ওয়েব ডেস্ক: "জীবন গিয়েছে চলে আমাদের কুড়ি কুড়ি, বছরের পার" জীবনের সব আনন্দ মাটি হয়ে যাওয়ার পর, জীবনানন্দের এই উপলব্ধিতেই বোধ হয় এসে দাঁড়িয়েছেন প্রৌঢ়-প্রৌঢ়া। শুরুর আগেই শেষ, ২০ দিনের দাম্পত্য কাটিয়ে বিগত ২০ বছর ধরে বিবাহ বিচ্ছেদের ধকলে ধ্বস্ত তিপ্পান্নর তিরুমূর্তি ও উনপঞ্চাশের সুভাষিণী। আবশেষে ২০ বছর বাদে ২০১৭-তে এসে দিল্লির আদালতে মিলল বিচ্ছেদের ছাড়পত্র। সেই ১৯৯৮ সালে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন তারা, তারপর ২০ দিনের দাম্পত্যের মিঠে খুনসুটি আর তারপরই ডিভোর্স ফাইল্ড! কিন্তু কেন? আসলে, তিরুমূর্তি-সুভাষিণীর জীবনের গল্প হার মানাবে সেলুলয়েডকেও।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


খবরের কাগজের শ্রেণীবদ্ধ বিভাগে পাত্রপাত্রীর বিজ্ঞাপন দেখেই আলাপ তিরুমূর্তি-সুভাষিণীর। তারপর বিয়ে। বিয়ের ঠিক পরপরই পারিবারিক প্রথা মেনে দক্ষিণ ভারতের মন্দিরে দেবতার আশীর্বাদ নিতে যাওয়া যা ছাড়া বিবাহই স্বীকৃত নয়। এ পর্যন্ত বেশ চলছিল। কিন্তু যাওয়ার পথেই উটিতে গ্রেফতার হলেন বছর উনত্রিশের নববধূ সুভাষিণী। অভিযোগ, অফিসের অর্থ তছরুফ। জেরার জন্য নিয়ে আসা হল রাজধানী দিল্লিতে। ঘটনার আকস্মিকতায় কিংকর্তব্য বিমূঢ় স্বামী তিরুমূর্তি। দিল্লিতে এসে স্ত্রীয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতেই জানাতে পারলেন যে সুভাষিণীর গর্ভে তাঁদের সন্তান। তিরুমূর্তির অভিযোগ অনুসারে এরপরই (সুভাষিণীর গ্রেফতারি) শুরু হয় হয়রানির পালা। অফিস-বাড়ি-আত্মীয়স্বজন-সমাজ সর্বত্রই নিদারুণ সম্মানহানি তার সঙ্গে প্রবল মানসিক যন্ত্রনা। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন তিরুমূর্তি, এই সম্পর্কে আর এক মুহূর্তও থাকা যাবে না। সেই ভাবনা মতোই বিবাহ বিচ্ছেদ চেয়ে আদালতে যাওয়া।



অন্যদিকে, সুভাষিণীর দাবি, যে কঠিন সময়ে সবথেকে বেশি পাশে পাওয়ার প্রয়োজন ছিল স্বামীকে, সেই সময়েই তিনি তাঁকে ছেড়ে পালালেন। দায়িত্বজ্ঞানহীনের মতো ছেড়ে গেলেন গর্ভস্থ সন্তানকেও। তিরুমূর্তির তোলা প্রতিটি অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে সুভাষিণী স্বীকার করে নিয়েছেন যে তিনি সত্যই তছরুফের দায়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। যদিও সেই অভিযোগও আসলে ছিল 'অফিসের চক্রান্ত', এমনই দাবি বর্তমানে অ্যাকাউন্টট্যান্ট হিসাবে কাজ করা সুভাষিণীর। এদিকে, তিরুমূর্তি-সুভাষিণীর মেয়ে এবছরই ৯৪ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করল ক্লাস টুয়েলভের পরীক্ষা।   



এদিকে, অপর্যাপ্ত বিচারপতির সংখ্যা এবং মামলার পাহাড় জমে থাকায় ক্রমশ পিছতে পিছতে অবশেষে কুড়ি বছর কাটিয়ে ঘোষিত হল রায়। আইনের চোখে বিচ্ছিন্ন হলেন তিরুমূর্তি-সুভাষিণী। যদিও জীবন আলাদা হয়ে গিয়েছিল কুড়ি বছর আগেই। সঙ্গতভাবেই বিচার প্রক্রিয়ার এই দীর্ঘসূত্রিতায় ক্ষুব্ধ বর্তমানে বিদেশে ব্যাঙ্কে চাকরি করা তিরুমূর্তি। তাঁর আইনজীবীর মত, আদালতে এতটা সময় লেগে যাওয়াতেই আর নতুন করে জীবন শুরু করা হল না তাঁর মক্কেলের। অন্যদিকে মেয়েকে বড় করার কঠিন সময়ে একটি বারের জন্যও স্বামীকে পাশে না পাওয়ায় ক্ষোভে অভিমানে ফুঁসছেন সুভাষিণী।



তবে সদ্য যৌবনে পা দেওয়া তাদের মেয়ে শুরুর আগেই সবটা শেষ হয়ে যেতে দেখে একেবারে চুপ, কোনও রকম মন্তব্য করতেই নারাজ।


আরও পড়ুন- ইন্ডিয়ান মিউজিয়ামে সেক্স করতে গিয়ে ধরা পড়ল প্রেম যুগল, তারপর?