নিজস্ব প্রতিবেদন: ''মায়ের শরীর খারাপ। অর্থের প্রয়োজন। ভাল চিকিৎসা করানোর কথা মাথায় ঘুরছিল। তাই চ্যালেঞ্জ নিয়ে উদ্ধার করতে নেমেছিলাম''।  অসাধ্য সাধন করে ঘরে ফেরার পর মাকে পাশে নিয়ে অভাবের কথা শোনালেন পাতকুয়ো খনন কর্মী মেঘনাথ সর্দার।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বাড়ি বাঁশদ্রোণীর ব্রহ্মপুর সর্দার পাড়া। ১০/১০ ফুটের একটি ঘর। বৃদ্ধা মা, স্ত্রী এবং ২টি ছোট ছেলে। খাটে রাখা মন্ত্রীর দেওয়া ফুলের স্তবক। পাড়ায় সবার মুখেই এখন মেঘনাথ। একটাই কথা, ''দমকল বিপর্যয় মোকাবিলা দল পারল না। ও করে দেখাল''।  সত্যিই তো গতকাল, শুক্রবার দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা চালানোর পরেও দেহ উদ্ধার করতে পারলেন না প্রশিক্ষিতরা। কিন্তু মাত্র এক ঘন্টার মধ্যেই সেই কাজটা করে দেখালেন মেঘনাথ। সঙ্গে ছিলেন দু’জন সহকর্মী। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে কুয়ো খনন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা মেঘনাথ বলেন, '' নীচে যখন ওই দেহটির সঙ্গে আমার পায়ের সঙ্গে স্পর্শ হয়, একটু ভয় লেগেছিল। তারপর দড়ি দিয়ে দেহটা বেঁধে দিয়ে সিগন্যাল দিলাম।''


পরিবারের দাবি, এই কাজে সব সময় চিন্তা থাকে। এবার সরকার যে চাকরিটা দেবে তাতে চিন্তা খানিকটা কমবে। সমাজে একটা সম্মান পাবেন তাঁরা।


শুক্রবার দুপুরে স্নান করতে গিয়ে উধাও হয়ে যান বাঁশদ্রোণীর সোনালি পার্কের বাসিন্দা বছর তিরিশে বাপি সরকার। পরে বোঝা যায় যুবক কুয়োয় পড়ে গেছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিস এবং দমকল। কুয়োয় ডুবুরি নামিয়ে শুরু হয় উদ্ধার কাজ। পাম্প চালিয়ে জল বের করা শুরু করা হয়। প্রায় পঞ্চাশ ফুট গভীর পাতকুয়ো থেকে  যুবককে উদ্ধারে হাত লাগায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও। কুয়োর মধ্যেই যুবকের হদিশ মেলে। ডুবুরিরা উঠে এসে জানান,  কুয়োর নিচে কাদায় গেঁথে রয়েছে দেহ। রাত ৯টায় ডুবুরি নামিয়ে যুবকের দেহ দড়িতে বেঁধে ওপরে তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু সেখানেও বিপত্তি।  দড়ি আলগা হয়ে দেহ ফের পড়ে যায় কুয়োয়। 



রাত ১০টায় দমকল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় উদ্ধারকাজ শেষ। শনিবার সকাল থেকে ফের শুরু হবে উদ্ধারকাজ। উদ্ধারের বিলম্বে ক্ষোভ উগরে দেন পরিবার।রাতেই ঘটনাস্থলে যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। শনিবার সকাল ৬টা
কুয়ো থেকে পাম্প দিয়ে জল ছাঁচা হয়। সাড়ে ৭টা ডুবুরি নামলেন কুয়োয়। দেখা গেল কুয়োর ৩৭ ফুটের মাথায় কাদায় আটকে রয়েছে দেহ। দুর্গন্ধ আর ঘোলা জল থেকে দেহ তুলতে না পেরে উঠে আসেন ডুবুরি। সকাল ৮টা নামানো পাতকুয়ো খনন কর্মী মেঘনাথ সর্দ্দারকে। অক্সিজেন মাস্ক আর দড়ি নিয়ে কুয়োর মধ্যে নেমে যান কর্মী।জলে দেহ ডুবে থাকায় পাম্প দিয়ে আরও ১০ ফুট জল কমানো হয়। সকাল ৮.৫৫ মিনিট পায়ে দড়ি বেধে কপিকলের সাহায্যে দেহ তোলা হয় যুবকের। 


আরও পড়ুন- নাগপুর থেকে অসমের শাসন চালাতে দেব না, হুঙ্কার রাহুলের