বিতর্ক। পোস্টারগুলিতে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্য ধন্যবাদ জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিধাননগর নাগরিকবৃন্দ ও বিধাননগর ক্লাব সমন্বয় কমিটির নামে লাগানো সেই পোস্টারে লেখা, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের পরিকল্পনা, অনুমোদন ও রাজ্য সরকার জমি দিয়ে সহায়তা করার জন্য।"
সপ্তাহখানেক হয়ে গিয়েছে, রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল এসে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধন করে গিয়েছেন। তাহলে হঠাৎ এখন পোস্টার কেন? নতুন করে পোস্টার টাঙানোর অর্থ কী? এর পিছনে ওয়াকিবহল মহল আমন্ত্রণ বিতর্কের ছায়া-ই খুঁজে পাচ্ছেন। প্রসঙ্গত, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ না জানানো-জানানো ইস্যুতে বিতর্ক দানা বাঁধে। শুধুমাত্র স্থানীয় সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, বিধায়ক সুজিত বসু এবং কৃষ্ণা চক্রবর্তীকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। কিন্তু ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী, পুরমন্ত্রী, মুখ্যসচিব কাউকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে দাবি করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কট করে রাজ্য।
পরে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডাক 'না পাওয়া' নিয়ে দুঃখপ্রকাশও করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, "তখন ইউপিএ সরকারে ছিলাম। কষ্ট লাগে। চোখের জল ফেলতে হয়েছিল প্রকল্পের টাকা জোগাড় করতে। আমার ছবির দরকার ছিল না। একটা খবর তো দিতে পারত।" তৃণমূল নেত্রীর এই অভিযোগ-অনুযোগের পরই বাবুল সুপ্রিয় পাল্টা তোপ দাগেন, 'মিথ্যে কথা বলছেন মুখ্যমন্ত্রী।' সবমিলিয়ে তুঙ্গে ওঠে তরজা। এরপরই এবার সামনে এল এই পোস্টার। মানুষ যাতে সঠিক তথ্য জানতে পারে, তাই পাল্টা কৌশল নিল তৃণমূল শিবির।
আরও পড়ুন, পুরভোটে বিজেপির 'মেয়র মুখ' শোভন? জল্পনা উসকে শহর ছয়লাপ পোস্টারে
উল্লেখ্য, মেট্রো যে তাদের উদ্যোগে হয়েছে, বিজেপি ইতিমধ্যেই দলের ফেসবুক পেজে সেই মর্মে প্রচার শুরু করে দিয়েছে। আর তারপরই পোস্টার সাঁটিয়ে পাল্টা প্রচারে নামল শাসকশিবির, যদিও পোস্টার পড়েছে বিধাননগর নাগরিকবৃন্দ ও বিধাননগর ক্লাব সমন্বয় কমিটির নামে। বিজেপি যাতে লাভের গুড় একা না খেয়ে যায়, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও অবদান আছে, সেকথা মানুষের মধ্যে ব্যাপকভাবে তুলে ধরার স্বার্থেই তৃণমূল শিবির পোস্টার টাঙিয়ে পাল্টা প্রচারের কৌশল নিয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। এ প্রসঙ্গে সুজিত বসু বলেন, "কেউ হুট করে এসে মেট্রো উদ্বোধন করে চলে গেলে হবে না। মেট্রো ভাবনা সবকিছু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই নাগরিকরা এই পোস্টার লাগিয়েছে।"