পুজা বসু দত্ত


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ছোট ছেলেমেয়েদের নাচ গান, টিভির পর্দায় বেশ জনপ্রিয়। আর ছোটরাও এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাতারাতিই সেলিব্রিটি। সপ্তাহের কয়েকদিন তাদের পারফর্মেন্স আমরা বেশ উপভোগ করি। এক, এত ছোট বয়সেই, এদের দুর্দান্ত সব কীর্তি তাক লাগিয়ে দেয়। দুই, দিনের শেষে, হাল্কা মেজাজের এই সব অনুষ্ঠানে আমরা বেশ রিল্যাক্সডও হই। আমিও বাড়িতে, নিয়ম করে না হোক, সময় পেলেই এই রিয়ালিটি শো দেখি। কিন্তু কয়েকদিন আগে এমনই এক এপিসোডে আমার মনটা কেমন করে উঠল। ছোটদের পারফর্মেন্স আমায় খুশিই করে, তবে এবার আমার মনে আশঙ্কা তৈরি হল।


মায়েরা বলে, সব কিছুরই নাকি সঠিক বয়স থাকে। বড় হতে হতে, এই কথাটা বারবার শুনে যে রাগ হয়নি এমনটা নয়। তবে বড় হতে হতে, এই কথাটা খানিক বিশ্বাস করতেও শুরু করেছি। ছোটরা থাকুক ছোটদের মত। ছোটদের সরল থাকাটা নিশ্চিত করা তো বড়দেরই কাজ। যেই কারণেই বাল্য বিবাহ নিয়ে এত আন্দোলন, লেখালেখি।  


এদেশে শিশুশ্রমের সমস্যা একটা বিশাল আকার ধারণ করেছে অনেক বছর। এই অনুশীলন বন্ধের জন্য লড়াই কম হচ্ছে না। শিশুশ্রম নিয়ে  কৈলাশ সতর্থীর  দীর্ঘ আন্দোলন তাঁকে এনে দিয়েছে নোবেল। শিশুরা দেশের ভবিষ্যত। তাদের ভাল করে গড়ে তুলতে পারলে, আমরা, আমাদের সমাজই তো উপকৃত হবে। চারা গাছের মত ছোটরা যেদিন বটের মত শাখা প্রশাখা মেলবে, সেই ফলেই তো মিলবে আমাদের সার্থকতা। তাদের উন্নতিতে, উন্নত হবে দেশ। কিন্তু আমাদেরই তো করতে হবে সেই সুস্থ ছেলেবেলার অঙ্গীকার।


আরও পড়ুন জানুন কোন রাশির কী কী খারাপ অভ্যাস রয়েছে


সাম্প্রতীক সুপ্রিম কোর্টের এক শুনানি আরও দৃঢ় করল আমার এই মত। জন্মাষ্ঠমীতে দহি হন্ডি ভাঙার রীতি অনেকদিনের। একের পর এক পিঠে চড়ে, গড়ে তোলা ত্রিভুজের ওপর ছোট ছেলেদের তোলা হয়। তারাই ভাঙে এই হান্ডি বা হাড়ি। যা থেকে উপচে পড়ে দুধ বা দই। মানা হয়, এই ছোট ছেলেটিই গোপাল রূপে দই চুরি করছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞায়, আঠারো বছরের নিচে কেউই চড়তে পারবে না ওই ত্রিভুজের ওপর। যুক্তি ওপর থেকে পরে কোন বিপদ ঘটতে পারে। আর কৃষ্ণ দেবতা মাখন চুরি করতে তো আর জিমন্যাস্টিক করতে পারেন না। অন্তত এমন প্রমাণ তো আর নেই।


যাক আবার ফিরে আসি যা দিয়ে শুরু করেছিলাম। সেই টিভি রিয়ালিটি শো। ছোট বয়সেই নাচ করুক, তিনি সেটা ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যবহার করা নিশ্চয়ই অন্যায়। পাঁচ বছরের এক মেয়ে, উগ্র সেজে, স্টেজে উঠে, আইটেম ডান্সে বাদ রাখছে না কোমরের কারসাজি থেকে ঠোঁটের কামরটাও। সেই বাচ্চাটিই নাকি স্টেজ জ্বালিয়ে দিয়েছে বলে অভিমত উপস্থিত বিচারকদের। সত্যই কি এটা স্বাভাবিক শৈশব। এভাবে কি ওই মেয়ে বা ছেলেটা তার ছোটবেলাটা হারাচ্ছে না? বাবা মায়েরা কি মনে করেন?


আরও পড়ুন ছেলেকে মেয়েদের বিরক্ত করতে দেখে মা যা করলেন, তা সত্যিই প্রশংসা যোগ্য