জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: উত্তরপ্রদেশের আউরাইয়া জেলার একটি ১৫ বছর বয়সী দলিত ছাত্রের মৃত্যু হয় সোমবার সকালে। জানা গিয়েছে প্রায় পনের দিন আগে তাকে স্কুলের একজন শিক্ষক মারধর করেছিল বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ওই শিক্ষককের বিরুদ্ধে আইপিসি ৩০৮ ধারা (অপরাধমূলক হত্যাকাণ্ডের চেষ্টা), ৩২৩ ধারা (স্বেচ্ছায় আঘাত করা) এবং ৫০৪ ধারায় (শান্তি ভঙ্গের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে অপমান) মামলা করা হয়েছে। একই সঙ্গে তফসিলি জাতি এবং তফসিলি উপজাতির বিরুদ্ধ নৃশংসতা প্রতিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে। ওই শিক্ষক পলাতক বলে জানা গিয়েছে।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ওই ছাত্রের মৃত্যুতে সন্ধ্যায় আউরাইয়ায় বিক্ষোভের সূত্রপাত করে। পুলিসের দুটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে এবং অন্তত দুটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, ময়নাতদন্তের পরে ওই ছাত্রে মৃতদেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপরেই বিক্ষোভকারীরা তা তার স্কুলের বাইরের রাস্তায় নিয়ে গিয়ে স্লোগান দেওয়া শুরু করে। তারা ওই এলাকায় থাকা একটি পুলিসের দলকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয় বলেও অভিযোগ। পরে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিস পাঠানো হয় বলে জানা গিয়েছে।


কানপুর জোনের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জনারেল, ভানু ভাস্কর বলেছেন, ঊর্ধ্বতন পুলিস এবং জেলা আধিকারিকরা পরিস্থিতি বুঝতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানান তিনি। পুলিস জানিয়েছে, ওই ছাত্রের পরিবার শেষকৃত্যের জন্য তার মৃতদেহ নিজেদের গ্রামে নিয়ে গিয়েছে।


আউরাইয়ার সার্কেল অফিসার মহেন্দ্র প্রতাপ সিং জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে যে ছেলেটি ঘটনার আগে কিডনির রোগে ভুগছিল এবং লখনউয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। তিনি বলেন যে তাদের অসুস্থতা এবং চিকিৎসার বিবরণ হাসপাতাল এবং ছেলেটির পরিবারের কাছ থেকে যাচাই করতে হবে।


আরও পড়ুন: কংগ্রেস সভাপতি পদের দৌড়ে বাদ গেহলত, রাজস্থানের রাজনৈতিক সংকট নিয়ে রিপোর্ট চাইলেন সনিয়া


পুলিশ জানায়, সোশ্যাল স্টাডিজ পরীক্ষায় ভুল উত্তর লেখার অভিযোগে সাত সেপ্টেম্বর ওই ছাত্রকে মারধর করা হয়। ২৪ সেপ্টেম্বর তার বাবা অভিযোগ দায়ের করার পরে একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়। বাবা তার অভিযোগে বলেছেন, মারধরের পরে ছেলেটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তিনি আরও বলেন, ‘সে একটি প্রশ্ন ভুল করেছে... শিক্ষক তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করেছেন’।


তিনি দাবি করেছেন যে ওই শিক্ষক ছেলেটির চিকিৎসার জন্য টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তাকে মাত্র ৪০,০০০ টাকা দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেন যে তিনি শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করে আরও টাকা চাইতে গেলে তাকে বর্ণবিদ্বেষী কটাক্ষ করা হয়।


সিং আরও বলেন ‘তিনি শিক্ষকের কাছ থেকে দুটি কিস্তিতে মোট ৪০,০০০ টাকা পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। তিনি ছেলেটিকে চিকিৎসার জন্য লখনউয়ের একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি দাবি করেছেন যে ইটাওয়াতেও বেশ কয়েকটি মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছিল, তবে তার ছেলের সমস্যার কোনও সমাধান হয়নি’।


পুলিস জানিয়েছে, ছেলেটির পরিবার জানিয়েছে, সে গত দুই সপ্তাহ ধরে বার বার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। পরিবার পুলিসকে জানিয়েছে যে রবিবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাইফাইয়ের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সোমবার সকালে চিকিৎসা চলাকালীন তার মৃত্যু হয়।


সাইফাই হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট অবশ্য বলেছেন, ছেলেটিকে মৃত অবস্থায় সেখানে আনা হয়।


একজন সিনিয়র পুলিস অফিসার বলেছেন যে তারা এখনও হাসপাতাল এবং তার পরিবারের কাছ থেকে তার মেডিকেল রেকর্ড সংগ্রহ করতে পারেনি।


আউরাইয়ার পুলিস সুপারিনটেনডেন্ট, চারু নিগম বলেছেন, ইটাওয়াতে চিকিৎসকদের একটি প্যানেল পোস্টমর্টেম পরীক্ষা করেছে এবং তারা রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে।


ওই ছাত্রের মৃত্যুর পর পুলিস ওই শিক্ষককে গ্রেফতার করতে স্কুলে গেলেও তিনি পালিয়ে যান। তাকে ধরতে পুলিসের একটি টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানান এসপি।


ইটাওয়ার চিফ মেডিকেল অফিসার গীতা রাম জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট শীঘ্রই তৈরি করা হবে।


স্কুলের অধ্যক্ষ বলেন, তিনি গত ২০ দিন ছুটিতে ছিলেন এবং সোমবার ফের যোগদান করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি, ভুল উত্তর লেখার জন্য সাত সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষক মৃত ছাত্র সহ দুই ছাত্রকে মারধর করেন… চার দিন পর তার বাবা স্কুলে এসে শিক্ষকের সঙ্গে তর্কাতর্কি করেন। তিনি বলেন যে তার ছেলে কিডনির সমস্যায় ভুগছিল এবং তাকে আর্থিকভাবে সাহায্য করার জন্য শিক্ষককে অনুরোধ করেছিল’। তিনি আরও জানান, সোমবার পুলিসের একটি দল বিদ্যালয়ে এসে ঘটনাটি ঘটার সময় ক্লাসে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের বক্তব্য রেকর্ড করে।


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)