নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রত্যেক দেশ বা অঞ্চলেই বসবাস করার কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। যেমন, নরওয়ের লঙিয়ারবিয়ানে বসবাসকারী কোনও মানুষের মৃত্যু হলে তাকে সেখানে সমাধিস্থ করা যায় না। তাকে লঙিয়ারবিয়ানের বাইরে কোথাও সমাধিস্থ করতে হয়। এটাই ওই অঞ্চলের নিয়ম যা বিগত প্রায় ১০০ বছর ধরে মেনে আসছেন সকলে। এই অদ্ভুত নিয়মের কারণ, ওই অঞ্চলে ১৯১৭ সালে ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারীর আকার নেয়। সেই সময় অনেক মানুষ এই ইনফ্লুয়েঞ্জায় মারা যান। কিন্তু মৃতদেহ সমাধিস্থ করার সময় একটা সমস্যা সামনে আসে। ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা এতটাই কম যে, সেখানে সমাধিস্থ মৃতদেহগুলি পচে স্বাভাবিক ভাবে মাটির সঙ্গে মিশে যেতে পারে না। ফলে দীর্ঘদিন একই অবস্থায় থেকে যায়। তাই...


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ইউরোপের দেশ এসটোনিয়ার সুপিলিনে এখনও রাস্তাঘাটের নাম আলু, মটর, তরমুজ ইত্যাদি শাক-সবজির নাম অনুযায়ী রাখা হয়েছে। অনেকটা ঠিক সেই ছেলেবেলার রুপকথার গল্পের মতো। এই এলাকার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি... সব মিলিয়ে চেহারা এখনও সেই ঊনবিংশ শতাব্দীর গ্রামগুলির মতোই রয়ে গিয়েছে।



এমনই এক অদ্ভুত শহরের নাম ভিলা লে এস্ট্রেলা। এন্টার্কটিকা বা দক্ষিণ মেরুর বরফে ঢাকা কিং জর্জ দ্বীপে অবস্থিত একটি ছোট শহর। শহর বলছি বটে, তবে এখানে বাড়ি-ঘর রয়েছে একেবারে হাতে গোনা, কয়েকটা। এ ছাড়াও এখানে রয়েছে একটা স্কুল আর একটা পোস্ট অফিস আর একটা ব্যাঙ্ক। আর দোকানপাঠ সেও হাতে গোনা। কিন্তু এ কথা মনে হতেই পারে, দক্ষিণ মেরুর বরফে ঢাকা ছোট একটা শহরে এটাই তো স্বাভাবিক! হ্যাঁ, বাড়ি-ঘর আর দোকানপাঠের সংখ্যায় কোনও অস্বাভাবিকতা নেই। তবে এই শহরের একটা ব্যপার সবার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা যে কারণে একে ‘অদ্ভুত’ বলছি। কী সেই অদ্ভুত ব্যপার?



এই শহরে যদি বসবাস করতে চান, তাহলে অবশ্যই অস্ত্রোপচার করে আপনার অ্যাপেনডিক্স ফেলে দিতে হবে। নয়তো এখানে বাস করার অনুমতি পাবেন না আপনি। এস্ট্রেলা শহরে বসবাসকারী সকলকেই অন্য শহর থেকে অস্ত্রোপচার করে অ্যাপেনডিক্স শরীর থেকে বাদ দিয়ে আসতে হয়। এ শহরের শিশুদের ক্ষেত্রেও এই একই নিয়ম প্রযোজ্য।



কিন্তু কেন এমন অদ্ভুত নিয়ম এ শহরের? অ্যাপেনডিক্সের সঙ্গে কী এমন শত্রুতা রয়েছে এ শহরের বাসিন্দাদের?


আসলে ভিলা লে এস্ট্রেলার শ’ খানেক বাসিন্দার মধ্যে বেশিরভাগই হলেন চিলির বিমান বাহিনী বা নৌবাহিনীর সদস্য অথবা বিজ্ঞানী। তবে তাঁদের অনেকের সঙ্গেই তাঁদের পরিবার পরিজনরাও আসেন এই শহরে বসবাস করতে। বসবাসের জন্য অত্যন্ত নিরিবিলি ও মনরম এই শহর। এই শহরের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে মাইনাস ২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীতকালে এই তাপমাত্রাই হিমাঙ্কের নিচে মাইনাস ৪৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত নেমে যায়। এই শহরে চিকিত্সকের সংখ্যা খুবই কম। যে সব চিকিত্সক রয়েছেন, তাঁরা কেউই অস্ত্রোপচারে পারদর্শী নন। এ ছাড়া এস্ট্রেলা শহরের সবচেয়ে কাছের হাসপাতালটির দূরত্ব শহর থেকে মাত্র ১০০৬ কিলোমিটার (৬২৫ মাইল)।



আরও পড়ুন: প্রতিদিন ৯ ঘণ্টা করে ঘুমোতে হবে, তাহলেই মাস গেলে মিলবে ১ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিক!


এ কথা আমরা সকলেই জানি যে, অ্যাপেনডিক্স এমন একটি অঙ্গ যা শরীর থেকে কেটে বাদ দিয়ে দিলেও মানুষ দিব্যি সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে। কিন্তু অ্যাপেনডিক্সে কোনও সংক্রমণ হলে বা কোনও ক্ষত তৈরি হলে তার জন্য মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কাও তৈরি হয়। তাই সব দিক বিচার করে বাইরে থেকে অস্ত্রোপচার করে অ্যাপেনডিক্স বাদ দেওয়ার পক্ষপাতি এস্ট্রেলা শহরের বাসিন্দারা। শহরে চিকিত্সকের অভাবে বা উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে গর্ভধারণের ক্ষেত্রেও আগাম সতর্কতা নিয়ে হয় এস্ট্রেলার মহিলাদের। তাই এস্ট্রেলা শহরের এই নিয়ম অদ্ভুত শোনালেও তা মোটেই অবাস্তব নয়।


 


তথ্যসূত্র: বিবিসি।