নিজস্ব প্রতিবেদন: আমরা ‘শ্মশান বন্ধু’ শব্দটার সঙ্গে মোটামুটি প্রায় সকলেই পরিচিত। মানুষের অন্তিম যাত্রার সময় যাঁরা মৃতদেহকে শ্মশান পর্যন্ত কাঁধে বহন করেন বা মৃত ব্যক্তির অন্তিম সংস্কারের ধর্মীয় ক্রিয়াকলাপে সামিল হন, তাঁদেরকেই ‘শ্মশান বন্ধু’ বলা হয়। কিন্তু বেওয়ারিশ মৃতদেহর সত্কারের ক্ষেত্রে এমন বন্ধু পাওয়াই যায় না। তাই পরিচয়হীন, স্বজনহীন ওই মৃতদেহগুলির ধর্মীয় রীতি-রেওয়াজ মেনে সত্কারও হয় না। কিন্তু বিগত প্রায় ১৮ বছর ধরে এমনই স্বজনহীন, পরিচয়হীন মৃতদেহের সত্কার করে চলেছেন এক ব্যক্তি। নাম, ভেনিলাল মালওয়ালা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বছর পঞ্চান্নর ভেনিলাল গুজরাতের বাসিন্দা। পেশায় ব্যবসায়ী এই মানুষটি এখনও পর্যন্ত সাত হাজারেরও বেশি দাবিদারহীন মৃতদেহের সত্কার করেছেন। নিজের ব্যবসার মুনাফার অংশ থেকে টাকা বাঁচিয়ে ওই মৃতদেহগুলির সত্কারের কাজ শুরু করেন তিনি। কিন্তু নিজের গ্যাঁটের কড়ি খরচ করে এমন একটা উদ্যোগ কেন নিয়েছিলেন ভেনিলাল?


আরও পড়ুন: ঘণ্টায় ৬০ টাকা, অভাব ও শিল্পের যোগসূত্র যখন ওদের নগ্ন শরীর...


জানা গিয়েছে, ২১ বছর আগে, ১৯৯৭ সালের একটি ঘটনা তাঁকে মারাত্মক ভাবে প্রভাবিত করেছিল। সে বছর একটি দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম এক অপরিচিত ব্যক্তিকে আইনি জটিলতায় আর পুলিশি বাধায় তিনি যথা সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি। ফলে দুর্ঘটনায় জখম ওই ব্যক্তিকে শেষমেশ বাঁচাতে পারেননি তিনি। এর পর থেকেই ‘দাবিদারহীন’ মৃতদেহের যথাযথ সত্কারে উদ্যোগী হন ভেনিলাল।



১৮ বছর আগে এ কাজের জন্য একটি সংস্থা গড়ে তোলেন ভেনিলাল। এই সংস্থার নাম ‘অগ্নিদাহ সেবা কেন্দ্র’। এই সংস্থার মাধ্যমে প্রতিটি মৃতদেহের সত্কারের জন্য ৫০৫ টাকা খরচ করেন ভেনিলাল। প্রতি বছর জানুয়ারী মাসে একটি স্থির চিত্র প্রদর্শনীর সাহায্যে ‘অগ্নিদাহ সেবা কেন্দ্র’ সংস্থার এই কর্মকাণ্ড জনসাধারণের সামনে তুলে ধরা হয়। ২০১৮-এ এ পর্যন্ত প্রায় ৪০০ এমন মৃতদেহের সত্কার করেছেন। যত দিন বেঁচে আছেন, তত দিন এ ভাবেই পরিচয়হীন, ‘দাবিদারহীন’ মৃতদের পাশে প্রকৃত ‘শ্মশান বন্ধু’ হয়ে থাকতে চান ভেনিলাল।