অঞ্জন রায়: দিলীপ ঘোষ কি থাকছেন রাজ্যসভাপতি? সভাপতি নির্বাচনের গুঞ্জন রাজ্য বিজেপির অন্দরে। মণ্ডল থেকে শুরু করে মুরলিধর লেনের আনাচে-কানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছে, সাংগঠনিক রদবদলে সভাপতির পদে কি থাকবেন দিলীপ ঘোষ? ইতিউতি প্রশ্ন, একুশের লড়াইয়ে কি নতুন মুখ? নাকি দিল্লির ঢঙে সভাপতি দিলীপের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে কার্যকরী সভাপতিকে? না শত্রুর মুখে ছাঁই দিয়ে দিলীপ ঘোষই থেকে যাবেন?       


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মণ্ডল সভাপতির নির্বাচন শেষ। বাছা হয়ে গিয়েছে জেলা সভাপতিও। এবার আসন্ন রাজ্যে সভাপতির নির্বাচন। নির্বাচনপ্রক্রিয়া তদারকি করতে ইতিমধ্যেই কলকাতায় চলে এসেছেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মুরলিধর রাও। তাঁর নজরদারিতে নতুন রাজ্য সভাপতির নাম ঠিক হবে। প্রশ্ন একটাই, দিলীপ ঘোষ কি আবার সভাপতি হচ্ছেন? 


ছ'জন সাধারণ সম্পাদককে নিয়ে সংগঠন চালান দিলীপ ঘোষ। এর মধ্যে সংগঠন সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় তাঁর মূল ভরসা। দু'জনেই সঙ্ঘের লোক। আগেও একসঙ্গে কাজ করেছেন জুটিতে। দিলীপের সঙ্গে আলোচনা করে সংগঠন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতেন সুব্রত চট্টোপাধ্যায়। এহেন সুব্রতবাবুর ভবিষ্যত নিয়েও উঠছে প্রশ্ন, থাকছেন তো?   



দিলীপ সভাপতি হওয়ার পর থেকে মাঝেমধ্যেই শোনা যেত, আর সভাপতি থাকছেন না ঘোষবাবু। কিন্তু নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। বিরোধীদের কাবু করে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আস্থা অর্জন করে সভাপতির পদে থেকে গিয়েছেন দিলীপ ঘোষ। সংগঠনের কূটকাচালি কম বোঝেন, কিন্তু প্রচারে থাকার কায়দা বেশ রপ্ত করে ফেলেছেন। সভাপতির হাওয়ার পর থেকে চষে বেড়িয়েছেন গ্রামবাংলা। ছোট থেকে বড় সভা করে গিয়েছেন। কর্মীদের মধ্যেও এসেছে বিশ্বাস,'আমরাও তৃণমূলকে বেগ দিতে পারি'। সম্ভবত দিলীপ ঘোষের এহেন দক্ষতাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সুনজরে এনেছে তাঁকে। 


নির্বাচনী ময়দানেও অপরাজেয় দিলীপ ঘোষ। সভাপতি হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যে বিধানসভা ভোটে খড়্গপুরে দলের প্রার্থী হয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সোহনপাল সিংয়ের মতো হেভিওয়েট প্রার্থীকে হারিয়ে 'জায়ান্ট কিলার'ও হয়েছেন। সদ্য লোকসভা ভোটেও জয় ছিনিয়ে এনেছেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপির রাজ্য সভাপতির জোড়া জয়ে স্বাভাবিকভাবে কোণঠাসা হয়েছে দলের অন্দরে দিলীপ বিরোধী শক্তি। রাজ্য সভাপতির ঘনিষ্ঠদের দাবি, দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে দলেরই একাংশ ষড়যন্ত্র করছে।  রেকর্ড ৯ বার কাউন্সিলর থেকে লোকসভা- বিভিন্ন নির্বাচনে দাঁড়িয়েও জেতার মুরোদ হয়নি, এমন নেতাও আছেন। দিলীপ ঘোষ ঠান্ডাঘরে বসে রাজনীতি করেন না, মাঠেঘাটে রাজনীতি করেন। আর করেন বলেই তো রাজনীতিতে নবাগত হয়েও বিধায়ক-সাংসদ। 


জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটালকে দিন কয়েক আগে একটি সাক্ষাত্কারে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেছিলেন,''কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার বাসনা আমার নেই। সংগঠনের কাজ করতেই ভালো লাগে। মন্ত্রিসভায় যাওয়ার থেকে দলের সভাপতির পদই বেশি গ্রহণযোগ্য।''


কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, অতিসম্প্রতি দিলীপকে নিয়ে নানা ধরনের গুঞ্জন। তাঁর চালচালন ও পার্ষদদের নিয়ে অমিত শাহের কাছে জমা পড়েছে একাধিক অভিযোগ। এনিয়ে চিন্তিত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও। পাশাপাশি সাংসদ হওয়ার পর অনেকটা সময় দিল্লিতে ব্যয় করতে হচ্ছে দিলীপ ঘোষকে। ফলে একটা কথাও ভাসছে, ২০২১ সালের কঠিন লড়াইয়ের আগে দিবারাত্রি সংগঠনে মন দিতে পারেন, এমন লোককেই বসানো হোক। 


কী হবে? তা স্পষ্ট হয়ে যাবে আর কয়েকদিনের মধ্যেই। রাজ্য সভাপতি থাকছেন দিলীপ ঘোষ? নাকি দিল্লির অমিত-নাড্ডা ফর্মুলায় দিলীপকে রেখে কার্যকরী সভাপতি রাখা হবে? না নতুন মুখকে করা হবে রাজ্য সভাপতি? এটাও শোনা যাচ্ছে, দিলীপ ঘোষ ঠাঁই পেতে পারেন মন্ত্রিসভায়। এব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডা। একুশের বিধানসভা ভোটে রাজ্যে বিজেপির মসনদে বসানোই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রধান লক্ষ্য। কোন পথে এগোবে নেতৃত্ব, তার দিশা দেখাবে সভাপতি নির্বাচন।


আরও পড়ুুন- রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করে আসায় নাগরিকত্ব নয়, বিরোধীদের জবাব অমিতের