শাশ্বতী ভট্টাচার্য


মুর্শিদাবাদে বন্ধুর জন্মদিনে এসে দুপুরবেলা ঘুরতে বেরিয়ে পড়লো আরশি আর রাজেশ| গন্তব্য হাজারদুয়ারি| এখানকার দরবার, নবাবের ব্যবহৃত অস্ত্র, আসবাব সবকিছুই অদ্ভুত অনুভূতিমাখা| উপরের একটা ঘরে বিশাল ছবিটার সামনে এসে থমকে দাঁড়ালো আরশি| ছবিটা তার চেনা| রাজেশ ততক্ষণে এগিয়ে গেছে| হঠাৎ ঘরের ঝাড়বাতিটা দুলতে লাগলো | ছবি থেকে নবাব হুমায়ূনজা তার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো - 'উমদত্, তুমি এসেছো? আমাকে চিনতে পেরেছো বেগম? রূপোর সিংহাসন, দরবার, ঐ তোমার সাজঘর... এসো আমার সাথে' — চাঁদির বিশাল আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আরশির সব মনে পড়ে যায়| নিজের অজান্তেই বলে ওঠে' নবাবজাদা, সেদিন সন্ধ্যের পর আপনার বন্ধু নজিম আমাকে আপনার নাম করে ডেকে নিয়ে যায় ভাগীরথীর ঘাটে, আমাকে কুপ্রস্তাব দেয়| নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আমি...' বাকরুদ্ধ হয় আরশি| ততক্ষণে পাশের ছবি থেকে নেমে এসেছে নজিম, 'উমদত্কে আমি কখনো তোমার হতে দেবো না নবাবজাদা’।
হুমায়ূনজা আরশিকে বলে - 'তুমি পালাও...' |
'না, আমি আপনাকে ছেড়ে যাবোনা'|
'তুমি যাও উমদত্, আমি তোমারই আছি, থাকবো...'
'নাবাবজাদা' বলে চিৎকার করে বিছানায় উঠে বসে আরশি| রাজেশ তাকে জড়িয়ে ধরে, 'এখন কেমন আছো আরশি?’
আরশি রাজেশের মুখের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকে, এযে অবিকল হুমায়ূনজা|
'তুমি হাজারদুয়ারির একটা ঘরে অজ্ঞান হয়ে গেছিলে| এই গরমে না গেলেই ভালো হত|' আরশি রাজেশকে জড়িয়ে ধরে বলে 'ভাগ্যিস গেছিলাম, তাইতো তোমাকে চিনে নিলাম, নবাবজাদা।’ রাজেশ তাকে আদর করে বলে, 'আমার বেগম’ || 


আরও পড়ুন- ভালোবাসা