নিজস্ব প্রতিবেদন: শিলাবৃষ্টি আমরা অনেকেই দেখেছি। আকাশ থেকে তুলোর মতো বরফ ঝরে পড়ার ঘটনাও নতুন কিছু নয়। উল্কা বৃষ্টিও মাঝে মধ্যে দেখেছেন অনেকে। কিন্তু ‘মাছ বৃষ্টি’ দেখেছেন? একটা-দু’টো নয়— আকাশ থেকে লক্ষ লক্ষ মাছ ঝরে পড়ে এ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। রাস্তা-ঘাটে, বাড়ির সামনে, ছাদে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে হাজার হাজার মাছ! মাঝে মধ্যে নয়, প্রতি বছরই এমন ঘটনায় সাক্ষী হয়ে থাকেন মধ্য আমেরিকার হন্ডুরাসের লক্ষ লক্ষ মানুষ।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

মে থেকে জুলাই মাসের মধ্যে এমন ‘মাছ বৃষ্টি’ প্রতি বছরই হয় হন্ডুরাসের বিভিন্ন জায়গায়। স্থানীয়রা এই ঘটনাকে বলেন ‘জুভিয়া দে পেতেস’ (Lluvia de Peces)। স্প্যানিশ এই শব্দটির অর্থ হল ‘মাছের বৃষ্টি’। আকাশ থেকে অঝোরে ঝরে পড়তে থাকে মাছ, স্কুইড, ব্যাঙ ও আরও কত কী! স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সময় রীতিমতো লোক নামিয়ে রাস্তাঘাট পরিষ্কার করাতে হয়।


একটা সময় পর্যন্ত এ অঞ্চলের বহু মানুষ বিশ্বাস করতেন, এক সন্তের আশির্বাদেই এমনটা হয়। উনবিংশ শতকের মাঝামাঝি (১৮৫৬ সাল – ১৮৬৪ সাল) সময়ে খ্রীষ্ট ধর্মযাজক হোসে সুবিরানা হন্ডুরাসে আসেন। সে সময় এই অঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ অত্যন্ত অনটন আর দারিদ্রের মধ্যে দিন কাটাতেন। তাঁদের দুর্দশা দূর করতে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থণা করেন তিনি। হোসে সুবিরানার প্রার্থণার পর থেকেই দারিদ্রের কষ্ট দূর করতে ঈশ্বর আকাশ থেকে ‘মাছের বৃষ্টি’ করেন বলে বিশ্বাস করতে শুরু করেন এই অঞ্চলের মানুষ।



কিন্তু কেন ‘মাছের বৃষ্টি’ হয় হন্ডুরাসে?


শোনা যায়, ১৯৭০ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ দলকে পাঠানো হয় হন্ডুরাসে। ওই দলের সদস্যরা এই ‘মাছের বৃষ্টি’র ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের ওই সদস্যরা জানান, এই অঞ্চলে আকাশ থেকে যে সব মাছের বৃষ্টি হয়, তা কোনও সমুদ্রিক মাছ নয়। সেগুলি মিষ্টি জলের মাছ। অর্থাৎ, আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো ঝরে পড়া মাছগুলি কোনও নদী, পুকুর বা হ্রদের মতো মিষ্টি জলের জলাশয়ের মাছ। শুধু তাই নয় বেশির ভাগ মাছই প্রায় একই প্রজাতির। যদিও ১৯৭০ সালে হন্ডুরাসে ‘মাছের বৃষ্টি’র সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সদস্যদল পাঠানোর বিষয়টি স্বীকার করেনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেল কর্তৃপক্ষ।


আরও পড়ুন: পুতুল না মমি! ৮৯ বছর ধরে আজও রহস্য ও কৌতুহলের কেন্দ্রে এই ম্যানিকুইন


যে এলাকায় প্রতি বছর একবার বা দু’বার মাছের বৃষ্টি হয়, আটলান্টিক মহাসাগর তার থেকে প্রায় ২০০ মাইল দূরে। অনেকে মনে করেন, টর্নেডো বা সামুদ্রিক ঝড় আটলান্টিক মহাসাগরের বিভিন্ন অংশের মাছ উড়িয়ে এনে এই অঞ্চলে এনে ফেলে। কিন্তু এমন ঘটনা প্রতি বছর কী করে সম্ভব তা নিয়ে এখনও যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে।