সিবিআইয়ের অন্তর্বর্তী ডিরেকটরের পদে `দুর্নীতিগ্রস্ত` নাগেশ্বরকেই বেছে নিলেন মোদী!
দায়িত্ব নেওয়ার পরই সিবিআইয়ের একাধিক অফিসারকে নাগেশ্বর বদলি করায় ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা।
নিজস্ব প্রতিবেদন: বিজয় মালিয়া, নীরব মোদী, মেহুল চোকসি। এরকমই একাধিক হাই-প্রোফাইল মামলায় অভিযুক্তদের বিচারের কাঠগড়ায় তোলার ভার এখন তাঁর ওপর। কিন্তু, সিবিআইয়ের
নতুন অন্তবর্তী ডিরেক্টর নাগেশ্বর রাওয়ের বিরুদ্ধেই রয়েছে নানা অভিযোগ। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। সিবিআই ডিরেক্টরের পদ থেকে অলোক বর্মাকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় নাগেশ্বর রাওকে
বসিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
তেলেঙ্গানার ওয়াড়ঙ্গল জেলার বাসিন্দা নাগেশ্বর, ১৯৮৬ সালের ওড়িশা ক্যাডারের আইপিএস অফিসার। ওড়িশা পুলিসের এডিজি পদ থেকে ২০১৬ সালে সিবিআইয়ে যোগ দেন তিনি। অন্তর্বর্তী ডিরেক্টর হওয়ার আগে সিবিআইয়ের যুগ্ম-ডিরেক্টর পদে ছিলেন নাগেশ্বর। পুলিস সার্ভিসে যোগ দেওয়ার আগে মাদ্রাজ আইআইটি-র গবেষক ছিলেন তিনি।
দায়িত্ব নেওয়ার পরই সিবিআইয়ের একাধিক অফিসারকে নাগেশ্বর বদলি করায় ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধীরা। রাকেশ আস্থানার বিরুদ্ধে ঘুষের মামলায় তদন্তকারী অফিসার অজয় বাসসিকে আন্দামানে পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। আস্থানার বিরুদ্ধে তদন্তকারী দলের সুপারভাইজার-সহ টিমের অন্য সদস্যদেরও সরিয়ে নতুন লোক এনেছেন নাগেশ্বর।
আস্থানার বিরুদ্ধে তদন্তকারী টিমের মাথায় বসানো হয়েছে ব্যপম কেলেঙ্কারির তদন্তকারী অফিসার তরুণ গৌবাকে। সিবিআইয়ের নতুন অন্তর্বর্তী ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা দুর্নীতির অভিযোগও।
চেন্নাইয়ে গুইণ্ডি শিল্পতালুকে এইচটিএল সংস্থার জমি বিক্রিতে দুর্নীতির অভিযোগ সংক্রান্ত তদন্ত তিনি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। সল্টলেকের একটি ভুয়ো সংস্থা থেকে ঋণ দেখিয়ে গুণ্টুরে জমি কেনার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। ওড়িশা পুলিসে থাকার সময় ভুয়ো নথি দেখিয়ে নাগেশ্বর খুরদার একটি সরকারি জমি দখল করেন বলেও অভিযোগ ওঠে।
সব মিলিয়ে নতুন সিবিআই প্রধানের হাতে সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা আদৌ কতটা রক্ষিত হবে তা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
প্রসঙ্গত, সিবিআই ডিরেকটরের পদ থেকে অলোক বর্মাকে ছুটিতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন নিয়োগ কমিটি। ওই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন অলোক বর্মা। মামলার শুনানি আগামী ২৬ অক্টোবর। শীর্ষ আদালতে মোদী সরকারকে একহাত নিয়েছেন সিবিআইয়ের প্রাক্তন ডিরেকটর অলোক বর্মা। বুধবার তিনি জানান, রাতারাতি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। সংস্থার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র। প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে পছন্দমত পথে তদন্ত না এগানোর জন্যই এমনটা করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, সেন্টার ভিজিল্যান্স কমিশন ও কেন্দ্রের পদক্ষেপ বেআইনি। দেশের শীর্ষ তদন্তকারী সংস্কার স্বাধিকার ও স্বাধীনতার উপরে আঘাত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- সিবিআই ডিরেকটরের পদ খোয়াতেই হাটে মোদীর হাঁড়ি ভাঙলেন অলোক বর্মা