Chaitra Navratri | Durga Puja: এ বছর তিনবার দুর্গাপুজো! কেন, কীভাবে এই অসম্ভব ঘটনা সম্ভব হচ্ছে?
Chaitra Navratri | Durga Puja: বাংলা বছরের শুরুতেই বাসন্তী দুর্গা পুজো। এর পরে আসছে অকালবোধনের দুর্গাপুজো, যেটা শারদীয় পুজো বলেই পরিচিত। এরপর চলতি বাংলা বছরের একেবারে শেষের দিকে আবার আসছে বাসন্তী দুর্গা পুজো। সেই হিসেবে এক বছরে তিনবার দুর্গাপুজোই হল।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এ বছর তিনবার দুর্গাপুজো হবে! শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এটা সত্যি! নতুন এই বাংলা বছরে তিনবার হবে দুর্গাপুজো।
কীভাবে?
বাংলা বছরের শুরুতেই বাসন্তী দুর্গা পুজো। যেটা আদি দুর্গাপুজো বলেই খ্যাত। এর পরে আসছে অকালবোধনের দুর্গাপুজো, যেটা শারদীয় পুজো বলেই পরিচিত। এরপর চলতি বাংলা বছরের একেবারে শেষের দিকে আবার আসছে বাসন্তী দুর্গা পুজো। সেই হিসেবে এক বছরে তিনবার দুর্গাপুজোই হল।
এখন চলছে নবরাত্রি। নবরাত্রি বছরে দুবার আসে। শারদীয় নবরাত্রি ও চৈত্র নবরাত্রি। শরৎ নবরাত্রি এবং বসন্ত নবরাত্রি। এই দুই নবরাত্রি নিয়েই সারা দেশে তৈরি হয় উৎসবের আবহ। মেতে ওঠেন ভক্তেরা। শারদীয় নবরাত্রি চলে গিয়েছে। যেটিকে আমরা দুর্গাপুজো বলে চিহ্নিত করি। এবার চৈত্র নবরাত্রি। এটি বাঙালিরা চিহ্নিত করে মা বাসন্তী ও মা অন্নপূর্ণার পুজো দিয়ে। চলছে সেই চৈত্র নবরাত্রি। এরপর এই ১৪৩১ বঙ্গাব্দেই ফের আসছে চৈত্র নবরাত্রি।
নবরাত্রি থেকে বোঝা যাচ্ছে, এটি একটি ন'দিনের উৎসব। শরতে ও চৈত্রে টানা নয়দিন ধরে এই উৎসব চলে। এবার চৈত্র নবরাত্রি শুরু হয়েছে ৯ এপ্রিলে। চলবে আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত।
নবরাত্রিতে মা দুর্গার নটি রূপের পুজো হয়। রূপগুলি হল-- যথাক্রমে মা শৈলপুত্রী, মা ব্রহ্মচারিণী, মা চন্দ্রঘণ্টা, মা কুষ্মাণ্ডা, স্কন্দমাতা, মা কাত্যায়নী, মা কালরাত্রি, মা মহাগৌরী, মা সিদ্ধিদাত্রী। নয় দিনে মা দুর্গার এই নয়টি অবতারের পুজো করা হয়।
মার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত শ্রীশ্রীচণ্ডী গ্রন্থে এই বাসন্তী পুজোর উল্লেখ রয়েছে। সত্য যুগে রাজা সুরথ এই পৃথিবীর রাজা হয়েছিলেন। কিন্তু কালক্রমে তিনি শ্ত্রুদের দ্বারা পরাজিত হয়ে রাজ্য থেকে বিতাড়িত হয়ে মনের দুঃখে এক গভীর বনে প্রবেশ করেন। সেই বনে মেধস মুনির আশ্রম ছিল। সেখানেই আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন রাজা সুরথ। চিন্তিত রাজা সুরথ একদিন বনের মধ্যে হাঁটছেন, এমন সময়ে সমাধি নামের এক বৈশ্যের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়ে যায়। সেই বৈশ্যও নিজের ছেলে এবং আত্মীয়দের চক্রান্তে বাড়ি থেকে বিতাড়িত। পরস্পরের পরিচয় ঘটে। বৈশ্য সব সময়েই ছেলে এবং পরিবার পরিজনদের কথা ভেবে কষ্ট পেতেন। রাজা সুরথ তখন বৈশ্যকে জিজ্ঞাসা করলেন, যে পুত্র ও আত্মীয়রা ধনলোভে আপনাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিল, তাদের প্রতি আপনার মনে এখনও কেন এত স্নেহের উদ্রেক? বৈশ্য উত্তরে বলেন, আমিও বুঝতে পারি না, কেন ধনলোভী পুত্র আর আত্মীয়দের জন্য আমার মন এত স্নেহাসক্ত হচ্ছে! এরপর রাজা সুরথ এবং সমাধি উভয়েই মেধস মুনির কাছে এসে জিজ্ঞাসা করেন, আমি ও সমাধি উভয়েই ধনলোভী নিষ্ঠুর স্বজনগণ ও ভৃত্যগণ কর্তৃক বিতাড়িত হয়েছি। কিন্তু আমাদের মন সেই তাদের প্রতিই কেন স্নেহাসক্ত হচ্ছে? এর কারন কী? তখন মেধস মুনি তাঁদের কাছে জগতের সব বিষয়ের অসারতা সম্বন্ধে উপদেশ দেন এবং দেবী আদ্যাশক্তির শরণাপন্ন হওয়ার নির্দেশ দেন।
মেধস মুনির উপদেশে রাজা সুরথ ও বৈশ্য সমাধি বনমধ্যস্থিত নদীর তীরে শ্রীশ্রীচণ্ডীস্বরূপা দুর্গাদেবীর মৃন্ময়ী প্রতিমা গড়ে পুজো সাঙ্গ করেন দেবী দুর্গা সন্তুষ্ট হয়ে তাঁদের বর প্রদান করেন। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণমতে, রাজা সুরথ ও বৈশ্য সমাধি, নদীতীরবর্তী মেধসাশ্রমে বসন্তকালেই শ্রীশ্রী দুর্গাপুজো সমাপন করে দেবীপ্রতিমা নদীগর্ভে বিসর্জন দিয়েছিলেন। যা পরে বাসন্তী পুজা নামে প্রসিদ্ধ হয় এবং সেটাই প্রচলিত থাকে।
কিন্তু রামচন্দ্র রাবণকে পরাস্ত করে সীতা-উদ্ধারকালে অশুভ শক্তির বিনাশের জন্য শরৎকালে দুর্গার আরাধনা করলেন। সেই সময় সূর্যের দক্ষিণায়ন এবং দেবতাদের নিদ্রার সময়। এই অকালে দেবীর ঘুম ভাঙানো হল বলে এটি অকালবোধন হিসেবে খ্যাত হল।