নিজস্ব প্রতিবেদন: আম-বাঙালি মাত্রেই ল্যাংড়া-হিমসাগরের কথা ভাল করেই জানেন। কিন্তু এই নবাবি আমটি তেমন একটা প্রচার পায়নি কখনও। ইদানীং আম-উৎসবের মধ্যে দিয়ে পরিচিতি বাড়ছে এই বিশেষ আমটির। বাংলার নবাবি আমলে মাইনে করা অভিজ্ঞ লোক থাকত এই আম দেখভালের জন্য। তবে এটি আমের দুনিয়ায় ‘অ্যান্টিক’! বনেদি আসবাব বা গয়নার মতো এই আমের নিলামও হয়। নিলামে এক একটির দর ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকাও ছাড়ায়! নাম, কহিতুর। এটিই বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন: ফরমালিন মেশানো আম চিনবেন কী করে? জেনে নিন উপায়


অষ্টাদশ শতাব্দিতে নবাবি জামানায় আবির্ভাব ঘটে এই রাজকীয় আমের। শোনা যায়, নবাব সিরাজউদ্দৌলা আমের বড় ‘জহুরি’ ছিলেন। সেই আমলে গোটা দেশ থেকে নানা ধরণের আম গাছের চারা সংগ্রহ করে সেগুলি মুর্শিদাবাদে এনে লালন পালন করতেন, তদারকি করতেন। সিরাজের আগে নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ’রও গাছগাছালি, বাগানের প্রতি একটা গভীর টান ছিল। সিরাজের পরবর্তী নবাব হুমায়ুন জাহ, যাঁর আমলে হাজারদুয়ারি (১৮৩৭) তৈরি হয়েছিল, শোনা যায় তিনিও আমবাগানের প্রতি অত্যন্ত যত্নবান ছিলেন। এই কোহিতুর ছিল এই নবাব বংশের খাস সম্পদ।


আরও পড়ুন: আম পাড়ার জন্য খুন!


২০১৫ থেকে কলকাতাতেও পাওয়া যাচ্ছে কোহিতুর। ল্যাংড়া, হিমসাগর, গোলাপখাসের মতো আমের দর যেখানে ২৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি, সেখানে একটি কোহিতুরের দাম চার-পাঁচশো টাকার কম নয়! মুর্শিদাবাদের চাষিরা মনে করেন, এখন আর সেই রকম কোহিতুর আম ফলে না। যদিও এখনও কলকাতার বাজারে তুলোর মোড়কে অতি যত্নে বিকোয় এই নবাবি আম। মুর্শিদাবাদেই কোহিতুর-গাছের সংখ্যা হাতে গোনা। লালবাগের কাছে আট-দশটা, জিয়াগঞ্জে তিন-চারটে... সব মিলিয়ে গোটা মুর্শিদাবাদে এই দুষ্প্রাপ্য আম গাছের সংখ্যা পঞ্চাশও হবে কিনা সন্দেহ!



এই ভাবেই বিক্রি হয় কোহিতুর।


হিরের দুনিয়ায় যেমন কোহিনুর, তেমনই আমের বাজারে কৌলিন্যের বিচারে সেরা কোহিতুরই। মুর্শিদাবাদের এই নবাবী আমকে জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল আইডেন্টিফিকেশন) তকমা দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে রত্নাগিরি ও দেবগড় আলফানসো আমকে জিআই দিয়েছে। এ বার অপেক্ষা কোহিতুরের জিআই তকমার।