কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের `সুপ্রিয়` না হয়েই বিজেপিতে মোহভঙ্গ Babul-র?
দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বাবুল সুপ্রিয়র সম্পর্ক কতটা `মধুর`, তা সর্বজনবিদিত।
নিজস্ব প্রতিবেদন: রাজনীতিকে 'অলবিদা'র করেছেন বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। নাটকীয়ভাবে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফার ঘোষণাও করেছেন দু'বারের বিজেপি সাংসদ। বাবুলের (Babul Supriyo) পোস্ট কি বঙ্গ বিজেপিতে কেবলই ব্যতিক্রমী ঘটনা? নাকি এই ঘটনায় ফের একবার ভোট পরবর্তী দলীয় অস্থিরতা প্রকাশ্যে চলে এল?
বিজেপিতে বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo) অধ্যায়ের ইতি! আসানসোলের সাংসদের ফেসবুক পোস্ট সে ইঙ্গিতই দিচ্ছে। তবে বঙ্গ বিজেপির খোঁজখবর রাখেন এমন অনেকে এটাকে ব্যতিক্রমী হিসেবে দেখতে নারাজ। তাঁদের মতে, ৬ নম্বর মুরলীধর সেন স্ট্রিটের অস্থিরতার ছবিটাকেই সামনে তুলে ধরছে ওই পোস্ট। একুশের নির্বাচনী প্রচারে ২০০ আসন পার করার আত্মবিশ্বাসে ডগমগ করছিলেন বিজেপি নেতারা। প্রত্যাশার ফানুসটা চুপসে গেল ২ মে। শুরু হল তৃণমূলে প্রত্যাবর্তনের ঢেউ। রাজনৈতিক মহল বলছে, বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে বিজেপির অভ্যন্তরীন দ্বন্দ্ব প্রকট। বাবুলের ফেসবুক পোস্টেও সে কথা রয়েছে। তিনি লিখেছেন,'ভোটের আগে থেকেই কিছু কিছু ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্বের সাথে মতান্তর হচ্ছিল। প্রবীণ নেতাদের মতানৈক্য ও কলহে পার্টির ক্ষতি তো হচ্ছিলই, 'গ্রাউন্ড জিরো'-তেও পার্টির কর্মীদের মনোবলকে যে তা কোনওভাবেই সাহায্য করছিল না তা বুঝতে 'রকেট বিজ্ঞান'-র জ্ঞানের দরকার হয় না।'
দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বাবুল সুপ্রিয়র সম্পর্ক কতটা 'মধুর', তা সর্বজনবিদিত। নতুন করে বলার কিছু নেই। সূত্রের খবর, দিলীপের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছেও বলেছিলেন বাবুল। কিন্তু রাজ্য সভাপতির পাশেই দাঁড়িয়েছেন নেতারা। রাজ্য বিজেপি সূত্রের খবর, বঙ্গ নেতাদের সঙ্গে তো যোগাযোগ রাখতেন না বাবুল। নিজের মতো চলতেন। দিল্লিতে মন্ত্রিত্ব নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। এমনকি বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছাও ছিল না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব ছাড়তে নারাজ ছিলেন। শীর্ষ নেতৃত্বের চাপে একপ্রকার বাধ্য হয়ে টালিগঞ্জে প্রার্থী হতে সম্মত হয়েছিলেন তিনি।
এই প্রেক্ষাপটে সাম্প্রতিক রদবদলে প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে সরতে হল বাবুলকে (Babul Supriyo)। ফেসবুকে নিজের হতাশা গোপনও করেননি। এ দিন তাঁর ফেসবুক পোস্টে সরে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে প্রতিমন্ত্রিত্ব হারানোর উল্লেখও রয়েছে। তিনি লিখেছেন,'মন্ত্রিত্ব চলে যাওয়ার সাথে তার কি কোনো সম্পর্ক আছে? হ্যাঁ আছে - কিছুটা তো নিশ্চয় আছে ! তঞ্চকতা করতে চাই না।'
বিজেপিতে যে বাবুলের মোহভঙ্গ হয়েছে তা বোঝা যাচ্ছিল ক'দিন ধরেই। ২১ জুলাই দিল্লিতে দলের 'গণতন্ত্র বাঁচাও কর্মসূচি'তে সকল সাংসদরা থাকলেও ছিলেন না বাবুল। সূত্রের খবর, সংসদে গেলেও দলীয় সাংসদদের সঙ্গে দূরত্ব রেখে চলতেন। অনেকে বলছেন, বিজেপিতে গুরুত্ব হারাচ্ছেন বুঝেই চরম সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। আবার এটাও হতে পারে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপরে চাপ বাড়ানোর কৌশল। সবটাই আপাতত বিবিধ জল্পনা। বাবুলের প্রতিক্রিয়া এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন- কী এমন ঘটল? 'অন্য কোনও দলে যাচ্ছি না', পোস্ট করেও মুছে দিলেন Babul