নিজস্ব প্রতিবেদন: বছর ৭২ পর, আবার দেখা হল। ১৯৪৬ সালের ডিসেম্বরের পর আবার ২০১৮ সালের ডিসেম্বর। স্বাধীনতার আগে ওনারা জুটি বেঁধেছিলেন, তবে স্রেফ আট মাসের জন্য। তারপর ছাড়াছাড়ি, দীর্ঘ ৭২ বছরের জন্য কেউ কারও মুখও পর্যন্ত দেখেনি। উপায়ও ছিল না। আর এখন যখন দেখা হল, তখন নতুন করে শুরু করার আর  সময় নেই।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

আরও পড়ুন- কখনও চলন্ত সেতু দেখেছেন? ভিডিও দেখলে তাক লেগে যাবে


নারায়ণন আর সারদা, ওদের এই প্রেমগাথা গল্প হলেও সত্যি। ১৯৪৬-এ ওদের যখন বিয়ে হয়  একজনের বয়স ছিল ১৮, আর অন্যজনের ছিল ১৩। সাত দশক পেরিয়ে আজ নারায়ণন নামবিয়ার ৯০-এ ঠেকেছেন। আর তাঁর প্রথম স্ত্রী দাঁড়িয়ে ৮৬-তে। দুজনেরই যৌবন ফুরিয়েছে। পক্ককেশ, চামড়ায় ভাঁজ। মুখে বৃদ্ধ বটবৃক্ষের ঝুরি মূলের মতো অজস্র রেখা। দৃষ্টিশক্তিও বিশেষ নেই। তবুও যখন প্রেয়সীর সঙ্গে দেখা হল, নারায়ণন নামবিয়ার একপলকেই চিনতে পারলেন সারদা দেবীকে। দু’জনের কথাও হল। যাওয়ার আগে সারদাকে  নারায়ণন বলে এলেন, “আজ আমি চলি”। প্রত্যুত্তরে নিস্পৃহ সারদা স্রেফ তাকিয়ে রইলেন মেঝের দিকে। এখানেই গল্পটা শেষ!  


আরও পড়ুন- 'দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইমিনিস্টার'-এর ট্রেলর নিয়ে কী বললেন মনমোহন সিং?


আর এর অতীতটা দেখতে হলে ফিরে যেতে হবে প্রাক স্বাধীনতা পর্বে। ব্রিটিশ শাসনাধীন ভারতে নারায়ণন ছিলেন একজন বিপ্লবী। কেরলের  কাভুম্বাইয়ে কৃষক আন্দোলনের অন্যতম সেনানি ছিলেন তিনি। সেই সময় তাঁদের জেহাদ ছিল মূলত সামন্তবাদীদের বিরুদ্ধে। তত্সময়ের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক পরিকাঠামো-তে দাঁড়িয়ে যে ধরনের প্রতিবাদ আন্দোলনের প্রয়োজন ছিল, সেই তাগিদেই সর্বসময়ের বিপ্লবী হয়ে ওঠেন নারায়ণন। ভূমিদস্যুদের অকথ্য অত্যাচার ও পুলিসি বর্বরতার বিরুদ্ধে সংগঠিত করেন লড়াই আন্দোলন। সেই সময়ই মালাবার স্পেশাল পুলিসের হাতে গ্রেফতার হন তিনি। এরপর দীর্ঘ ৮ বছর কন্নুরের কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারেই বন্দি ছিলেন তিনি। মুক্তি পান ১৯৫৪ সালে।  


বন্দিদশা থেকে বেরিয়ে এসে দেখেন তাঁর স্ত্রীর অন্যত্র বিয়ে হয়ে গিয়েছে। পরে তিনিও দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেই পক্ষে ৭ সন্তানও রয়েছে তার।


আরও পড়ুন -কেবল টিভির গ্রাহকদের জন্য সুখবর! পছন্দের চ্যানেল বেছে নিতে সময় বাড়াল ট্রাই


নারায়ণন ও সারদার দ্বিতীয় পক্ষের সন্তানরাই মূলত নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে দু’জনের সাক্ষাতের বন্দোবস্ত করেন। এই ডিসেম্বরেই কন্নুর জেলার ভার্গাবন শহরে সারদার বাড়িতে এসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন নারায়ণন। এই গোটা গল্পই চিত্রনাট্য করে তুলে ধরেছেন নারায়ণনের ভাইঝি সান্তা। কাকার জীবনের  উপর একটি উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। তাঁদের চোখে এই দুইয়ের ‘মিলন’ একটি সুখস্মৃতি হয়েই থাকবে।