ভালোবাসা
![ভালোবাসা ভালোবাসা](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2017/04/10/82850-anugalpo.jpg)
আজমীরা প্রামানীক
হালখাতার দিনেই ভালোবাসার খাতা খুলেছিল বর্ধমানের নাদিরা আর হাওড়া এর বাউরিয়ার সুবীর। ফেসবুক এ পরিচয়। মুঠোফোনে প্রেমালাপ। ভিডিও কলিং এ দেখতে পায় একে-অপরকে। কখনো রোমাঞ্চিত হয়ে অস্তরবির রঙে রেঙ্গে ওঠে মুখমণ্ডল, আবার কখনো বিষণ্ণতায় চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে দুজনের। ধর্ম আলাদা , তাই দূরে সরে যেতে চায় তারা, কিন্তু পারেনা। একটা আকর্ষণে বারেবারে ফিরে আসে।
নাদিরার বাড়িতে জানাজানি হলে অশান্তি চরমে উঠল। বাবা বলল," জানিস না , অন্যধর্মে বিয়ে করা পাপ! " নাদিরার অকাট্যযুক্তি", ধর্ম আগে না মানুষ আগে? আমি মানুষকে ভালোবাসি, ধর্মকে নয়। 'সবার উপরে মানুষ সত্য'-একথা কি মিথ্যে ?"
নাদিরার বাবা সুবীরকে ফোনে ধমকালেন। কয়েকদিন পর, ভরদুপুরে সুবীরের ফোন বেজে উঠল।
" হ্যালো, নাদিরা, কাঁদছ কেন?"
" বাড়িতে প্রচণ্ড অশান্তি। তোমার কাছে চলে আসছি। হাওড়া স্টেশনে এসো প্লিজ !"
"একি! তুমি নাবালিকা যে! সবে নবম শ্রেণী। পথে কতরকম বিপদ হতে পারে ধারণা আছে তোমার? হাওড়া স্টেশনে চুপচাপ দাঁড়াবে,আমি আসছি ।"
নাদিরার বাবাকে মেসেজ করে ট্রেনে চেপে বসল সুবীর। স্টেশনে পৌঁছে নাদিরাকে বুঝিয়ে বাবার হাতে তুলে দিয়ে বলল, " আঙ্কল, অপরিণত বুদ্ধিতে ও যা করেছে, আমি কীকরে করি বলুন!"
ছেলেটির সততায় আল্পুত বাবা! বললেন," ভালোবাসার কোন ধর্ম হয়না , মানবধর্মই একমাত্র ধর্ম। কথা দিচ্ছি ,তোমার হাতেই মেয়েকে তুলে দেব।"
সুবীরকে পিছনে ফেলে অজগরের গতিতে এগিয়ে গেল বর্ধমান লোকাল। সুবীরের চোখে ভাসছে টলটলে দুটি চোখ।