নিজস্ব প্রতিবেদন: উপর থেকে দেখে বোঝার কোনও উপায় নেই যে এখানে পায়ে তলায় (মাটি থেকে ২২-২৩ ফুট গভীরে) বসবাস করছে একটা গোটা গ্রাম! কারণ, গোটা গ্রামটাই গড়ে উঠেছে মাটির নিচে। এই গ্রামের প্রতিটি বাড়ির স্থাপত্য পরিকল্পনা এক কথায় অসাধারণ! ঘরগুলিতে তাপমাত্রা শীতকালে ১০ ডিগ্রি কম হয় না আর গ্রীষ্মে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকে না। কোথায় রয়েছে এমন গ্রাম? আসুন জেনে নেওয়া যাক...


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


চিনের হেনান প্রদেশের সানমেনশিয়ায় রয়েছে এই অদ্ভুত গ্রাম। প্রায় ২০০ বছর ধরে এখানে মাটির তলাতেই বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন কয়েক হাজার মানুষ। সানমেনশিয়া এলাকায় এমন অন্তত ১০ হাজার ঘরের সন্ধান মিলেছে। এগুলির বেশির ভাগই বর্তমানে পরিত্বক্ত। মাটির নিচে তৈরি এই ঘরগুলিকে চিনা ভাষায় বলা হয় ‘ইয়ায়োডং’, যার অর্থ হল গুহা ঘর। জানা গিয়েছে, একটা সময়ে এখানে প্রায় হাজার বিশেক মানুষের বসবাস ছিল। কিন্তু আধুনিক সুযোগ সুবিধার অভাবে এবং প্রতিকূল জীবনযাত্রার চাপে অনেকেই এলাকা ছেড়ে চলে যান। তবে এখনও সানমেনশিয়া এলাকার এই গুহা ঘরগুলিতে প্রায় ৩ হাজার মানুষ বসবাস করেন।



মাটি থেকে ২২-২৩ ফুট গভীরে তৈরি এই ঘরগুলি লম্বায় ৩৩ থেকে ৩৯ ফুট পর্যন্ত হয়। ঐতিহাসিকদের মতে, হেনান প্রদেশের সানমেনশিয়ায় ‘ইয়ায়োডং’-এ বসবাসের ইতিহাস ২০০ বছরের বেশি প্রাচীন নয়। তবে চিনের পার্বত্য এলাকায় আজ থেকে প্রায় ৪০০০ বছর আগে, ব্রোঞ্জ যুগে এই ধরনের গুহা ঘর তৈরি করে বসবাস করতেন একদল মানুষ।


আরও পড়ুন: আজও মেয়েকে কিন্ডারগার্টেন স্কুল থেকে আনতে যান ৮৪ বছরের বৃদ্ধা!


২০১১ সাল থেকে এই গ্রামটির সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে স্থানীয় প্রশাসন। বর্তমানে এই সব ‘ইয়ায়োডং’ বা গুহা ঘরগুলিতে বিদ্যুত সংযোগ-সহ সব রকম আধুনিক সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ‘ইয়ায়োডং’গুলি ভূমিকম্পেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। আশ্চর্য এই ঘরগুলির আকর্ষণে এই এলাকায় বর্তমানে পর্যটকদের আনাগোনা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। পর্যটক টানার জন্য এখন ‘ইয়ায়োডং’ ভাড়া দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এক মাসের জন্য ভাড়ায় এই ‘ইয়ায়োডং’-এ থাকতে চাইলে আপনাকে গুনতে হবে প্রায় ১৬২১ টাকা (২১ ইউরো)। পছন্দ হয়ে গেলে কিনেও নিতে পারেন এ রকম একটি গুহা ঘর। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত এই ‘ইয়ায়োডং’-এর দাম ভারতীয় মূদ্রায় প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা (৩২ হাজার ইউরো)।