নিজস্ব প্রতিবেদন: সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় প্রত্যাশিতভাবে বিধানসভায় ভোটাভুটিতে পাশ হয়ে গেল বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন ১৯৬ জন। ৬৯টি বিরোধী ভোট পড়েছে। বিধান পরিষদ গঠনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিজেপি। সরকারের তরফে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) যুক্তি দেন,'একটা সময় সরকারে থেকে বিধান পরিষদের সওয়াল করেছিলেন। এখন বিরোধী আসনে বসে বিরোধিতা কেন?'  


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক এবং পড়শি বিহারে বিধান পরিষদ রয়েছে। বাংলায় তা অবলুপ্ত হয় ১৯৬৯ সালের ২১ মার্চ। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর বিধান পরিষদ গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। তবে তা এগোয়নি। এবার ওই প্রস্তাবে বুধবার ভোটাভুটিতে অনুমোদন পড়ল বিধানসভায়। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ প্রশ্ন তোলেন,'করোনা পরিস্থিতিতে বিধান পরিষদ গঠন করে বাড়তি খরচের কী দরকার? বিধায়কদের উপরে কি ভরসা নেই?'


স্বাধীনতার পর এই প্রথম বিধানসভায় বাম-কংগ্রেসের কোনও প্রতিনিধি নেই। সেই প্রসঙ্গ তুলে উপ-মুখ্য সচেতক তাপস রায় বলেন,'বিধান পরিষদের গুরুত্ব অনেকেই বোঝেন না। বিধানসভায় বাম ও কংগ্রেস শূন্য। গণতন্ত্রের পক্ষে তা কাম্য নয়। এক ব্যক্তি এক নেতা থাকা উচিত নয়।'  


শাসকের এই যুক্তিকে সমর্থন করেননি সংযুক্ত মোর্চার একমাত্র বিধায়ক, ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টের নওশাদ সিদ্দিকী। তিনি বলেন, 'বিধান পরিষদ থাকা মানে সাদা হাতি পোষা।'     


পরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র (Surjya Kanta Mishra) বিবৃতি দিয়ে জানান, 'ভারতের মত বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশে আঞ্চলিক প্রতিনিধিত্ব সুনিশ্চিত করতে জাতীয় স্তরে আইনসভার উচ্চকক্ষ বা রাজ্যসভা থাকার দরকার আছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে রাজ্যস্তরে আইনসভার উচ্চকক্ষের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। ৬টি ছাড়া প্রায় সব রাজ্যই বিধান পরিষদ তুলে দিয়েছে।'           



অতিমারিকালে এত খরচের দরকার নেই বলেও মনে করেন সূর্যকান্ত (Surjya Kanta Mishra)। তাঁর কথায়,'২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল সরকার গঠিত হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী বিধান পরিষদ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু তখন বিধানসভায় বামফ্রন্টের যুক্তিপূর্ণ বিরোধিতার মুখে তিনি পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছিলেন। এখন ফের কোনও যুক্তি ছাড়াই বিধান পরিষদ ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব পেশ করে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে পাস করালেন। এই মহামারির বিপদের সময় সরকার মানুষকে ওষুধ, অক্সিজেন, চিকিৎসা পরিষেবা দিতে পারছে না। হাসপাতালে শয্যা ও পরিকাঠামোর ব্যবস্থা করতে পারছে না। শিক্ষাব্যবস্থা বিপর্যস্ত, মানুষের রুটিরুজির ব্যবস্থা করতে সরকার ব্যর্থ। তৃণমূল সরকার এই সব সমস্যার সমাধানকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বদলে শাসকদলের কয়েকজনকে পিছনের দরজা দিয়ে পুনর্বাসন দিতে বিধান পরিষদ গঠনের নামে সাদা হাতি পোষার ব্যবস্থা করতে চাইছে, যার বিশাল খরচ জনগণের ঘাড়ে চাপবে। তাই আমরা বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাবের বিরোধিতা করছি এবং এই পরিকল্পনা বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি।'


আরও পড়ুন- একুশের 'খেলা হবে' এবার দিবস, পালিত হবে রাজ্যজুড়ে, ঘোষণা Mamata-র