সত্যজিত খুনে অভিযুক্তকে কেন লুচি-আলুর দম, বৈঠকেই প্রশ্ন সুজিতের
শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে দলীয় বৈঠকের পর সব্যসাচীকে পাশে নিয়ে ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দেন, সব্যসাচী দত্ত তৃণমূলেই আছেন।
কমলিকা সেনগুপ্ত
সব্যসাচী দত্তের বাড়িতে মুকুল রায়ের আগমন পর্ব সামলে নিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। লোকসভা ভোটের আগে যা স্বস্তি দিয়েছে দলকে। সূত্রের খবর, রবিবার কাউন্সিলরদের নিয়ে ববি হাকিম ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকদের বৈঠকেই অপ্রিয় প্রশ্ন তুলে দিয়েছেন সুজিত বসু।
সব্যসাচীর বাড়িতে মুকুল লুচি-আলুর দম খাওয়ার পরের দিন তৃণমূলের নির্বাচনী বৈঠকে হাজির হননি বিধাননগরের মেয়র। ওই বৈঠকেই সব্যসাচীর নাম না করে সুজিত বসু বলেছিলেন,''সামনে যুদ্ধ। তার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। কর্মীরা খেটে বেড়াবে আর কেউ কারও বাড়ির আলুর দম খাচ্ছে। দুটো একসঙ্গে চলতে পারে না''।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রবিবার বিধাননগর পুরসভার সমস্ত তৃণমূল কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে বসেন ফিরহাদ হাকিম ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। ওই বৈঠকে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু ও সব্যসাচী দত্ত। সেখানে সুজিত বসু বলেন, আমাদের বিধায়ক সত্যজিত্ খুন হলেন। ওই খুনের ঘটনায় এফআইআরে নাম রয়েছে মুকুল রায়ের। কোন যুক্তিতে তাঁকে লুচি খাওয়াতে বাড়িতে আনা হল? আমায় ফোন করলে ধরতাম না''।
শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবে দলীয় বৈঠকের পর সব্যসাচীকে পাশে নিয়ে ফিরহাদ হাকিম জানিয়ে দেন, প্রাক্তন সহকর্মী মুকুল রায় ফোন করে আসতে চান। সৌজন্যের খাতিরে না বলতে পারেননি সব্যসাচী। তিনি যে সাংবাদিকদের ঘটা করে আনবেন, সেটা বুঝতে ভুল হয়ে গিয়েছে। বিধাননগরের মেয়র স্পষ্ট জানান, তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসে আছেন। তৃণমূল কংগ্রেসেই থাকবেন।
সব্যসাচী দত্ত জানান, ঠাকুরনগরে আড়াই রাত্রি দলের সঙ্গে জেগেছিলেন তিনি। আড়াই রাত্রি ঠাকুরনগরে জেগে কাজকর্ম করার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় যখন বাড়ি ফিরছিলেন, তখন তাঁর কাছে একটা ফোন আসে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ফোনটা আসে। তাঁর বদদোষ, তিনি সবার ফোন-ই ধরেন। তাই সেই ফোনটিও তিনি রিসিভ করেন। ফোন ধরতেই ওপ্রান্ত থেকে একজন 'হ্যালো' বলেন। পাল্টা 'হ্যালো' বলেন সব্যসাচী দত্ত। তারপর কথোপকথন ঠিক এরকম এগোয়-
"আমি দাদা বলছি।"
"কে দাদা?"
"আমি মুকুলদা বলছি। কোথায় আছিস? আমি সল্টলেকে এসেছি। অনেকদিন তোদের সঙ্গে দেখা হয় না। তাই তোদের সঙ্গে একবার দেখা করতে যাব।"
মিডিয়াকে সব্যসাচী বলেন, স্বাভাবিকভাবেই পূর্ব পরিচিতির সুবাদে ও সৌজন্যতা এবং ভদ্রতার খাতিরে তিনি আপত্তি করেননি। মুকুল রায়কে আসতে না বলেননি। এরপর বাড়িতে এসে মুকুল রায় সবার খোঁজখবর নেন। তাঁর স্ত্রী ইন্দ্রাণী দত্তের সঙ্গেও কথা বলেন। জানতে চান, "ইন্দ্রাণী কেমন আছ?" এরপরই খিদে পেয়েছে জানিয়ে ইন্দ্রাণীকে লুচি-আলুরদম বানাতে বলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়।
আরও পড়ুন- সংখ্যালঘুদের ভোটদান রুখতে সাত দফায় ভোট, দাবি ফিরহাদের
সব্যসাচী জানিয়েছেন, তাঁর স্ত্রী ইন্দ্রাণী দত্ত যখন লুচি-আলুর দম বানাচ্ছিলেন, সেইসময় ইন্ডিয়া-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ চলছিল। বিরাট কোহলি আউট হন। খেলা নিয়েই কথা হচ্ছিল তাঁদের মধ্যে। পাশাপাশি, নানুর-চম্পাইতলা নিয়েও কথা হয়। কিন্তু, দল নিয়ে তাঁদের মধ্যে কথা হয়নি।