নিজস্ব প্রতিবেদন : সিঁথিকাণ্ডে নাটকীয় মোড়। নিখোঁজ সিঁথি থানায় পুলিসের 'মারধর'-এ প্রৌঢ়ের মৃত্যুর ঘটনায় একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী আশুরা বিবি। আশুরা বিবি এখন কোথায়? এই প্রশ্নের কোনও উত্তর নেই এলাকাবাসী বা রাত্রিবাসের বাকি আবাসিকদের কাছে। এই ঘটনায় নতুন করে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

জানা গিয়েছে, এগারো মাস আগে আশুরা বিবি ৫ শিশু সন্তানকে নিয়ে পাইকপাড়ার রাত্রিবাসে এসে ওঠেন। এখন ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা আশুরা বিবি। স্বামী রিকশাচালক। আর আশুরা বিবি নিজে কাগজ কুড়িয়ে দিন গুজরান করেন। সেদিন সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ সিঁথি থানার ২ পুলিসকর্মী রাত্রিবাসে আসেন ও তাঁকে থানায় নিয়ে যান। তারপর রাত ১০টা নাগাদ রাত্রিবাসে ফেরত আসেন আশুরা। এরপর মঙ্গলবার সকালে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার কথা বলে বের হন আশুরা বিবি। কিন্তু তারপর থেকে আর তাঁর কোনও খোঁজ নেই।


আবাসিকদের কথায়, সোমবার রাতে শরীরে যন্ত্রণা নিয়ে কোকাতে কোকাতে ফেরেন আশুরা। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে আশুরা বিবি জানান, থানায় তাঁকে বেধড়ক পেটানো হয়েছে। ইলেক্ট্রিকের ডান্ডা দিয়ে মারা হয়েছে। কাগজকুড়ানি হলেও আশুরা বিবির কোনওদিন চুরির স্বভাব ছিল না বলে দাবি করেছেন আবাসিকরা। তাঁদের স্পষ্ট দাবি, যে অভিযোগে পুলিস নিয়ে গিয়েছিল, তাও সঠিক নয়।


প্রসঙ্গত, আশুরা বিবির কাছ থেকে চোরাই মাল কেনার অভিযোগে সোমবার দুপুরে বাড়ি থেকে রাজকুমার সাউকে তুলে নিয়ে যায় সিঁথি থানার পুলিস। অভিযোগ, তারপর থানার লকআপে মারধরের চোটে মৃত্যু হয় রাজকুমার সাউয়ের। সেই ঘটনা ঘিরে সোমবার রাত থেকে তোলপাড় সব মহল। সেদিনের ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী আশুরা বিবি। পুলিস মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে হৃদরোগে রাজকুমার সাউয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করলেও, আশুরা বিবি জানান যে, "দাস বাবু (এসআই সৌমেন্দ্রনাথ দাস) আমাকে জোর করে চোর অপবাদ দিয়ে বয়ান লিখতে বলে। রাজকুমারের নাম বলতে বলে। তিনি না করলে ইলেকট্রিক শকও দেওয়া হয়।"


আরও পড়ুন, পুলিসের মারে প্রৌঢ়ের মৃত্যু, সিঁথিকাণ্ডে সার্জেন্ট সহ ২ SI-এর বিরুদ্ধে শুরু বিভাগীয় তদন্ত


এখন থানায় পুলিসের 'মারধরের' একমাত্র সাক্ষীর নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় জোর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এদিন রাত্রিবাসে গিয়ে দেখা যায় বিছানা অগোছালো হয়ে পড়ে আছে। আশুরার দুই সন্তান রাত্রিবাসেই আছে। মায়ের খোঁজ করছে তারা। অন্যদিকে, এদিন শিয়ালদা আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে রাজকুমার সাউয়ের পরিবারের ৪ জন সদস্যের বয়ান রেকর্ড করা হয়। উল্লেখ্য, কালকেই সিঁথি থানার ঘটনায় তদন্তভার হাতে নিয়েছে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখা। তদন্তের দায়িত্বে আছেন অতিরিক্ত কমিশনার দময়ন্তী সেন।