`বিরোধী হলেও ওনার বক্তব্য শুনতাম...চরম ক্ষতি হয়ে গেল`
`শ্যামলদার মৃত্যু মানে একজন যোদ্ধার মৃত্যু।
নিজস্ব প্রতিবেদন : লড়াই শেষ। প্রয়াত বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা শ্যাম চক্রবর্তী। কোভিড আক্রান্ত হয়ে বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তিনি। সেখানে এদিন দুপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর জীবনাবসান হয়। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বাংলার রাজনৈতিক মহল। গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
এক শোকাবর্তায় মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহনমন্ত্রী সিপিআই(এম) নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর মৃত্যুতে আমি গভীর শোকপ্রকাশ করছি। তিনি আজ কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। শ্যামলবাবু সিটু-র রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। রাজ্যসভার সাংসদও নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক জগতের ক্ষতি হল। আমি শ্যামল চক্রবর্তীর পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।"
আবদুল মান্নান
ছাত্র রাজনীতি থেকে শ্যামল চক্রবর্তীর বক্তব্য শোনার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকতেন বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতা আবদুল মান্নান। বলেন, "এই সময় সোমেন মিত্র এবং শ্যামল চক্রবর্তীর চলে যাওয়া বাম-কংগ্রেসের জোটের জন্য ক্ষতিকারক। অনেক জটিল সমস্যা শ্যামল চক্রবর্তী সমাধান করে দিতেন। ছাত্র রাজনীতি থেকে ওনাকে দেখা। বিরোধী হলেও ওনাদের বক্তব্য শোনার জন্য আমরা উদগ্রীব থাকতাম। যখন মন্ত্রী ছিলেন তখনও বিরোধীদের মর্যাদা দিতেন। কথা শুনতেন তিনি। রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল।"
অধীর রঞ্জন চৌধুরী
আবদুল মান্নান একা নন, শোকপ্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী, প্রদীপ ভট্টাচার্যও। অধীর চৌধুরী এক শোকবার্তায় লিখেছেন, কমিউনিস্ট নেতা শ্যামল চক্রবর্তীর মৃত্যু আমাকে অত্যন্ত বেদনাহত করল। তিনি প্রকৃত অর্থে একজন জনদরদী শ্রমিক নেতা ছিলেন। আপাদমস্তক ভদ্র ও মধুর স্বভাবের মানুষ। তাঁর স্বজন হারানো পরিবারের সকলের জন্য সমবেদনা জানাই।"
সূর্যকান্ত মিশ্র
সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র জানিয়েছেন, "এদিন দুপুরে পর পর ২ বার হার্ট আ্যটাক হয় শ্যামল চক্রবর্তীর। প্রথমবার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু তারপরই আরও একটা আ্যটাক হয়। তাতেই সব শেষ হয়ে যায়।" আজ সিপিআইএম-এর সমস্ত পার্টি অফিসে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সুজন চক্রবর্তী
আরেক বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "শ্যামলদার মৃত্যু মানে একজন যোদ্ধার মৃত্যু। শ্রমজীবী আন্দোলনে প্রতিটি মানুষের পাশে ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে বামপন্থী আন্দোলনের চরম ক্ষতি হল। শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও তিনি মানুষের পাশে দাঁড়াতেন। তাঁর মত চিন্তক, লেখক, মানবদরদীকে হারিয়ে বামপন্থার খুব বড় ক্ষতি হল।"
আরও পড়ুন, লড়াই শেষ! প্রয়াত বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা শ্যামল চক্রবর্তী