পুলিসের মারে প্রৌঢ়ের মৃত্যু, সিঁথিকাণ্ডে সার্জেন্ট সহ ২ SI-এর বিরুদ্ধে শুরু বিভাগীয় তদন্ত

পরিবারের অভিযোগ, "থানায় আটকে রাজকুমারকে বিদ্যুতের শক দেওয়া হয়েছে। এরপর সাড়ে ৫টা নাগাদ থানার লকআপেই মারা যান তিনি। গোপনে তাঁর দেহ সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।"

Reported By: সুকান্ত মুখোপাধ্যায় | Edited By: সুদেষ্ণা পাল | Updated By: Feb 11, 2020, 09:47 PM IST
পুলিসের মারে প্রৌঢ়ের মৃত্যু, সিঁথিকাণ্ডে সার্জেন্ট সহ ২ SI-এর বিরুদ্ধে শুরু বিভাগীয় তদন্ত

নিজস্ব প্রতিবেদন : সিঁথি কাণ্ডে ৩ জন পুলিসকর্মীর বিরুদ্ধে FIR দায়ের করেছিলেন মৃতের ভাই। এসআই সৌমেন্দ্রনাথ দাস, এসআই অরিন্দম দাস, সার্জেন্ট চিন্ময় মোহান্তির নামে দায়ের হয়েছিল FIR। অভিযুক্ত এই ৩ পুলিসকর্মীকেই ক্লোজ করা হল। একইসঙ্গে তাঁদের বিরুদ্ধে শুরু হল বিভাগীয় তদন্তও। এই ঘটনায় তদন্তভার হাতে নিয়েছে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখা। থানায় ভাঙচুর এবং থানার ভিতরের গন্ডগোলের ঘটনায় ২টো পৃথক অভিযোগ দায়ের হয়েছে। আজ অন ক্যামেরা মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি, সিঁথির ঘটনায় সম্পূর্ণ তদন্তপ্রক্রিয়াটি-ই হবে হাইকোর্টের নজরদারিতে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ময়নাতদন্তের এই রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে ও মানবাধিকার কমিশনে।

ঘটনার সূত্রপাত, সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ। চুরির অভিযোগে সিঁথি থানায় নিয়ে আসা হয় কাগজকুড়ানি আশুরা বিবি ও ৫২ বছরের রাজকুমার সাউকে। রাজকুমারের পরিবারের অভিযোগ, থানায় মারধর করা হয় তাঁকে। পুলিসের মারেই মৃত্যু হয় রাজকুমার সাউয়ের। এরপর সন্ধে ৬ টা নাগাদ বাড়িতে রাজকুমারের মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়। অন্যদিকে পুলিসের বক্তব্য অনুযায়ী, ৫৩ বছরের রাজকুমার সাউকে রুটিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সকাল ১১টায় সিঁথি থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাদের দাবি, আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। হৃদরোগ ছিল। ছাঁট লোহার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর সন্ধে ৬টা নাগাদ পুলিস-ই তাকে আর.জি.কর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হলেও শেষরক্ষা হয়নি।

যদিও পুলিসের সাফাই উড়িয়ে মৃতের পরিবারের দাবি, সুস্থ ছিলেন রাজকুমার। এমনকি হৃদরোগের কথাও জানা ছিল না কারও। পুলিসের মারেই মৃত্যু হয়েছে বলে তাঁদের স্পষ্ট অভিযোগ। পরিবারের অভিযোগ, "থানায় আটকে রাজকুমারকে বিদ্যুতের শক দেওয়া হয়েছে। এরপর সাড়ে ৫টা নাগাদ থানার লকআপেই মারা যান তিনি। গোপনে তাঁর দেহ সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।" রাজকুমারের সঙ্গে আশুরা বিবি নামে ওই কাগজকুড়ানিকেও বেধড়ক পেটানো হয় বলে অভিযোগ। ওই কাগজকুড়ানিরও দাবি, তাঁর সামনেই পুলিসের মারে মৃত্যু হয় রাজকুমার সাউয়ের।

আরও পড়ুন, মমতার ফর্মুলাতেই নাকি দিল্লি বিজয় আপের! নেত্রীর হুঙ্কার, 'BJP-র শেষ কলস ডুববে একুশে'

আরও পড়ুন, সম্পত্তি হাতাতে লোহার রড দিয়ে দাদুর মাথা ফাটিয়ে ঝুলিয়ে দিল নাতি, শিয়রে আরও ২ খুনের অভিযোগ

সিঁথি থানার এই ঘটনায় পুলিস ও পরিবারের ভিন্ন ভিন্ন দাবিতে এখনও উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে এলাকা। পিটিয়ে খুনের অভিযোগে এদিন সিঁথি থানা ঘেরাও কর্মসূচির কথা ঘোষণা করে বিজেপি। তবে অনুমতি না মেলায় শেষে বাগবাজার ঘাটে জমায়েত করেন বিজেপি কর্মীরা। বিজেপির সেই মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার বেঁধে যায় বাগবাজারে। শুরু হয়ে যায় বিজেপি-পুলিস খণ্ডযুদ্ধ। অন্যদিকে এখনও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসেনি। তা হাতে এলেই, ঠিক কীভাবে রাজকুমার সাউয়ের মৃত্যু হয়েছে তা জানা যাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

.