তথ্য ছাড়াই বয়ান বিদেশমন্ত্রকের, মমতার শিকাগো সফর বিতর্কে দাবি তৃণমূলের
শিকাগোয় স্বামী বিবেকানন্দের ঐতিহাসিক ভাষণের ১২৫ বছর উপলক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ করেছিল বিবেকানন্দ বেদান্ত সোসাইটি অব শিকাগো, দাবি তৃণমূলের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মমতার শিকাগো সফর বাতিল বিতর্কে বিদেশমন্ত্রকের বক্তব্য খণ্ডন করল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের জাতীয় মুখপাত্র তথা রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন বলেন, তথ্য ছাড়াই যুক্তি বক্তব্য রেখেছে বিদেশমন্ত্রক।
একটি বিবৃতি জারি করে ডেরেক ও'ব্রায়েন জানান, ''শিকাগোয় স্বামী বিবেকানন্দের ঐতিহাসিক ভাষণের ১২৫ বছর উপলক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ করেছিল বিবেকানন্দ বেদান্ত সোসাইটি অব শিকাগো। ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে সম্মতি দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। ব্যাপক চাপের মুখে অনুষ্ঠান বাতিল করেন উদ্যোক্তারা। এটা জানা গিয়েছে, শিকাগোয় গ্লোবাল হিন্দু কংগ্রেস নামে একটিমাত্র অনুষ্ঠান করতে চেয়েছিল বিজেপি-আরএসএস। ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার কথা ছিল মোহন ভাগবতের''। উল্লেখ্য, চলতি সপ্তাহেই শিকাগোয় বিশ্ব হিন্দু কংগ্রেসের অয়োজন করা হয়েছিল। ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রেখেছেন মোহন ভাগবত। সেখানে হিন্দুদের একজোট হওয়ার কথা বলেন তিনি।
মঙ্গলবার বেলুড়মঠে স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো ভাষণের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি বলেন, ''আমাকে ষড়যন্ত্র করে শিকাগো যেতে দেওয়া হয়নি। শিকাগো যেতে না-পারায় কষ্ট পেয়েছি। কারা একাজ করেছে তা আমি জানি। আমার কাছে সব রেকর্ড আছে''।
বুধবার বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার বলেন, ''শিকাগো সফরের অনুমতি চেয়ে বিদেশমন্ত্রকের কাছে কোনও আবেদন করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে অনুমতি না দেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়''। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য বিদেশমন্ত্রকের বয়ান খারিজ করে তুলে ধরেছে কলকাতায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য। তৃণমূলের দাবি, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিকাগো সফরের কথা শুনে কলকাতায় মার্কিন দূতাবাস বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের কোনও মুখ্যমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখেননি। উনি মার্কিন সফরে আগ্রহ দেখানোয় আমরা খুশি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্ক মজবুত করার একটা সুযোগ তৈরি করবে মুখ্যমন্ত্রীর সফর'।
গত ১১ জুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিকাগো সফর হাতিল হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয় স্বামীজির বক্তৃতার ১২৫ বছর উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল রামকৃষ্ণ মিশন। ২৬ অগাস্ট হওয়ার কথা ছিল অনুষ্ঠানটি। রামকৃষ্ণ মিশনের এক সন্ন্যাসীর হঠাত্ মৃত্যু-সহ একাধিক কারণে ওই অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে বলে জানানো হয়। সফর বাতিল হওয়ার পর ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। জানিয়েছিলেন, চক্রান্ত করে তাঁর সফর বাতিল করানো হয়েছে। সেজন্য হুমকি দেওয়া হয়েছে রামকৃষ্ণ মিশনকে। রামকৃষ্ণ মিশনের তরফে যদিও এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।